২৯ জানুয়ারী, ২০২৩ ০১:৩৫ পিএম

সারার দান করা কর্নিয়ায় সুজন-ফেরদৌস সুস্থ: বিএসএমএমইউ ভিসি

সারার দান করা কর্নিয়ায় সুজন-ফেরদৌস সুস্থ: বিএসএমএমইউ ভিসি
সারা ইসলাম অঙ্গদান করে চারজনের মাঝে বেঁচে আছেন। তাকে আমরা কৃতজ্ঞার সাথে স্মরণ রাখব।

মেডিভয়েস রিপোর্ট: দেশের প্রথম ব্রেন ডেথ রোগী সারা ইসলামের দান করা কর্নিয়ায় ফেরদৌস আক্তার ও মোহাম্মদ সুজন ভাল আছেন বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

আজ রোববার (২৯ জানুয়ারি) সকালে বিএসএমএমইউতে সারার কর্নিয়া গ্রহীতা দুই রোগীর চক্ষু পরীক্ষা করেন বিএসএমএমইউ ভিসি। পরে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী সারা ইসলামের মৃত্যু নেই। সারার অঙ্গদানের মাধ্যমে দুইজন কিডনি ফেইলিউর রোগী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসছে। তাদের কিডনির কার্যকারিতা শুরু হয়েছে। অন্য দুইজন রোগী যাদের চোখে সারা ইসলামের কর্ণিয়া প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, তারা দেখতে পাচ্ছেন। এভাবে সারা ইসলাম অঙ্গদান করে চারজনের মাঝে বেঁচে আছেন। তাকে আমরা কৃতজ্ঞার সাথে স্মরণ রাখব। তিনি যে দৃষ্টান্ত রেখে গেলেন, তা আমরা সকলেই অনুসরণ করতে পারি।

তিনি বলেন, দেশে ক্যাডাভেরিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা গেলে রোগীদের বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা অনেকটাই কমে যাবে এবং অর্থের সাশ্রয় হবে। একই সাথে অনেক রোগী যারা জীবনের আশা ছেড়ে দিয়েছেন, তারা নতুন জীবন লাভ করবেন।

বিএসএমএমইউ ভিসি বলেন, ভবিষ্যতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্টও সফলভাবে সম্পন্ন হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। মানুষের জীবন বাঁচাতে অঙ্গদান কার্যক্রমকে সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

উল্লেখ্য, গত ১৯ জানুয়ারি প্রথম প্রহরে সারা ইসলাম ব্রেন ডেথ হবার পরপরই বিএসএমএমইউর ক্যাডাভেরিক সেলের আহ্বায়ক ও রেনাল ট্রান্সপ্লান্টেশনের অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলালের নেতৃত্বে সারাহ ইসলামের দুটি কিডনি বের করেন আনেন। পরে একটি কিডনি অধ্যাপক হাবিবুর রহমান দুলাল শামীমা আক্তার নামের এক রোগীর দেহে সফলভার প্রতিস্থাপন করেন। অপর কিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. খুরশিদুল আলমের নেতৃত্বে হাসিনা আক্তার নামের অপর এক রোগীর শরীরে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। তারা ভালো আছেন।

বিএসএমএমইউতে ফেরদৌসী আখতারের চোখের অস্ত্রোপচারের নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিটি অফথালমোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শীষ রহমান।

ফেরদৌসী আখতার ২০১৬ সালে এক অজানা ভাইরাসে তার ডান চোখে সমস্যা দেখা দেয়। কিছুই দেখতে পেতেন না। স্থানীয় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ক্লিনিকে চোখ দেখালেও সমাধান মেলেনি। পরে সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শীষ রহমানের কাছে চিকিৎসা নিতে আসেন। সাত বছর আগে কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন এ চিকিৎসক। তবে কর্নিয়া সংকটে এটি এতদিন করা সম্ভব হয়নি। কর্নিয়া জোগাড় করতে অগ্রিম ৫০ হাজার টাকা দিয়ে রেখেছিলেন এ শিক্ষিকা। সারার কর্নিয়া দানের সম্মতি পেয়েই চিকিৎসক শীষ রহমান ফেরদৌসকে ফোন করে ঢাকায় আসতে বলেন। এরপর তার ডান চোখে কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা হয়। ডান চোখে এখন স্বাভাবিকভাবে দেখতে পাচ্ছেন।

মোহাম্মদ সুজনের চোখের অস্ত্রোপচারের নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজশ্রী দাশ। মোহাম্মদ সুজন এখন ভাল আছেন।

গত ১৮ জানুয়ারি দিবাগত রাতে দেশে প্রথম ব্রেন ডেথ রোগী ঘোষিত সারা ইসলাম কিডনি অন্য দুজন রোগীর দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। এটি দেশের চিকিৎসাসেবায় মাইলফলক। দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন ২০ বছরের তরুণী ফাইন আর্টসের মেধাবী শিক্ষার্থী সারা ইসলাম অঙ্গদান করে যান। তার অঙ্গদানের মাধ্যমে চারজন মানুষ নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন।

মেডিভয়েসের জনপ্রিয় ভিডিও কন্টেন্টগুলো দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন MedivoiceBD ইউটিউব চ্যানেল। আপনার মতামত/লেখা পাঠান [email protected] এ।
‘ছেলেরা কেন পিছিয়ে, কারণ অনুসন্ধান করুন’

অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের গালমন্দ নয়: প্রধানমন্ত্রী

‘ছেলেরা কেন পিছিয়ে, কারণ অনুসন্ধান করুন’

অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের গালমন্দ নয়: প্রধানমন্ত্রী

  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত