নারীবান্ধব স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্ব, জাতীয় নারীস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার সুপারিশ

মেডিভয়েস রিপোর্ট: নারীর সামগ্রিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতা নিশ্চিতের উপর জোর দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন। এ লক্ষ্যে জাতীয় নারীস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। একই সাথে স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্যোগ-নিরোধক এবং নারী-শিশু ও বয়স্কবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলার সুপারিশ করা হয়েছে।
গত ৫ মে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া ৩২২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে এসব সুপারিশ উঠে এসেছে। জাতীয় অধ্যাপক ডা. একে আজাদ খানের নেতৃত্বাধীন স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি ৩২টি মূখ্য সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে নারীস্বাস্থ্যের বিষয়টিও।
মধ্যমেয়াদি এই সংস্কার প্রস্তাবে বলা হয়েছে, নারীর সামগ্রিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতা নিশ্চিত করতে জাতীয় নারীস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই প্রতিষ্ঠান বিশেষায়িত সেবাদান, সেকেন্ডারি ও টারশিয়ারি হাসপাতালের জন্য রেফারেল কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে এবং তাকে স্বাস্থ্যকর্মীদের নারী স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়নের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এটি নারীর স্বাস্থ্যসংক্রান্ত উপেক্ষিত ও জটিল সমস্যার সমাধানে নেতৃত্ব দেবে এবং নারীস্বাস্থ্যকে জাতীয় অগ্রাধিকারের পর্যায়ে উন্নীত করবে।
প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়, মা, শিশু, কৈশোরকালীন ও বিশেষ প্রয়োজনে থাকা ব্যক্তিদের জন্য উপযোগী ও সম্মানভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। এইসব জনগোষ্ঠীর জন্য প্রয়োজনভিত্তিক ও সংবেদনশীল সেবা-প্রদান ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যাতে তারা স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত না হন এবং তাদের অধিকার নিশ্চিত হয়। এক্ষেত্রে নারীস্বাস্থ্যে সরকারি ও ব্যক্তিগত অলাভজনক প্রতিষ্ঠান বা ইনস্টিটিউটগুলোকে উৎসাহিত করতে হবে এবং সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা প্রদান করতে হবে।
‘একই সাথে শিশু, কিশোর-কিশোরী ও বৃদ্ধদের মানসিক সুস্থতা, রোগ, মানসিক ও শারীরিক গড়ন, বুদ্ধিবৃত্তি, চিন্তা-চেতনা, সামাজিকতা ইত্যাদি বিষয়ে সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থা সৃষ্টিকে প্রাধান্য দিতে হবে’—উল্লেখ করা হয় প্রস্তাবনায়।
অপর এক প্রস্তাবনায় স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুর্যোগকালীন নারীদের সম্মানজনক পরিবেশ নিশ্চিতের সুপারিশ করা হয়েছে। ওই প্রস্তাবনায় বলা হয়, জলবায়ু ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে শিশু, কিশোর-কিশোরী, মহিলা ও গর্ভবতী নারীদের জন্য সম্মানজনক পরিবেশের নিশ্চয়তা দিতে হবে এবং স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলো যেন দুর্যোগ-নিরোধক ও নারী, শিশু, কিশোর-কিশোরী ও বয়স্কবান্ধব হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
এ ছাড়া নবজাতক, শিশু, কিশোর-কিশোরীর স্বাস্থ্য বিকাশ ও মঙ্গলের জন্য উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশও করেছে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন। এতে বলা হয়, একটি নিরবিচ্ছিন্ন ডিজিটাল তথ্য সম্প্রচার মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর নজরদারি এবং সময়োচিত ও যথাযথভাবে মাধ্যমিক ও তৃতীয় পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে রেফার করার মাধ্যমে নবজাতক, শিশু-কিশোর-কিশোরীর স্বাস্থ্য, বিকাশ এবং মঙ্গল সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করতে হবে।
এনএআর/
-
২৯ এপ্রিল, ২০২৫
-
১৮ এপ্রিল, ২০২৫