২১ ডিসেম্বর, ২০২১ ০৭:৫৪ পিএম

কিডনিসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন বীর প্রতীক ক্যাপ্টেন ডা. সিতারা বেগম

কিডনিসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন বীর প্রতীক ক্যাপ্টেন ডা. সিতারা বেগম
বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন ডা. সিতারা বেগম।

ওমর ফারুক ফাহিম: উদ্যম সাহসিকতার এক অনন্য উদাহরণের নাম বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন বীর প্রতীক ডা. সিতারা বেগম। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে যার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। ১৯৭১ সালে দেশমাতৃকার টানে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা-যত্ন করেছিলেন ক্যাপ্টেন ডা. সিতারা বেগম। সেই ডা. সিতারা আজ নিজেই কিডনিসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।

ডা. সিতারার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়ে তাঁর ভাগনি শাহনাজ বিনতে নেওয়াজ মেডিভয়েসকে বলেন, গত কয়েকবছর পূর্বে ডা. সিতারার কিডনিতে ক্যানসারের সংক্রমণ ধরা পড়ে। এ সময় তাঁর একটি কিডনি অপসারণ করা হয়। বর্তমানে হৃদরোগসহ শারীরিক বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন তিনি। দু’মাস আগে হাসপাতালে চিকিৎসা নিলেও বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের নিজ বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।

মুক্তিযুদ্ধকালে ১৯৭১ ভারতের মেঘালয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিদিনই এ হাসপাতালে পাঠানো হতো। গুরুতর আহত মুক্তিযোদ্ধারা তাঁর সেবায় দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠতেন।

দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে ১৬ ডিসেম্বর প্রভাতী সূর্যের আলোয় ঝলমল করেছিল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের পতাকা। ডা. সিতারা বেগম রেডিওতে বিজয়ের খবর শুনে ঢাকায় ফিরে আসেন। দেশ স্বাধীনের পর ক্যাপ্টেন ডা. সেতারা বেগম কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে থেকে বদলি হয়ে স্বাধীন দেশের রাজধানীতে অবস্থিত ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে যোগদান করেছিলেন।

এরই মধ্যে ১৯৭২ সালের নভেম্বর মাসে রণাঙ্গনের আরেক মুক্তিযোদ্ধা বিশিষ্ট ভাসকুলার সার্জন ও সেনা কর্মকর্তা ডা. আবিদুর রহমানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। ডা. আবিদুরের সাথে পরিণয় সূত্রে তিনি পরিচিতি পান সিতারা রহমান নামে। বিয়ের একমাস পর ডা. আবিদুর রহমান স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পড়ালেখা করতে যান। পরবর্তীতে ১৯৭৩ সালের অক্টোবর মাসে ডা. সিতারা চাকরি থেকে সেচ্ছায় অবসর নিয়ে স্বামীর উচ্চশিক্ষা ও পারিবারিক সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান।

যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পূর্বে ক্যাপ্টেন সিতারা তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে দেখা করেন। সে সময় বঙ্গবন্ধু তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তোমরা সবাই আমাকে এতিম করে চলে যাচ্ছো?’।

ডা. সিতারার এক মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। তাঁর একমাত্র মেয়ে তাবাসসুম আবিদ রহমান সুমি এবং দুই ছেলে মো. তানভীর রহমান জামি ও মো. তাসলীম রহমান রুমিকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে বসবাস করছেন রণাঙ্গনের এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।

মেডিভয়েসের জনপ্রিয় ভিডিও কন্টেন্টগুলো দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন MedivoiceBD ইউটিউব চ্যানেল। আপনার মতামত/লেখা পাঠান [email protected] এ।
  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
করোনা ও বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা

এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক