০৭ জুন, ২০২২ ০৮:৪৮ পিএম

কর্মপরিধি লঙ্ঘনে ডিএমএফ ডিগ্রিধারীদের শাস্তি কেবল ‘সতর্কতা’

কর্মপরিধি লঙ্ঘনে ডিএমএফ ডিগ্রিধারীদের শাস্তি কেবল ‘সতর্কতা’
ডা. আরমান হোসেন বলেন, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসা সহকারীর রেজিস্ট্রেশন নম্বর উল্লেখ করে সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ করতে হবে। এর ভিত্তিতে তাকে সতর্ক করা হবে।

মো. মনির উদ্দিন: ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকাল্টি (ডিএমএফ) ডিগ্রিধারীদের কর্মপরিধির বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে বলে দেওয়া আছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. আরমান হোসেন। এ নির্দেশনা লঙ্ঘিত হলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসা সহকারীর বিরুদ্ধে নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ আনা হবে। তবে বিদ্যমান আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুনির্দিষ্ট কোনো বিধান নেই বলে জানান সংস্থাটির রেজিস্ট্রার।

আজ মঙ্গলবার (৭ জুন) দুপুরে মেডিভয়েস এসব বিষয় জানান তিনি।

বিএমডিসি রেজিস্ট্রার বলেন, ‘ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকাল্টি (ডিএমএফ) ডিগ্রিধারীদের কর্মপরিধি তাদের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটে স্পষ্ট করে উল্লেখ করা আছে। মেডিসিন, সার্জিক্যাল ও গাইনিতে তারা কতটুকু কাজ করতে পারবে—সব উল্লেখ আছে। এমনকি তারা কতটি ওষুধ লিখতে পারবে তাও পরিষ্কার করে বলে দেওয়া আছে।’

তবে অনেক ক্ষেত্রেই তার প্রতিফলন ঘটছে না। এমনই প্রেক্ষাপটে বিএমডিসির বক্তব্য জানতে গত ২৬ মে সংস্থাটির কাছে চিঠি পাঠায় কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো. মনজুর-এ-মুর্শেদ।

এর পরিপ্রেক্ষিতে বিএমডিসি জানায়, চিকিৎসা সহকারী ডিএমএফ ডিগ্রিধারীদের দিয়ে আল্টাসনোগ্রাম করানো ও রিপোর্ট প্রদান সংক্রান্ত বিষয়ে মতামত প্রদান করা যাবে না

সংস্থাটির উত্তর সম্বলিত চিঠিতে বলা হয়, ‘ডিএমএফ ডিগ্রিধারীগণ বিএমএন্ডডিসি হইতে নিবন্ধন প্রাপ্ত হইয়া চিকিৎসা সহকারী হিসাবে চিকিৎসা সেবা প্রদান করিবেন। তাহাদের কর্মপরিধি বিএমএন্ডডিসি হইতে প্রাপ্ত তাহাদের নিবন্ধন সনদে উল্লেখ আছে। আন্ট্রাসনোগ্রাম করা কিংবা রিপোর্ট প্রদান করা, এমনকি রোগীকে আন্ট্রাসনোগ্রাম করানোর লিখিত উপদেশ দেওয়া তাহাদের নির্ধারিত কর্মপরিধির বহির্ভূত বলিয়া গণ্য হইবে।’

ডিএমএফ ডিগ্রিধারীদের কর্মপরিধি

ক. চিকিৎসা বিদ্যা (Medicine)

ক.১. যে সমস্ত রোগ ওষুধ দ্বারা চিকিৎসা হয়, সেগুলোর রোগ নির্ণয় করে শুধুমাত্র তালিকায় উল্লেখিত ওষুধ দ্বারা সে সকল রোগের চিকিৎসা করতে হবে। 
ক.২. দীর্ঘকালস্থায়ী রোগসমূহের (ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, ব্রংকিয়াল এজমা ইত্যাদি) চিকিৎসা শুরু করার পর রোগীকে একজন গ্র্যাজুয়েট চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা পরিকল্পনা করার পরামর্শ প্রদান করবেন। 

খ. শল্য চিকিৎসা (Surgery)

খ.১. প্রাথমিক চিকিৎসা পর্যায়ে পড়ে এ ধরনের জরুরি চিকিৎসা (শল্য ও ওষুধ দ্বারা) প্রদান করবেন। 
খ.২. ছোটখাটো শল্য চিকিৎসা, যেমন: ফোড়া কাটা (মুখমন্ডল, বুক, বগল, পেট ও কুচকি ব্যতীত) এবং অগভীর ক্ষত সেলাই দিতে পারবেন। 

গ. ধাত্রীবিদ্যা (Midwifery) 

গ.১. গর্ভবতী মায়ের প্রসব পূর্ববর্তী, প্রসবকালীন ও প্রসব পরবর্তী সেবা ও পরিচর্যা করিতে পারিবেন। 
গ.২. প্রসবকালীন মায়ের স্বাভাবিক প্রসব পরিচালনা করতে পারবেন। 
গ.৩. সদ্যপ্রসূত শিশুর প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করতে পারবেন। 
গ.৪. পরিবার পরিকল্পনা ও জন্ম নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে সম্যক ধারণা ও উপদেশ দিতে পারবেন। 

তবে সকল ধরনের দীর্ঘমেয়াদি রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে গ্র্যাজুয়েট চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার উপদেশ দিতে হবে।

নেই সুনির্দিষ্ট শাস্তির বিধান 

কর্মপরিধির বাইরে কাজে যুক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে বিএমডিসি কিভাবে ভূমিকা রাখতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. আরমান হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ আসলে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকর্মীর ব্যাপারে আমরা তদন্ত করে দেখবো। প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ আনা হবে।’ 

তবে এর দায়ে তাদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল কিংবা শাস্তির কোনো বিধান নেই বলে জানান বিএমডিসি রেজিস্ট্রার।

তাদের কর্মপরিধি বহির্ভূত কাজের বিষয়ে অভিযোগের পদ্ধতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসা সহকারীর রেজিস্ট্রেশন নম্বর উল্লেখ করে সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ করতে হবে। এর ভিত্তিতে তাকে সতর্ক করা হবে।

মেডিভয়েসের জনপ্রিয় ভিডিও কন্টেন্টগুলো দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন MedivoiceBD ইউটিউব চ্যানেল। আপনার মতামত/লেখা পাঠান [email protected] এ।
  ঘটনা প্রবাহ : ডিএমএফ
  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
করোনা ও বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা

এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক