২৯ এপ্রিল, ২০২১ ০২:১৭ পিএম

স্বাস্থ্যে অবহেলার ফল ভোগ করছি করোনায়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্যে অবহেলার ফল ভোগ করছি করোনায়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ছবি: সংগৃহীত

মেডিভয়েস রিপোর্ট: স্বাস্থ্যখাতে অবহেলার ফলাফল করোনায় ভোগ করতে হচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘করোনা মহামারিতে আমরা কতটা অসহায়, সেটা দেখেছি। শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর কোনো দেশই স্বাস্থ্যখাতকে গুরুত্ব দেয়নি।’ তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন ছাড়া দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।

আজ বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) বেলা ১১টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শহীদ ডা. মিল্টন হলে এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

বিএসএমএমইউ ২৪তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের জন্য আমাদের আরও বেশি এগিয়ে আসা দরকার। করোনা আমাদের দেখিয়েছে, স্বাস্থ্যসেবার যদি বিপর্যয় ঘটে, তাহলে মানুষের কী অবস্থা হয়। দেশের সব উন্নয়ন থেমে যায়, দেশে শান্তি থাকে না, সামাজিক অশান্তি সৃষ্টি হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতে আমাদের বাজেট জিডিপির মাত্র ০.৯%। আমরা কাজ করছি জিডিপিতে এটাকে ৯/১০ ভাগ করতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে খুবই আন্তরিক। স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে আমরা কাজ করছি। করোনা মোকাবিলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ও ভালো কাজ করছে। তারা আলাদা করে বড় একটি করোনা ইউনিট স্থাপন করেছে। এখানে টিকা কার্যক্রমও সফলতার সঙ্গে চলছে।’

জাহিদ মালেক বলেন, ‘করোনার প্রথম ঢেউ যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে সামলে নেয় বাংলাদেশ। বর্তমান সময়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণ সম্পর্কে আমরা সচেতন না হলে সামনে আবার করোনার তৃতীয় ঢেউ চলে আসতে পারে। তখন অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়ে দেখা দিতে পারে। এ কারণে করোনার হাত থেকে বাঁচতে চাইলে দেশের প্রতিটি মানুষকে করোনা নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ফেব্রুয়ারিতে করোনায় মৃত্যু তিন-চার জনে নেমে আসলে মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনীহা দেখাতে শুরু করে। কক্সবাজার, সিলেটসহ পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ২৫ থেকে ৩০ লাখ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই ভ্রমণ করেছে। অধিক হারে বিয়ের অনুষ্ঠান, পিকনিকসহ নানা রকম সামাজিক অনুষ্ঠান করা হয়েছে। এসব কারণেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। দিনে প্রায় শত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। সময় মতো সরকার ‘লকডাউন’ ঘোষণা করায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাব হয়ত সামনেই কমে যাবে।

আলোচনায় টিকা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘শুরুতে খুব ভালোভাবেই টিকা কার্যক্রম শুরু করেছিলাম। কিন্তু মাঝ পথে ভারত টিকা বন্ধ করে দেওয়ায় আমাদের থেমে যেতে হয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি, তবু বিকল্প হিসেবে আমরা রাশিয়ার টিকা অনুমোদন দিয়েছি, যেন আমাদের টিকা কার্যক্রমকে আরও বেগবান করতে পারি। এছাড়া কেউ যদি দেশে টিকা বানাতে চায়, সে সুযোগও আমরা দিচ্ছি। আমরা বলেছি, যে কেউ টিকা বানালে আমরা তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো। আমাদের দেশে কয়েকটি ফ্যাক্টরি রয়েছে, যেখানে তারা টিকা তৈরি করতে পারে। আমরা চাই, তারা টিকা বানিয়ে আমাদের দেশের মানুষকেও দিক এবং দেশের বাইরেও রপ্তানি করুক।’

বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের অনুষ্ঠানিকতার উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক, প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম. ইকবাল আর্সলান, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ। 

মেডিভয়েসের জনপ্রিয় ভিডিও কন্টেন্টগুলো দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন MedivoiceBD ইউটিউব চ্যানেল। আপনার মতামত/লেখা পাঠান [email protected] এ।
  ঘটনা প্রবাহ : স্বাস্থ্যখাত
  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত