১৭ মে, ২০২৩ ০৫:১১ পিএম

২০ বছর ধরে ৩১ শয্যার হাসপাতালে চলছে ৫০ শয্যার কার্যক্রম

২০ বছর ধরে ৩১ শয্যার হাসপাতালে চলছে ৫০ শয্যার কার্যক্রম
প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

মেডিভয়েস রিপোর্ট: জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগত রোগীদের বেসরকারি পরীক্ষা-নিরীক্ষার উপর  নির্ভর করতে হয় না। হাসপাতালে রয়েছে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা। স্বাস্থ্য সেবা নির্বিঘ্নে চালিয়ে যেতে নিরলস প্রচেষ্টা করে যাচ্ছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক-নার্স ও সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

আজ বুধবার (১৭ মে) উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মককর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. বদরুল হাসান মেডিভয়েসকে এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘বহির্বিভাগে দৈনিক ছয়’শ ২০ থেকে ছয়’শ ৫০ জন রোগী সেবা নেন। জরুরি বিভাগে প্রতিদিন সেবা নেন ৯০ থেকে ১২০ জন। শয্যার তুলনায় বেশি রোগী ভর্তি থাকে এ হাসপাতালে।’

সরকার ঘোষিত বৈকালিক সেবা চালু রয়েছে এ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ইউএইচএফপিও বলেন, নির্ধারিত দায়িত্ব পালন শেষে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং মেডিকেল অফিসাররা বৈকালিক চেম্বারে আসেন। প্রতিদিন বিকাল ৩ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত এ সেবা প্রদান করা হয়। দশজন চিকিৎসক আন্তরিকভাবে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক চারজন, বাকি ছয়জন মেডিকেল অফিসার। বিকেলেও অফারেশন থিয়েটার এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘এপ্রিল মাসে মোট রোগী আসছে ১০০ জন। এর মধ্যে ৮৮ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছ থেকে সেবা নিয়েছেন। বাকি ১২ জন মেডিকেল অফিসারদের থেকে সেবা নিয়েছেন। চলতি মাসে এ পর্যন্ত ৫০ জন রোগী সেবা নিয়েছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে প্যাথলজি বিভাগে ১৬টি পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়।’

ডা. বদরুল হাসান বলেন, ‘এপ্রিল মাসে বৈকালিক সেবায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ফি বাবদ ১২-১৩ হাজার টাকা আয় হয়েছে। ওই মাসে সব মিলিয়ে মোট আয় হয়েছে ৩৭ হাজার ৭৬০ টাকা। এই টাকা থেকে মেডিকেল পেয়েছে আট হাজার ১৭৫ টাকা। যা যাবতীয় ব্যয় মিটানোর জন্য যথেষ্ট নয়। এ জন্য আমরা আপাতত প্যাথলজি বিভাগের রিজেন্ট ক্রয় বাবদ ব্যয় করছি। এরপর প্রচার-প্রচারণাসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় করবো।’

তিনি আরও বলেন, দৈনিক গড়ে ১০-১২ জন রোগী এ সেবা নিচ্ছেন। প্রচার প্রচারণা কম হওয়ায় সেবা নিতে আসা রোগী সংখ্যা কম। তবে দিন দিন রোগী বাড়বে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি। জানান, প্রচারণা বৃদ্ধির পরিকল্পনার কথা।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগে নিয়মিত এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রাম, ইসিজি করা হচ্ছে জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ ও অন্ত:বিভাগে সেবা নিতে আসা কোনো রোগী এসব পরীক্ষা করার জন্য বাহিরে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না।’

প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গত বছরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোট ১৩৫১টি ডেলিভারি হয়েছে। এর মধ্যে ১২০৭টি স্বাভাবিক ডেলিভারি  ও ১৪৪টি সিজার। চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ৪৪টি সিজার ও ৪০০টি স্বাভাবিক ডেলিভারি হয়েছ।’

হাসপাতালের স্থানের সংকুলান বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে ইউএইচএফপিও বলেন, ‘সীমিত লোকবল নিয়ে চলতে হচ্ছে। চতুর্থ শ্রেণির অনেকগুলো পদ খালি। বিশেষজ্ঞের ৯টি পদের মধ্যে ৫টি খালি। সব চেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে স্থান সংকুলান হচ্ছে না। ২০০৩ সালে ৩১ শয্যা থেকে হাসপাতালটিকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়, কিন্তু তখন নতুন করে বৃদ্ধি পাওয়া ১৯ শয্যার জন্য স্থানের ব্যবস্থা করা হয়নি। নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল। সেটির নিচতলায় বহির্বিভাগ ও দ্বিতীয় তলায় অফারেশন থিয়েটার করা হয়। দ্বিতীয় তলার কাজ শেষ হলে ঠিকাদার চলে যান, ফলে তৃতীয় তলা সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় ৩১ শয্যার হাসপাতালটিতে ৫০ শয্যার কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে। সেবা দিতে একটু হিমশিম খেতে হচ্ছে।’ 

এএইচ/এসএএইচ

মেডিভয়েসের জনপ্রিয় ভিডিও কন্টেন্টগুলো দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন MedivoiceBD ইউটিউব চ্যানেল। আপনার মতামত/লেখা পাঠান [email protected] এ।
  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
করোনা ও বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা

এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক