মেডিভয়েস রিপোর্ট: প্রতি বছর বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে হৃদরোগজনিত জটিলতায় সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। যা সংখ্যা হিসেবে ১৭ দশমিক নয় মিলিয়ন এবং এর বেশির ভাগই নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবর্তী দেশ সমূহে মারা যায়।

বুধবার (২ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) সেন্ট্রাল সেমিনার সাব কমিটি ‘নিউ হরিজন ট্রিটমেন্ট ইন ইন্টারভেনশন কার্ডিওলজি’ শীর্ষক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, হৃদরোগে বিশাল এই মৃত্যুর বেড়াজাল থেকে মানুষকে মুক্ত করার প্রয়াসে আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও চিকিৎসা সেবা এসেছে। এই অনন্য সাফল্য ও আধুনিকতার ছোঁয়া প্রত্যক্ষ করা হয়েছে কোভিডকালীন সময়ে। কোভিডকালে কাউকে হৃদরোগের চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হয়নি।

এতে আরও বলা হয়েছে, বিএসএমএমইউতে একদিকে যেমন বুক না কেটে বিশ্বমানের হার্টের অ্যাওর্টিক  ভালভ প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে, তেমনিভাবে হার্টের রক্তনালীর ব্লকে IVUS, OCT, FFR, IVL সহ অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে রিং প্রতিস্থাপনের সূক্ষ্ম কাজ। এ ছাড়া নিয়মিত হাতের রক্তনালীর মাধ্যমে রেডিয়াল বা ডিস্টাল রেডিয়াল এ্যানজিওগ্রাম করার সুবিধার্থে রোগীরা পাচ্ছে তাদের পছন্দ মাফিক চিকিৎসা। যা আধুনিক বিশ্বের সমমানের।

সেমিনারে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়, হার্টের অনিয়ন্ত্রিত হৃদস্পন্দনের ক্ষেত্রে পেসমেকার ও ICD, অ্যাডভান্স হার্ট ফেইলরের ক্ষেত্রে CRT-D বা CRT-P, হার্টের জন্মগত ছিদ্রের ক্ষেত্রে ডিভাইস ক্লোজার এবং বাল্ব সরের ক্ষেত্রে বাল্বের প্লাস্টিও করা হচ্ছে সুবিধাজনকভাবে।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। হার্ট এটাকের রোগীর চিকিৎসার জন্য দেড় ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা দিতে পারলে সম্পূর্ণ সুস্থ করা সম্ভব। এরপরেও যদি দেরি করা হয় তবে চার ঘণ্টার মধ্যেই রোগী হাসপাতালে নেওয়া উচিত। এ সময়কে বলা হয় গোল্ডেন টাইম।

তিনি বলেন, বাংলাদেশেন প্রেক্ষাপটে রোগীর গোল্ডেম টাইমে চিকিৎসার অন্তরায় রয়েছে যানজট। রোগীর স্বার্থে  জীবন বাঁচানোর জন্য সরকারের উচিত দ্রুত সড়কে এম্বুলেন্স চলাচলের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখা হাসিনা অনেক অসাধ্য সাধন করেছে। আমি বিশ্বাস করি, তার হাতেই সড়ক, মহাসড়কে এম্বুলেন্স চলাচলের জন্য আলাদা লেন চালু হবে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসএমএমইউ’র হৃদরোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. এসএম মোস্তফা জামান।

সেমিনারে প্যানেল অব এক্সপার্ট  হিসেবে মতামত ব্যক্ত করেন বিএসএমএমইউ’র উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন)  অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, হৃদরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একেএম ফজলুর রহমান, ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ আরাফাত। এ সময় হৃদরোগ বিভাগসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন বিভাগের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক, চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল সেমিনারের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে সেমিনার সঞ্চালনা করেন রেসপায়রোটেরি সহযোগী অধ্যাপক ডা.সম্প্রীতি ইসলাম।