২২ মার্চ, ২০২৩ ০৮:৩৭ পিএম

স্বল্প আয়ের পরিবারে ১৮ বছরের আগে গর্ভধারণ প্রবণতা বেশি

স্বল্প আয়ের পরিবারে ১৮ বছরের আগে গর্ভধারণ প্রবণতা বেশি
জরিপে দেখা যায়, ১৪ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারী অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৯৩ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত এবং ৭৮ দশমিক ৪ শতাংশ তা অনুসরণ করেন।

মেডিভয়েস রিপোর্ট: দেশে স্বল্প আয়ের পরিবারগুলোতে অল্প বয়সেই (১৮ বছরের আগে) গর্ভধারণের প্রবণতা বেশি। এমনকি, যারা ১৮ বছর বয়সের আগেই গর্ভধারণ করেন, তাদের হার রংপুরে সর্বোচ্চ (৪৮.৯ শতাংশ)। সম্প্রতি দেশের ৬৪ জেলায় ৩১৭৫ পরিবারে পরিচালিত এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

বুধবার (২২ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলের কনফারেন্স হলে আয়োজিত এক সভায় ‘মনিটরিং দ্য ইমপ্লিমেন্টেশন অব এসডিজিস ফর এনশিওরিং গার্লস অ্যান্ড চাইল্ড রাইটস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। ওয়াই-মুভস প্রকল্পের আওতায় অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, অপরাজেয় বাংলাদেশ, ইয়েস বাংলাদেশ এবং ইউথ ফর চেঞ্জ।

জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালের জুন থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি সময়কালে যুবকদের মাধ্যমে জরিপটির উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। দৈবচয়ন প্রক্রিয়ায় দেশের ৬৪ জেলায় ৩ হাজার ১৭৫টি পরিবার, বিশেষ করে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারীর অংশগ্রহণে এই জরিপ পরিচালিত হয়েছে।

জরিপে দেখা যায়, সর্বনিম্ন আয়ের (মাসিক ২৫০০ টাকা) পরিবারে ১৮ বছর বয়সের আগে গর্ভধারণের হার সবচেয়ে বেশি ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ। জরিপে অংশগ্রহণকারী নারীদের ৩৫ দশমিক ৮ শতাংশই জানান তারা ১৮ বছর বয়সের আগেই গর্ভধারণ করেন। রংপুরে ১৮ বছরের কম বয়সে গর্ভধারণকারী সর্বোচ্চ ৮ দশমিক ৯ শতাংশ ।

জরিপে আরও দেখা যায়, ১৪ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারী অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৯৩ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত এবং ৭৮ দশমিক ৪ শতাংশ তা অনুসরণ করেন। আর ৬৯ দশমিক ৩ শতাংশ পরিবারে পুরুষ ও নারী একত্রে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেন। এই পদ্ধতি সম্পর্কে তারা তথ্য পান মূলত টেলিভিশন ৫৩ দশমিক ৭ শতাংশ, কমিউনিটি ওয়ার্কারের মাধ্যমে ৩৩ দশমিক ২ শতাংশ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ২৯ দশমিক ৫ শতাংশ।

যুব উন্নয়ন সংস্থা ইয়েস বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক শামীম আহমেদ মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, জরিপে ১৮ শতাংশ নারীই জানিয়েছেন তারা বিগত ১২ মাসে শারীরিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন। ২১ দশমিক ৯ শতাংশ নারীর মাসিক পারিবারিক আয় ২৫০০ টাকার কম এবং ৯ দশমিক ৫ শতাংশের মাসিক পারিবারিক আয় ১০ হাজার টাকার বেশি। ১৪ দশমিক ৭ শতাংশের দাবি তারা পড়াশোনা এবং চাকরির ক্ষেত্রে পরিবারের পুরুষ সদস্যের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছেন।

জরিপ করা ৪৬ দশমিক ৭ শতাংশ পরিবারে শিশুরা কোনও না কোনোভাবে বাসায় কিংবা ঘরের বাইরে শারীরিক বা মানসিক শাস্তি বা আগ্রাসনের শিকার।

জপির প্রতিবেদনে একাগ্র প্রচেষ্টা ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে রাষ্ট্র ও সুশীল সমাজের আরও জোরালো ভূমিকা পালন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সহিংসতা বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়ন নিশ্চিতে মনিটরিং ব্যবস্থা, বাজেট বৃদ্ধি, তথ্যের ঘাটতি পূরণ ইত্যাদি বিষয়ে সুপারিশ করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য অপরাজিতা হক। বিশেষ অতিথি সংসদ সদস্য আদিবা আঞ্জুম মিতা, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর কবিতা বোস, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের প্রকল্প ব্যবস্থাপক (কৈশোরকালীন এবং প্রজনন স্বাস্থ্য) ডা. মনজুর হোসেন। অনুষ্ঠান সঞ্চলানা করেন অপরাজেয় বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ওয়াহিদা বানু।

মেডিভয়েসের জনপ্রিয় ভিডিও কন্টেন্টগুলো দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন MedivoiceBD ইউটিউব চ্যানেল। আপনার মতামত/লেখা পাঠান [email protected] এ।
  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
করোনা ও বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা

এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক