করোনায় চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের মানসিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে গবেষণা
মেডিভয়েস প্রতিবেদক: দেশে করোনা মহামারীতে কর্তব্যরত চিকিৎসক-নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মানসিক চাপ এবং সংক্রমিত এলাকার সার্বিক পরিস্থিতির আলোকে করোনা সামাল দেওয়ার কৌশল নির্ধারণে গবেষণায় হাত দিয়েছেন কয়েকজন উদ্যোগী তরুণ।
এর মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যকর্মীরা কি পরিমাণ মানসিক চাপে আছে এবং এতে তাদের কর্মদক্ষতায় কেমন প্রভাব পড়ছে তা নিরুপন করা হবে। এসব মাথায় রেখে কি কি প্রদক্ষেপ গ্রহণ করলে স্বাস্থ্যকর্মীদের মানসিক চাপ কমিয়ে তাদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে তা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে সুপারিশ করবে গবেষকরা।
গবেষক দলের সদস্যরা জানিয়েছেন, করোনায় প্রতিদিনই সম্মুখযোদ্ধা চিকিৎসকরা না ফেরার দেশে পাড়ি দিচ্ছেন। অনাকাঙ্খিত এই জীবন বিপন্ন হওয়া রোধে কি কি কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব এ বিষয়ে ডাক্তারদের মতামত তুলে ধরার জন্য এ উদ্যোগটি একটি বিরাট সুযোগ। এই করোনা মহামারিকালীন সময়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য সাইকোলজিকাল গাইডেন্স কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ তাও সহজেই নিরুপন করা যাবে এই গবেষণা থেকে।
তরুণ গবেষকরা জানিয়েছেন, ‘এই গবেষণাটি আমাদের স্বাস্থ্যকর্মী এবং পলিসি মেকার উভয়ের জন্যই অতীব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। যেমন: জেলাভিত্তিক সকল তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের মাধ্যমে খুব সহজেই নিরুপণ করা যাবে কোন জেলার স্বাস্থ্যকর্মীরা বেশি মানসিক স্ট্রেসে ভুগছেন, সেসব জেলায় রিসোর্স (লোকবল, চিকিৎসা বা সুরক্ষার সরঞ্জাম) প্রয়োজনের তুলনায় কতটুকু সরবরাহ করা হচ্ছে। এসব তথ্য বিবেচনা করে সরকার খুব সহজেই প্রয়োজন অনুপাতে পরিকল্পনা পরিবর্তন করতে পারবেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চিহ্নিত রেড, ইয়োলো ও গ্রিন জোনের ভিত্তিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব এই গবেষণা থেকে।’
যেমন: একটা জোন রেড হলে সেখানে স্বাস্থ্যকর্মীদের কি কি বিষয়ের সমস্যা বা স্বল্পতা দেখা দেয় আর সে বিষয়টিকে মাথায় রেখে বর্তমানের গ্রিন বা ইয়েলো জোনসমূহ রেড জোনে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে সেসব জোনে কি ধরণের পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে রাখা উচিত তা নিয়ে পূর্ব পরিকল্পনা করা। এছাড়াও কি ধরনের পরিবহন, আবাসস্থল ও ডিউটির রোস্টারের ব্যবস্থাপনা করলে দেশের স্বাস্থকর্মীরা তাদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে পারবে এ বিষয়ে সুপারিশের ক্ষেত্রেও এই গবেষণাটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে।
এ গবেষণাটিতে সংযুক্ত আছেন ডা. আব্দুল্লাহ আল কাইয়ুম, ডা. মো. রিপন আহম্মেদ ও ড. রুহুল আমিন সজীব।
এর প্রধান উদ্যোক্তা স্টেইট ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইয়র্কের জাফর আহমেদ মেডিভয়েসকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস মহামারীর শুরু থেকেই আমি আমার ব্যক্তিগত দায় বোধ থেকেই একজন গবেষক হিসেবে এই মহামারীর মডেলিং এবং পলিসি রিকমান্ডেশন নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করছি। প্রত্যাশা একটাই, হয়তো কিছু মানুষের জীবন বাঁচানো যাবে।’
তিনি বলেন, ‘জীবন রক্ষার এই যুদ্ধে আমার চাইতে শতগুণ বেশি আন্তরিকতা এবং পরিশ্রম দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন আমাদের ডাক্তার, নার্স এবং হাসপাতালের কর্মচারীরা। দুঃখজনক হলেও সত্যি, তাদের অনেকেই প্রতিদিন প্রাণ হারাচ্ছেন, আর যারা বেঁচে আছেন তারাও বিভিন্ন চাপের (পারিবারিক, সামাজিক, কর্মক্ষেত্রে ইত্যাদি) মধ্যে দিন পার করছেন, যা খুবই হতাশাজনক। এমনকি দেশের প্রথম সারির একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকাও আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে ফিচার না করে ব্যবসায়ী/রাজনীতিবিদদের হিরো বানিয়ে পত্রিকায় ছাপায়। যদিও সবার সমালোচনায় পরে বাধ্য হয়ে পরের দিন আবার স্বাস্থকর্মীদের ফিচার করে তারা!’
তথ্য দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান
জাফর আহমেদ বলেন, ‘একক প্রচেষ্টায় আমরা অনেকেই হয়তো এ বিষয়সমূহ নিয়ে অবগত। কিন্তু অবাক করার বিষয়, আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে কালেকটিভ কোনো স্টাডি এখনো হয়নি, যেখানে তারা তাদের কনসার্নগুলো একত্রে প্রকাশ করতে পারবে, এটি না হওয়া খুবই দুঃখজনক। প্রধানত এই দায়বদ্ধতা বোধ থেকেই আমাদের এই স্টাডিটা ইনিশিয়েট করা। আমাদের গবেষণার প্রশ্নসমূহ এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীদের মহামারী চলাকালীন সময়ের ট্রমা/স্ট্রেস খুব সহজেই এসেস করা যায় এবং সে অনুপাতে পলিসি রিকমেন্ড করা যাবে।’
স্বাস্থ্যকর্মী (শুধুমাত্র ডাক্তার, নার্স ও হাসপাতালের কর্মচারী) হিসেবে আপনি যদি আপনার কনসার্নসমূহ তুলে ধরতে চান, তাহলে অনুগ্রহ করে এই লিংকে ( https://bit.ly/peritraumatic-distress-healthworkers) গিয়ে প্রশ্নোত্তরে অংশগ্রহণ করতে পারেন (Average completion time ~ 5-7 minutes)। এই স্টাডিতে আমরা আপনাদের পরিচয় এবং তথ্যের সম্পূর্ণ গোপনীয়তা বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর (এমনকি আমরা আপনাদের নামও নিবন্ধন করছি না)।
আর আপনারা যারা সরাসরি স্বাস্থ্যকর্মী নন, তারা হয়তো এই স্ট্যাটাসটি শেয়ার করলে আপনার পরিচিত অনেক স্বাস্থ্যকর্মী তাদের কনসার্ন রেইজ করার সুযোগ পাবেন।
-
১৮ জানুয়ারী, ২০২৪
-
২৩ ডিসেম্বর, ২০২৩
-
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৩
-
২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
-
০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
-
২৮ অগাস্ট, ২০২৩
-
২০ অগাস্ট, ২০২৩
-
১৯ অগাস্ট, ২০২৩
-
০৮ অগাস্ট, ২০২৩
-
০৫ অগাস্ট, ২০২৩