২৫ অক্টোবর, ২০২২ ০৫:২২ পিএম

স্নায়ু রোগের চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত, খরচ কমানোয় জোর বিশেষজ্ঞদের

স্নায়ু রোগের চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত, খরচ কমানোয় জোর বিশেষজ্ঞদের
অধ্যাপক ডা. দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, আমরা অধিকাংশ রোগীকেই ভালো করতে পারি না। শতকরা ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ রোগী ভালো হয়।

মেডিভয়েস রিপোর্ট: স্নায়ু রোগে আক্রান্ত শিশুর চিকিৎসায় বাংলাদেশে প্রথমবারের মত জিন থেরাপি দেওয়ার পর এই রোগের খরচ কমানোর উপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে ‘শিশুদের বিরল স্নায়ু রোগের চিকিৎসায় জিন থেরাপি’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন বক্তারা।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, স্নায়ু রোগে আক্রান্ত শিশুদের মাংসপেশি ক্রমাগত দুর্বল হতে থাকে। যার ফলে এ সব শিশুরা বসতে বা দাঁড়াতে পারে না। তবে তাদের বুদ্ধিমত্তা ঠিক থাকে। পরবর্তী সময়ে শ্বাসতন্ত্রের জটিলতার কারণে আক্রান্ত শিশুরা মৃত্যুবরণ করে। এ রোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। জিন থেরাপি চিকিৎসায় প্রতি ডোজের মূল্য প্রায় ২২ কোটি টাকা।

এদিন ২২ মাস বয়সী রায়হান নামের এক শিশুকে বহুজাতিক ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নোভার্টিসের উদ্যোগে বিনামূল্যে থেরাপি দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, এটি আমাদের দেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য বড় একটি আশার দিক। কিন্তু এর যে ব্যয়, সেটি আসলে রোগীদের জন্য বহন করা খুবই কঠিন। আমরা চাইলেও এ নিয়ে কিছু করতে পারছি না। তবে খরচ কমানোর উপায় খুঁজে বের করতে হবে।

সচিব বলেন, আমরা আশা করছি একটা পর্যায়ে ওষুধটির দাম কমে যাবে। হাতের নাগালে চলে আসবে। তখন আমরা এই চিকিৎসা আমাদের দেশে নিয়মিত করতে পারবো। আগে এই রোগটির চিকিৎসা না থাকার কারণে প্রতি বছর বিশ্বে অসংখ্য শিশু মারা যায়। এ রোগে সাধারণত শিশুদের স্পাইনাল কর্ডের স্নায়ুকোষ নষ্ট হয়ে যায়।

এসময় হাসপাতালটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের ১০ বছরের ইতিহাসে একটা ঐতিহাসিক দ্বার উন্মোচন হয়েছে। একটা বাচ্চাকে নিশ্চিত মৃত্যু থেকে আমরা বাঁচার সুযোগ করে দিয়েছি। সে এখন নিশ্চিতভাবে আকাশ দেখতে পারবে, নিশ্বাস নিতে পারবে। অধ্যাপক ডা. নারায়ণ তার টিম নিয়ে সেটি করেছেন। এজন্য আমরা আনন্দিত এবং গর্বিত।

তিনি বলেন, আমরা অধিকাংশ রোগীকেই ভালো করতে পারি না। শতকরা ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ রোগী ভালো হয়। এক্ষেত্রে কিছু বিরল রোগ আছে, যেগুলোর মৃত্যু অবধারিত। সেগুলো নিয়ে আমাদের কিছুই করার থাকে না।

অধ্যাপক ডা. দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, বর্তমান সময়ে আমাদের ৪০ থেকে ৪২ ভাগ রোগীই শিশু। এই শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের আলাদা একটা এটেনশন (মনযোগ) দরকার। এজন্য আমি স্বাস্থ্য সচিব মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। কারণ, আমাদের পর্যাপ্ত সক্ষমতা না থাকায় অসংখ্য রোগীকেই বেসরকারি পর্যায়ে চিকিৎসার দারস্থ হতে হয়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তবে আমাদের হাসপাতালে আইসিইউ সেবা সম্পূর্ণ ফ্রি। কিন্তু একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ বেডে রাত পার হলেই ৫০ হাজার টাকা। এর বাইরে তো বিভিন্ন পরীক্ষা-ফি তো আছেই। কয়টা পরিবারের এতো খরচ বহনের সুযোগ আছে? এক্ষেত্রে সরকারি সেক্টরকে আরও উন্নত করতে হবে। সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও সুন্দরভাবে সাজান, যেকোন ধরনের পরামর্শ, সহযোগিতা আমরা করবো।

মেডিভয়েসের জনপ্রিয় ভিডিও কন্টেন্টগুলো দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন MedivoiceBD ইউটিউব চ্যানেল। আপনার মতামত/লেখা পাঠান [email protected] এ।
  ঘটনা প্রবাহ : স্নায়ু রোগ
  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
করোনা ও বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা

এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক