৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০৭:০৫ পিএম

রামেকে ভুয়া চিকিৎসক অভিযোগে গ্রেপ্তার সামিউর মানসিক ভারসাম্যহীন: পরিচালক

রামেকে ভুয়া চিকিৎসক অভিযোগে গ্রেপ্তার সামিউর মানসিক ভারসাম্যহীন: পরিচালক
ভুয়া চিকিৎসক অভিযোগে আটক সামিউর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

মেডিভয়েস রিপোর্ট: রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভুয়া চিকিৎসক অভিযোগে গ্রেপ্তার সামিউর রহমান (২৭) মানসিক ভারসাম্যহীন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ। আজ রোববার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে মেডিভয়েসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন তিনি।

চিকিৎসক সেজে সামিউরের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন জানিয়ে এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, ‘প্রকৃত খবর হলো, তিনি মূলত মানসিক রোগী। ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) ডেন্টালের শিক্ষার্থী থাকাকালীন আমাদের এখানে ছয় মাসের প্রশিক্ষণে আসেন। পরিচিত হওয়ার সুবাদে রামেক হাসপাতালের প্রতি তার একটা টান থাকতে পারে। সেজন্যই হয় তো এসেছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, মানসিক রোগী (অ্যাফেক্টিভ ডিজঅর্ডার) হওয়ায় এখানে আসার পর নানা অসংলগ্ন আচরণ করেন সামিউর। নিরাপত্তা প্রহরীদের কাছে বলেছেন, ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা থেকে নাকি এখানে এসেছেন তিনি। জরুরি বিভাগে আসার পর তার কথাবার্তা সবার সন্দেহ হয়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এই হলো প্রকৃত ঘটনা। সুতরাং তিনি দীর্ঘ দিন ধরে এখানে আছেন, চিকিৎসক সেজে সেবা দিচ্ছেন—এসব অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন। এটি একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এখানে দীর্ঘ দিন ধরে এসব হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভুয়া নারী চিকিৎসকের সেবা প্রদানের প্রসঙ্গ তুলতেই রামেক হাসপাতালের পরিচালক বলেন, ‘এটা মোটেও ওই রকম কোনো ঘটনা না।’

শামীম আহাম্মদ জানান, থানায় হস্তান্তরের পর পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে এসেছিলেন। তারা সামিউর রহমানের মানসিক রোগী হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তাকে ছাড়িয়ে নিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা চেয়েছেন।

‘হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছে, যেহেতু তাকে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে, সেহেতু ছাড়ানোর বিষয়ে হাসপাতালের কোনো এখতিয়ার নেই। কোর্টে উঠার পর আইনজীবীর মাধ্যমে ছাড়িয়ে আনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মানসিক রোগীর প্রমাণ উপস্থাপনের পর নিশ্চয় জামিনের ব্যবস্থা হবে’—যোগ করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে রামেক হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন আজ বিকেলে মেডিভয়েসকে বলেন, ‘ম্যাটস শিক্ষার্থী হিসেবে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ করেছেন।’

মানসিক রোগী জানার পরও কেন তাকে পুলিশে দিলেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ধরা পড়ার সময় তিনি মানসিক রোগী কিনা, বিষয়টি নিশ্চিত ছিল না। আটকের পরের দিন তার মা জানান, গত জুলাই মাসে রামেক হাসপাতালের বহির্বিভাগে সামিউর চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে এর পর আর চিকিৎসা নেননি তিনি।’

জানতে চাইলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ বক্সের ইনচার্জ মো. মুকুল হোসেন আজ রাতে মেডিভয়েসকে বলেন, ‘আমরা তাকে গ্রেপ্তার করার সময় গলায় চিকিৎসকের কার্ড, আরেকটা ছিল আইএইচটি শিক্ষার্থীর কার্ড। তাকে মানসিকভাবে অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। কিন্তু সমস্যার কথা জানতে চাইলে প্রথমে স্বীকার করেননি। পরে অবশ্য স্বীকার করেছেন। অবশ্য ততক্ষণে মামলা হয়ে গেছে। থানা থেকে ছেলেকে ছাড়িয়ে আনতে গিয়ে তার মাও ছেলের মানসিক সমস্যার কথা জানিয়েছেন।'

এ বিষয়ে কথা বলতে সামিউর রহমানের মায়ের মুঠোফোনে বারবার ফোন দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, গায়ে অ্যাপ্রোন, গলায় স্টেথোস্কোপ ও আইডি কার্ড ঝুলানো অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আটক হন সামিউর রহমান। রাজশাহী নগরীর উপ ভদ্রা এলাকার রাশেদুর রহমানের ছেলে সামিউর রহমানকে পরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

এএনএম/

মেডিভয়েসের জনপ্রিয় ভিডিও কন্টেন্টগুলো দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন MedivoiceBD ইউটিউব চ্যানেল। আপনার মতামত/লেখা পাঠান [email protected] এ।
  ঘটনা প্রবাহ : ভুয়া চিকিৎসক
  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
করোনা ও বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা

এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক