২৭ মার্চ, ২০২৩ ০২:৪১ পিএম

ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস শুরু ৩০ মার্চ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস শুরু ৩০ মার্চ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘সরকারি চিকিৎসকদের বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা’ সংক্রান্ত বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

মেডিভয়েস রিপোর্ট: আগামী ৩০ মার্চ থেকে নিজ কর্মস্থলে সরকারি হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা প্রাইভেট প্র্যাকটিস করবেন (রোগী দেখা) বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এর আগে গত ১ মার্চ থেকে প্রাইভেট প্র্যাকটিস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা শুরু করা সম্ভব হয়নি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে।

নির্ধারিত সময়ে শুরু করতে না পারা দীর্ঘ ২৬ দিন পর আজ সোমবার (২৭ মার্চ) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘সরকারি চিকিৎসকদের বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা’ সংক্রান্ত বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মার্চ থেকেই সরকারি চিকিৎসকদের ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস শুরু করার কথা বলেছিলাম, কিন্তু এখন ৩০ মার্চ থেকে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে প্রাতিষ্ঠানিক প্র্যাকটিস চালু করার চেষ্টা করছি। প্রথমে কয়েকটি জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে এ কার্যক্রম শুরু করবো।’

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ১০টি জেলা হাসপাতালে এবং ২০ উপজেলা হাসপাতালে পাইলটিং ভাবে এ কার্যক্রম শুরু হবে। বিকেল ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত চিকিৎসা দিবেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

নার্স ও টেকনিশিয়ানরাও সপ্তাহে দুদিন করে কাজ করবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা যে সেবা দিবেন, তার বিনিময়ে তাদের সম্মানি নির্ধারণ করা হয়েছে। ৫০০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হবে। সরকারও একটি অংশ পাবেন। প্রাথমিকভাবে একজন জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকের (অধ্যাপক) ৫০০ টাকা ফি (ভিজিট), তবে তিনি পাবেন ৪০০ টাকা। সহযোগী অধ্যাপক বা সিনিয়র কনসালটেন্ট পাবেন ৩০০ টাকা। সহকারী অধ্যাপক পাবেন ২০০ টাকা। চিকিৎসককে যারা সহযোগিতা করবেন, তারা পাবেন ৫০ টাকা এবং সার্ভিস চার্জ বাবদ ৫০ টাকা করে নেওয়া হবে। এমবিবিএস/বিডিএস বা সমমান ডিগ্রিধারী চিকিৎসকরা পাবেন ১৫০ টাকা এবং এক্ষেত্রে সহায়তাকারী ২৫ টাকা ও সার্ভিস চার্জ বাবদ ২৫ টাকা করে নেওয়া হবে।

দুই-তিন মাস যাবৎ ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ছিল এ টার্মের শুরুতেই ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস শুরু করা হোক, কিন্তু ডেঙ্গু ও করোনার কারণে তা আমরা শুরু করতে পারিনি। এখন আমরা আস্তে আস্তে সব জেলা ও উপজেলায় শুরু করব।

চিকিৎসকরা অতিরিক্ত ৩ ঘন্টা দায়িত্ব পালন করবেন কিনা সে প্রসঙ্গে সভায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, চিকিৎসকরাসহ সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সরকারি সেবা দানের জন্য সরকারের প্রয়োজন হলে ২৪ ঘন্টা সেবা দিতে হবে। এটিই নিয়ম। সেক্ষেত্রে সকল পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সরকারের নির্দেশনা মেনে চলতে বাধ্য থাকবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. টিটো মিঞা, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ)’র মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিব) সভাপতি অধ্যাপক ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, মহাসচিব অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান মিলন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষাসহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২২ জানুয়ারি সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রণালয়ের সাথে বিভিন্ন চিকিৎসক পেশাজীবী সংগঠনসহ, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ‘ইনস্টিটিউশনাল প্রাকটিস বিষয়ক একটি জরুরি সভায়’ নির্ধারিত কর্মঘণ্টা শেষে ১ মার্চ থেকে নিজ কর্মস্থলেই সরকারি হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা প্রাইভেট প্র্যাকটিস করার ঘোষণা দিয়েছেন, যদিও তা শুরু করা সম্ভব হয়নি।

এ সেবাটি চালু হলে চিকিৎসকরাও রোগীদের সেবা করার বেশি সুযোগ পাবেন। ডিউটি সময়ের বাইরে চিকিৎসকদের বিভিন্ন ক্লিনিক বা ফার্মেসিতে যেভাবে চেম্বার খুলে রোগী দেখতে হতো, সরকারি এই বিশেষ সুবিধার ফলে নিজ নিজ সরকারি কর্মস্থলেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ চেম্বারে রোগী দেখতে পারবেন।

এ বিষয়ে চিকিৎসক নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট সব মহলের মতামত নিয়েছে সরকার। এই কাজটি শুরু করতে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছিল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। এই কাজটি শুরু হলে দেশের লাখ লাখ মানুষ বিভিন্ন ক্লিনিক, ফার্মেসিতে ডাক্তার দেখানোর ভোগান্তি থেকে রেহাই পাবেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

এএইচ /এসএস

মেডিভয়েসের জনপ্রিয় ভিডিও কন্টেন্টগুলো দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন MedivoiceBD ইউটিউব চ্যানেল। আপনার মতামত/লেখা পাঠান [email protected] এ।
  ঘটনা প্রবাহ : ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস
  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
করোনা ও বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা

এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক