২৮ অগাস্ট, ২০২০ ০৬:৫২ পিএম

‘দেশজুড়ে লাগামহীনভাবে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা’

‘দেশজুড়ে লাগামহীনভাবে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা’

মেডিভয়েস ডেস্ক: বাংলাদেশে এখনও করোনার চরম অবস্থায় পৌঁছায়নি। দেশে করোনা পরীক্ষায় ফি নির্ধারণ ও স্বাস্থ্য খাতে অব্যবস্থাপনায় দেশজুড়ে করোনাভাইরাস লাগামহীনভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা সাময়িকী দ্য ল্যানসেট।

আজ শুক্রবার (২৮ আগস্ট) দ্য ল্যানসেটে অস্ট্রেলিয়ার পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখিকা সোফি কাজিন্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে বাজে অবস্থা এখনও আসেনি। আগামী দিনগুলোতে দেশের করোনা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষত শীত কালে সংক্রমণ বহুগুনে বেড়ে যাবে। এই মহামারী আরও অনেক দিন স্থায়ী হবে।

দেশে করোনা পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করার তীব্র সমালোচনা করে বলা হয়, প্রতিদিন বাংলাদেশে ১২ থেকে ১৫ হাজার মানুষ করোনা পরীক্ষার সুযোগ পাচ্ছেন। বেসরকারি হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা হচ্ছে ৩৫০০ টাকায়। আর সরকারি হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করায় মানুষের পরীক্ষা করার প্রবণতা কমে গেছে। বাংলাদেশের প্রতি চার জনে প্রায় একজন দরিদ্রসীমায় রয়েছে এ অবস্থায় ফি নির্ধারণে করোনা পরীক্ষার পরিমাণ আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে। ফি নির্ধারণের পর পরীক্ষার হার কমে প্রতিদিন ১ হাজার মানুষে ০.৮ দাঁড়িয়েছে। আগস্টে প্রতি এক হাজার মানুষে ০.৬ হারে পরীক্ষা হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়।

এতে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এমিনেন্সের প্রধান শামীম তালুকদারের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘এই মহামারী বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার নানা অনিয়ম উন্মোচিত করেছে। একদম শুরু থেকেই সরকার করোনা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছে। শুরুতে বেসরকারি খাতকে পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়নি। এখন আবার ফি নেয়া হচ্ছে। এতে গরিব মানুষরা পরীক্ষার তালিকা থেকে বাদ পড়ছেন।’

এ সময় সরকারি হিসাবের চেয়ে দেশে আরও বেশি মৃত্যু হচ্ছে। অনেকে উপসর্গ নিয়ে মারা যাচ্ছেন, কিন্তু করোনা পরীক্ষা হয়নি বলেও জানিয়েছেন এমিনেন্সের প্রধান। ঢাকার কয়েকটি কবরস্থান ঘুরে সেখানকার কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে তিনি এ তথ্য পেয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক পরিচালক মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘মানুষের থেকে টাকা নেয়া সত্যি সমস্যা সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে গরিবদের জন্য করোনা পরীক্ষা এখন কষ্টকর। মহামারীর সময়ে মানুষের কাজ নেই, টাকা নেই। এই অবস্থায় সরকারের করোনা পরীক্ষায় টাকা নেওয়া উচিত হচ্ছে না।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকার এক চিকিৎসক দ্য ল্যানসেটকে বলেন, ‘সাড়ে ষোল কোটি মানুষের দেশে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টেস্ট হচ্ছে, এটি আসলে কিছুই না। এই মহামারী আরও অনেক দিন থাকবে। আমি ভয় পাচ্ছি শীত আসলে কী হবে। মানুষও ভয় পাচ্ছে।’

প্রতিবেদনে ভুয়া করোনা পরীক্ষা ও রিজেন্ট হাসপাতাল কেলেঙ্কারিসহ নানা অনিয়মের তথ্য তুলে ধরে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার তীব্র সমালোচনা করা হয়। এছাড়াও দ্য ল্যানসেটের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। 

মেডিভয়েসের জনপ্রিয় ভিডিও কন্টেন্টগুলো দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন MedivoiceBD ইউটিউব চ্যানেল। আপনার মতামত/লেখা পাঠান [email protected] এ।
  ঘটনা প্রবাহ : করোনাভাইরাস
  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
করোনা ও বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা

এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক