শিশুর ডেঙ্গু হলে করণীয়

প্রতিদিনই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে। চলতি বছর ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে প্রাণ হারিয়েছে ৬৩৪ জন। এর মধ্য ১১৯ জনই শিশু-কিশোর, যা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর ২৬ শতাংশ। এ পরিস্থিতিতে ডেঙ্গুতে থেকে শিশুর সুরক্ষায় করণীয় নিয়ে পরামর্শ দিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা।
ঝুঁকি
বৃষ্টির সময়ই আমাদের দেশে ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব বেশি হয় এবং এ সময় ডেঙ্গু বহনকারী এডিস মশারও বংশবিস্তার বৃদ্ধি পায়। ডেঙ্গু ৮-১০টা ভাইরাসের মতো একটি ভাইরাস। এর প্রভাবে আক্রান্ত শিশুর শরীরে অনেক জ্বর আসে। জ্বরই হলো ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুর প্রধান উপসর্গ। মশায় কামড়ানোর ৩ থেকে ৪ দিন পর জ্বর আসে। আবার কখনও কখনও কামড়ানোর ৬ থেকে ৭ দিন পরেও জ্বর আসতে পারে। এই জ্বরের স্থায়ীত্ব ৪ থেকে ৫ দিন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ২ থেকে ৩ দিন জ্বর থাকে।
জ্বর কমানোর জন্য আমরা প্যারাসিটামাল ওষুধ দেই। এই সময় শিশুরা অনেক কিছু খেতে চায় না। তাদের মধ্যে বিরক্তি ভাব থাকে। তবে এ সময় শিশুদের বেশি করে তরল খাবার দেওয়া জরুরি। আর এখন যেহেতু ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব, তাই জ্বর হলেই আমাদের ডেঙ্গু জ্বর মনে করে প্রাধান্য দিতে হবে।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত মানুষের শরীরের রক্তনালীর ভিতরে প্রদাহ হয় এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু কিছু প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তার শরীরে রক্তের চাপ কমে যায়। একই সাথে শরীরে রক্তের শ্বেত কণিকা ও প্লাটিলেট কমতে থাকে। এই দুটো কমে যাওয়ার প্রভাবে আক্রান্ত শিশুর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গ অকার্যকর হয়ে যায়। একই সাথে রোগীর রক্তপাত হওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায়।
চিকিৎসা
জ্বর কমানোর জন্য শুধু প্যারাসিটামাল খাওয়া যাবে। এর বাইরে আমরা যাবো না। জ্বর কমানোর নানা ওষুধ আছে, সেগুলোতেও জ্বর কমাবে ঠিকই, কিন্তু রক্তপাতের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে অনেক সময় শিশুর শরীর হঠাৎ করে ঠাণ্ডা হয়ে যেতে পারে।
রক্তচাপ ধরে রাখার জন্য পানির ভেতর একটু লবণ দরকার। কারণ লবণ রক্তচাপ ধরে রাখার জন্য কার্যকর। এ ছাড়া খাবার স্যালাইন খেতে হবে। প্রতিদিন যতটুকু রোগীকে পানি দিবো, তার মধ্যে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ খাবার স্যালাইন যেন থাকে। ডাবের পানি, শরবতসহ তরল খাবার বেশি খাওয়ানো উচিত।
টিআই/এএইচ/এমইউ