কুমিল্লা ট্রমা সেন্টারে হামলা, ২ চিকিৎসক আহত
মেডিভয়েস রিপোর্ট: চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোবারক হোসেন (৬০) নামে এক রোগীর মারা যাওয়াকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা ট্রমা সেন্টারে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে রোগীর স্বজনরা। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে এই ঘটনা ঘটে বলে মেডিভয়েসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল হক।
তিনি বলেন, রাত ৯টার দিকে নিহত মোবারক হোসেনের স্বজনরা ট্রমা সেন্টারে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে।
জানা গেছে, নিহত মোবারক হোসেন মাদকাসক্ত ছিলেন। মোবারক হোসেন কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার কোয়ার গ্রামের মৃত ওসমান গনির ছেলে।
রোগীর মৃত্যুর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে স্বজনদের সমঝোতায় লাশ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় বলে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনোয়ারুল হক।
জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে মোবারক হোসেন পায়ে ফোঁড়া নিয়ে কুমিল্লা নগরীর নজরুল অ্যাভিনিউয়ে ট্রমা সেন্টারে ভর্তি হন। সন্ধ্যার পরে পায়ের ফোঁড়া অপারেশনের জন্য অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। পরে অপারেশন থিয়েটারেই তার মৃত্যু হয়ে।
কুমিল্লা ট্রমা সেন্টারের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ডা. আব্দুল হক মেডিভয়েসকে বলেন, বিকেলে মোবারক হোসেন নামে একজন রোগী পায়ে ফোঁড়া নিয়ে ট্রমা সেন্টারে ভর্তি হয়। সন্ধ্যার পর অর্থাৎ সাড়ে ৬টার দিকে তার পায়ের ফোঁড়া অপারেশনের জন্য অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়।
আগে থেকেই রোগীর হার্টের সমস্যা থাকায় তাঁর জন্য অপারেশন ঝুঁকিপূর্ণ বলে পূর্বেই স্বজনদের জানানো হয় এবং তাদের নকিট থেকে অনুমতিও নেওয়া হয় বলে জানান ডা. আব্দুল হক।
তিনি বলেন, ‘অপারেশন থিয়েটারে যখন তাঁকে স্পাইনাল অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়া হয় তখন হঠাৎ তাঁর কার্ডিায়াক অ্যারেস্ট হয়। আমরা তাঁকে বাঁচানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি, সম্ভব হয়নি।’
ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ডা. আব্দুল হক বলেন, পরে রোগীর স্বজনদেরকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। বিষয়টিকে তাঁরা স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেনি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের লোকজনসহ সবার উপস্থিতিতে লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হয় এবং তাদেরকে এই বলে আশ্বস্ত করা হয় যে, বিষয়টি একটি সালিশের মাধ্যমে সমাধান করা হবে। রোগীর স্বজনরাও সেটি মেনে নিয়ে চলে যায় এবং অবস্থা স্বাভাবিক হয়।
এর কিছুক্ষণ পর অর্থাৎ রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১০টার দিকে একটি বাহিনী হঠাৎ ট্রামা সেন্টারে হামলা চালায় বলে জানান ডা. আব্দুল হক।
অতর্কিত এ হামলার ঘটনায় দুইজন চিকিৎসক আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি। তাঁরা হলেন, ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজের অর্থপেডিক সার্জনের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মহামুদুর রহমান বাদল এবং মেডিকেল অফিসার ডা. সাইদ।
ডা. আব্দুল হক বলেন, ‘হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের ধর্মই হচ্ছে রোগীদের সুস্থ্য করে তোলা। যদিও চিকিৎসা তো একটি মাধ্যম মাত্র, জীবন মরণ তো আর আমাদের হাতে না। আমরা চেষ্টা করেছি তাঁকে বাঁচানোর জন্য, কিন্তু পারিনি।’