সোমবার থেকে সারাদেশে এক সপ্তাহ লকডাউন
মেডিভয়েস রিপোর্ট: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে সারাদেশে এক সপ্তাহ লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার।
আজ শনিবার (৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তাঁর সরকারি বাসভবনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে আগামী সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য সারা দেশে লকডাউন ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার। করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।’
এ দিকে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, ‘দ্রুত বেড়ে যাওয়া করোনা সংক্রমণ রোধ করার স্বার্থে সরকার ২-৩ দিনের মধ্যে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউনের সিদ্ধান্ত হতে যাচ্ছে। লকডাউন চলাকালে জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ও শিল্প কলকারখানা খোলা থাকবে।’
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় এবং ১৮ মার্চ প্রথম কারো মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর মহামারি নিয়ন্ত্রণে গত বছরের ২৩ মার্চ প্রথমবারের মতো ‘সাধারণ ছুটির’ ঘোষণা দেয় সরকার। শুরুতে গত বছরের ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ‘ছুটি’ ঘোষণা হলেও পরে কয়েক দফা বাড়ানো হয়। টানা ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি শেষ হয় গত বছরের ৩০ মে।
এর আগে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কয়েক দিন আগে দুই সপ্তাহের জন্য ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করে সরকার। নির্দেশনায় সব ধরনের জনসমাগম (সামাজিক/রাজনৈতিক/ধর্মীয়/অন্যান্য) সীমিত, উচ্চ সংক্রমণযুক্ত এলাকায় সকল ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ, বিয়ে/জন্মদিনসহ যে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠান উপলক্ষে জনসমাগম নিরুৎসাহিত করার নির্দেশনা দেয় সরকার।
এ ছাড়া মসজিদসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করা, গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধারণক্ষমতার ৫০ ভাগের অধিক যাত্রী বহন না করা, যান চলাচল সীমিত করা, বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা, সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা, সকল সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ৫০ ভাগ জনবল দ্বারা পরিচালনা করাসহ ১৮ নির্দেশনা জারি করে সরকার।
দেশে এখন পর্যন্ত ৬ লাখ ২৪ হাজার ৫৯৪ জনের দেহে করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হন। মৃত্যু হয়েছে ৯ হাজার ১৫৫ জনের। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৪১১ জন। এর মধ্যে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৬ হাজার ৮৩০ জনের দেহে এই ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে আরও ৫০ জনের।