ডা. নিয়াজ মোর্শেদের মৃত্যুতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি এফডিসিআর’র
মেডিভয়েস রিপোর্ট: রাজধানীর আদাবরে জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিম শিপন হত্যার মামলার আসামি ‘মাইন্ড এইড’ হাসপাতালের পরিচালক ডা. নিয়াজ মোর্শেদের মৃত্যুতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে চিকিৎসক সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি, রাইটস অ্যান্ড রেস্পন্সিবিলিটিজ (এফডিএসআর)।
আজ শনিবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মেডিভয়েসকে এ দাবির কথা জানান সংগঠনটির মহাসচিব ডা. শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন।
তিনি বলেন, ‘ডা. নিয়াজ মোর্শেদের কারাগারে মৃত্যু হয়েছে, আমরা চাই তাঁর যেন পোস্টমর্টেম করা হয় এবং তা যেন জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়। এর যেন সুষ্ঠু তদন্ত হয় এবং কেন মৃত্যু হলো, এর কারণ যেন বের করা হয়। তাঁর সাথে কোনো ধরনের অন্যায় বা অবহেলা করা হয়েছে কিনা; এগুলো তদন্তের দাবি রাখে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডা. নিয়াজ মোর্শেদের মৃত্যুতে আমরা খুবই দুঃখ প্রকাশ করছি। কারাগারে থাকা অবস্থায় একজন চিকিৎসকের মৃত্যু হলো। আসলে তিনি কোনো অসুস্থতা বা চিকিৎসার অভাবে মারা গেলেন কিনা; এ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা উচিত। যদি এ বিষয়গুলো হয়ে থাকে, যাদের অবহেলায় বা দায়িত্বহীনতায় এ মৃত্যু হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া জন্য অনুরোধ জানাবো আমরা।’
এদিকে সংগঠনটির ফেসবুক গ্রুপে এফডিএসআরের দপ্তর সম্পাদক ডা. মো. রশিদুল হক বলেন, ‘ডা. নিয়াজ মোর্শেদের কারাগারে মৃত্যর বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হউক।’
গত শুক্রবার (৫ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার (কেরানীগঞ্জ) থেকে কারারক্ষীরা ডা. নিয়াজ মোর্শেদকে অসুস্থ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) ইন্সপেক্টর বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, মৃত নিয়াজ মোর্শেদের হাজতি নাম্বার ৪০৬৫৭/২১। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিম হত্যা মামলায় নিয়াজ মোর্শেদ হাজতি হিসাবে কারাগারে ছিলেন। তবে তিনি প্যারালাইসিস রোগী ছিলেন, আজ অসুস্থ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গত বছরের ৯ নভেম্বর আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিম শিপনকে চিকিৎসা করাতে আনা হয়। বেলা ১১টার দিকে তাকে একটি কক্ষে রেখে নির্যাতন করে মারার অভিযোগ আসে।
এ ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা শিপনের বাবা বাদী হয়ে ১৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নম্বর ৯ নম্বর আসামি ছিলেন হাসপাতালের পরিচালক নিয়াজ মোর্শেদ। সেই মামলায় নিয়াজ মোর্শেদ কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগে গত বছরের ১০ নভেম্বর রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতাল থেকে নিয়াজ মোর্শেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। অসুস্থতার কারণে পরে আবারও তাঁকে একই হাসপাতালে কিছু দিন ভর্তি রাখা হয়। এর পর থেকেই কেরানীগঞ্জ কারাগারে ছিলেন নিয়াজ।
সর্বশেষ অসুস্থ বোধ করলে শুক্রবার রাতে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে চিকিৎসকরা ডা. নিয়াজ মোর্শেদকে মৃত ঘোষণা করা করেন।