অন্তঃসত্ত্বা চিকিৎসকের উপর হামলা: তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মবিরতি

মেডিভয়েস রিপোর্ট: রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডা. সাবরিনা মুসরাত জাহান মৌ’র উপর হামলার প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করেছেন চিকিৎসক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শনিবার ও আজ রবিবার (১৩ এপ্রিল) এ কর্মবিরতি পালন করেছেন তারা। এ ঘটনায় তারাগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী চিকিৎসক।
এর আগে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হামলার এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী চিকিৎসক ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তিনি ৪২তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার মো. আতাউর রহমান (৬০) নামে একজন রোগী বুকে ব্যথা নিয়ে তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে যান। রোগীর উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করতে বলা হয়। এতে চিকিৎসা না দেওয়ার অভিযোগ তুলে ভুক্তভোগী চিকিৎসকের উপর হামলা করেন রোগীর স্বজনরা। তারা তারাগঞ্জের কলেজপাড়ার বাসিন্দা।
জানা গেছে, রোগী আতাউর রহমানের ছেলে তাহমিদ সরকার তূর্য (২২) ও তাওরাতের (২৪) নেতৃত্বে ওই চিকিৎসককে মারধর করা হয়। এতে আরও কয়েকজন অংশ নেন। পরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নৈশ প্রহরী, নার্স ও আয়ারা ডা. মৌকে উদ্ধার করেন।
ভুক্তভোগী চিকিৎসক ডা. সাবরিনা মুসরাত সাংবাদিকদের বলেন, ‘বুকে ব্যথা নিয়ে আসা রোগী হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন। তাকে এখানে সর্বোচ্চ সেবা প্রদান করা হয়। তবে হৃদরোগ শনাক্ত হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করতে বলা হয়। পরে জরুরি বিভাগে থাকা অন্য এক রোগীর চিকিৎসায় নিয়োজিত হই। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে আতাউর রহমানের ছেলে তাহমিদ সরকার ও তাওরাতসহ আরও কয়েকজন আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা আমাকে শারীরিকভাবে আঘাত করে।’
তিনি বলেন, ‘কিছুক্ষণ পর আবারও অভিযুক্ত দুইজনসহ অজ্ঞাত আরও পাঁচজন দলবদ্ধভাবে এসে উচ্চবাচ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এ সময় হাসপাতালের নৈশ প্রহরী সুমন চন্দ্র রায়, আয়া শ্যামলী রানী মহন্ত, সিনিয়র স্টাফ নার্স লোপাসহ রোগীর অন্য স্বজনরা আমাকে রক্ষা করেন। এতে তাদেরকেও ধাক্কাধাক্কি করে আঘাত করা হয়। তারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী আতাউর রহমানকে নিয়ে চলে যাওয়ার সময় আমাকে প্রাণনাশের হুমকিও দেয়।’
এ বিষয়ে রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. শাহীন সুলতানা মেডিভয়েসকে বলেন, ‘চিকিৎসকের উপরে হামলার ঘটনা শুনে আমি আধা ঘণ্টার মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। প্রাথমিক পরীক্ষা শেষে রোগীর অবস্থা গুরুতর পাওয়া গেলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়েছে। রোগীদের যাতে দুর্ভোগ না হয়, সে জন্য চিকিৎসকদের চিকিৎসাসেবা চালু রাখার নির্দেশ দিয়েছি। এ ছাড়া সঠিক বিচার ও নিরাপত্তা প্রদানে আশ্বস্ত করা হয়েছে। ডা. সাবরিনা মুসরাত শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থসহ নিরাপত্তাহীনতা বোধ করায় তাকে চারদিনের ছুটি দেওয়ার সুপারিশ করেছি।’
তারাগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুল ইসলাম মেডিভয়েসকে বলেন, ‘হামলার বিষয়ে শুক্রবারেই অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি তদন্তাধীন অবস্থায় রয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি।’
এমআই/এনএআর/
-
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
এনডিএফের গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা
৬৭ শতাংশ চিকিৎসক কোনো না কোনো নির্যাতনের শিকার
-
১৪ অগাস্ট, ২০২২
-
১১ অগাস্ট, ২০২২
-
০৬ জুলাই, ২০২১
-
০৪ জুলাই, ২০২১
-
০৪ জুলাই, ২০২১
-
০৭ এপ্রিল, ২০২১
-
৩০ মার্চ, ২০২১
-
১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
-
২১ জানুয়ারী, ২০২১
