চমেকে চালু হলো বিশেষায়িত ‘স্ট্রোক ইউনিট’
মেডিভয়েস রিপোর্ট: স্ট্রোক রোগীদের অত্যাধুনিক চিকিৎসা সেবায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগে যাত্রা শুরু করেছে বিশেষায়িত স্ট্রোক ইউনিট।
গত ২০ সেপ্টেম্বর সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিহত হন তরুন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. মো. ওয়াহিদুর রহমান। তারই নামে (ওয়াহিদুর রহমান মেমোরিয়াল স্ট্রোক ইউনিট) নতুন এই স্ট্রোক ইউনিটের নামকরণ করা হয়। তিনি ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে এমডি (নিউরোলজি) কোর্সে অধ্যয়নরত।
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) চমেক হাসপাতালের ১৮নং ওয়ার্ডের (নিউরোলজি বিভাগ) সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ইউনিটটির উদ্বোধন করেন হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবির।
নিউরোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. হাসানুজ্জামানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চমেকের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার, মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. এম এ হাছান চৌধুরী, রেডিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সুভাষ মজুমদার, নিউরো সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এস এম নোমান খালেদ চৌধুরী, ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. শওকত হোসেন প্রমুখ বক্তব্য প্রদান করেন।
নিউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহবুবুল আলম খন্দকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ফারহানা মোছলেহউদ্দিন। অনুষ্ঠানে প্রয়াত চিকিৎসক ডা. ওয়াহিদুর রহমানের বাবা মাহফুজুর রহমান বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হুমায়ুন কবির বলেন, ‘স্ট্রোক ইউনিটের মাধ্যমে চট্টগ্রামের রোগীরা অত্যাধুনিক চিকিৎসা পাবেন। ঢাকার নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউটের পর বাংলাদেশে সরকারিভাবে চমেকের নিউরোলজি বিভাগে এই ইউনিট সংযোজিত হতে যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিউরোলজি ওয়ার্ডে স্থান সংকুলান না হওয়ায় অনেক সময় লিফটের পাশে বারান্দায় রোগী ভর্তি দিতে হয়, এটি অমানবিক। আমরা চেষ্টা করছি, এই ওয়ার্ডের একটি বর্ধিত ওয়ার্ড খুজে বের করার।’
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘এই স্ট্রোক ইউনিট গঠনের মূল উদ্দেশ্য হলো খুব দ্রুত সময়ে যেসব রোগী চিকিৎসা নিতে আসে, তাদেরকে থ্রম্বোলাইটিক থেরাপির মাধ্যমে একটি বিশেষায়িত চিকিৎসা প্রদান করা। এই থেরাপির মাধ্যমে স্ট্রোক রোগীর হাতে পায়ে প্যারালাইসিস হওয়া রোধ করা যাবে। এই থেরাপি এমন একটি সেবা যার প্রাপ্তির সময়সীমা খুবই সীমিত। স্ট্রোক হওয়ার সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ ঘণ্টার মধ্যে আমরা যদি এই সেবা শুরু করতে না পারি। তাহলে তা ফলপ্রসূ হবে না।’
বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধে ডা. ফারহানা মোছলেহউদ্দিন বলেন, ‘এই ইউনিটের মাধ্যমে অত্যাধুনিক থ্রম্বোলাইসিস চিকিৎসার মাধ্যমে স্ট্রোকজনিত মৃত্যু হার এবং শারীরিক অক্ষমতা অনেকাংশে কমে আসবে।’