ইউরোপে বাড়ছে সংক্রমণ, মার্চের মধ্যে মৃত্যু ২২ লাখ ছাড়ানোর শঙ্কা
মেডিভয়েস ডেস্ক: আগামী মার্চ মাসের মধ্যে ইউরোপে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ২২ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)। সংস্থাটি আরও বলেছে, ক্রমাগতভাবে ছড়িয়েপড়া ভাইরাসটি ইউরোপে মৃত্যুর প্রধান কারণ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হ্যান্স ক্লুগ বিবিসিকে বলেছেন, ইউরোপে করোনার সংক্রমণ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা খুব চিন্তিত।
ডব্লিউএইচও বলেছে, অঞ্চলটিতে দৈনিক মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ২০০ তে দাঁড়িয়েছে, যা গত সেপ্টেম্বর মাসে দৈনিক মৃত্যুর চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। অপরদিকে যুক্তরাজ্যসহ গোটা ইউরোপে মোট মৃত্যু ইতিমধ্যে ১৫ লাখ ছাড়িয়েছে।
এমন পরিস্থিতিকে ‘অত্যন্ত ভয়াবহ’ উল্লেখ করে ডব্লিউএইচও বলেছে, ইউরোপের ৫৩টি দেশের মধ্যে ২৫টি দেশেই করোনা পরিস্থিতি ‘অতিমাত্রার উদ্বেগজনক’। এই ধারাবাহিকতা চলতে থাকলে আগামী বছরের মার্চের শুরুতে মোট মৃতের সংখ্যা ২২ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে।
করোনা মহামারি শুরুর পরে আবারও মহামারির কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠছে ইউরোপ। এমন প্রেক্ষাপটে এই পরিস্থিতিতে ইউরোপে প্রবীণ এবং অসুস্থদের দ্রুত বুস্টার ডোজ দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। অনেক দেশ যেসব নাগরিক টিকা নেননি, তাঁদের ওপর নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে। এমনকি কিছু কিছু দেশে টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করায় এটি বিতর্ক উসকে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, দ্রুত সংক্রমণশীল ডেলটা ধরনের কারণে ইউরোপজুড়ে করোনার সংক্রমণ বেড়ে গেছে। সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পেছনে ইউরোপের অনেকে দেশে স্বাস্থ্যবিধি শিথিল করাকে দায়ী করছেন কেউ কেউ।
হ্যান্স ক্লুগ বলেছেন, টিকাদান ছাড়াও অন্য কর্মসূচি গ্রহণ করা দেশগুলোর জন্য খুবই জরুরি ছিল। এর মানে হলো ঠিকমতো টিকার ডোজগুলো নেওয়া এমনকি প্রয়োজনে বুস্টার ডোজও গ্রহণ করা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ইউরোপে ১০০ কোটি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে, এ ছাড়া মোট জনসংখ্যার ৫৩ দশমিক ৫ শতাংশ টিকা পেয়েছেন। তবে সংস্থাটি এটাও বলেছে, টিকাদানের এই হারে দেশ ভেদে বেশ পার্থক্য রয়েছে। কোনো কোনো দেশে মোট জনসংখ্যার মাত্র ১০ শতাংশ লোক টিকা পেয়েছেন, আবার কোনো কোনো দেশে ৮০ শতাংশেরও বেশি জনগণ টিকা পেয়েছেন।
হ্যান্স ক্লেগ আরেকটি বার্তায় বলেছেন, গোটা ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়ায় করোনা পরিস্থিতি খুবই খারাপ। আসন্ন শীতে আমরা নতুন করে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছি। আশার কথা হলো, সরকার, স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষসহ আমরা সবাই যদি কার্যকর পদক্ষেপ নিই তাহলে মহামারিকে নাগালের মধ্যে রাখা সম্ভব।
এর মধ্যেই গত সোমবার রাত থেকে লকডাউন কার্যকর করেছে অস্ট্রিয়া। করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর দেশটিতে ঘোষিত চতুর্থ দফা লকডাউন এটি। আগামী ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত নতুন লকডাউন কার্যকর থাকবে। গত সপ্তাহে করোনার টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করে আইন পাস করেছে অস্ট্রিয়া। ফেব্রুয়ারি থেকে আইনটি কার্যকরের কথা রয়েছে।
প্রতিবেশী দেশ জার্মানিতে করোনা পরিস্থিতি আবারও ক্রমেই উদ্বেগজনক অবস্থায় যাচ্ছে। দেশটির রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, সংক্রমণের সংখ্যা গত সপ্তাহ থেকে ঊর্ধ্বমুখী। এখন পর্যন্ত জার্মানিতে করোনার সংক্রমণে মৃত্যু এক লাখ ছাড়িয়েছে।
অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে যুক্তরাজ্যে দৈনিক ৫০ হাজারের বেশি করোনার শনাক্ত হয়। নভেম্বরে এই সংখ্যা কিছুটা কমলেও গত এক সপ্তাহে এই সংখ্যা গড়ে দৈনিক ৪০ হাজার রয়েছে। যুক্তরাজ্যের পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আগেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ সাভেদ দেশটির জনগণকে টিকা নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন।
সরকারি কর্মীদের কর্মস্থলে প্রবেশের ক্ষেত্রে টিকা বাধ্যতামূলক করায় ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে প্রায় এক হাজার মানুষ প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
-
১৮ জানুয়ারী, ২০২৪
-
২৩ ডিসেম্বর, ২০২৩
-
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৩
-
২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
-
০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
-
২৮ অগাস্ট, ২০২৩
-
২০ অগাস্ট, ২০২৩
-
১৯ অগাস্ট, ২০২৩
-
০৮ অগাস্ট, ২০২৩