০৪ জুন, ২০২০ ০৯:২৩ পিএম

মেডিকেল ছাত্রী ও তার পরিবারকে নির্যাতন, মুন্সীগঞ্জের ওসি প্রত্যাহার

মেডিকেল ছাত্রী ও তার পরিবারকে নির্যাতন, মুন্সীগঞ্জের ওসি প্রত্যাহার

মেডিভয়েস রিপোর্ট: মুন্সিগঞ্জে মেডিকেল শিক্ষার্থী ও তার পরিবারের সদস্যদের উপর অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় টঙ্গীবাড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ্ মো. আওলাদ হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ জুন) ওই পুলিশ কর্মকর্তার বদলির তথ্য নিশ্চিত করেন ভুক্তভোগী তাসমিম জেরিন তন্না।

তিনি বলেন, তার ও তার পরিবারের উপর অমানবিক নির্যাতন ও মিথ্যা মামলা দেওয়ার অভিযোগে গত ২ জুন ওসি আওলাদ হোসেনকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইন্সে বদলি করেছে জেলা পুলিশ ‍সুপার। ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তাদেরকে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত এবং মিথ্যা মামলার মাধ্যমে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাসমিম জেরিন তন্না।

ওসি আওলাদের প্রত্যাহারে স্বস্তি প্রকাশ করে ওই মেডিকেল শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি আশাবাদী যে, প্রশাসন থেকে আমরা ন্যায় বিচার পাবো। যারা এই দুঃসময় আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই তাদের সহযোগিতার জন্য। আপনাদের সকলের সহযোগিতায় আমার এবং আমার পরিবারের উপর হওয়া নির্যাতনের কথা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, মন্ত্রণালয়সহ দেশের মানুষ জেনেছেন। ইতোমধ্যে টংগীবাড়ি থানার ওসি শাহ মো. আওলাদ হোসেনকে টংগীবাড়ি থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। মুন্সিগঞ্জের ২ নং আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক সাগুফতা ইয়াসমিন ও মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে এ অন্যায়ের বিচার হবে।’

ওসি ও কনস্টেবল তানজিলকে বদলির পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে স্থায়ী ব্যবস্থা এবং এই অমানবিক নির্যাতনের সঠিক বিচার দাবি করে তন্না আরও বলেন, ‘আমরা এর সঠিক ও পরিপূর্ণ বিচার দেখতে চাই’। 

গত ১৪ মে ভাড়াটিয়া, পুলিশ কনস্টেবল তানজিল হোসেনকে করোনা সতর্কতা ও নিরাপত্তা মেনে চলতে বলাকে কেন্দ্র করে তন্নার বাবা আহসান কবীর খানের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে আহসান কবীর ও তার স্ত্রীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন এবং তাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন ওই পুলিশ কনস্টেবল। এ বিষয়ে ওসি আওলাদকে জানানো হলে ‍তিনি উল্টো ভুক্তভোগী আহসান কবীরের বাড়িতে এসে গালিগালাজ করেন।  

এরপর রাত আনুমানিক সাড়ে আটটার দিকে তন্নার বাসায় সার্কেল এসপি রাকিবুল ইসলাম আসেন এবং সবার কথা শুনে তিনি তাদের কাছে কনস্টেবলের হয়ে ক্ষমা চান। তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের আড়াই লাখ পুলিশের পক্ষ থেকে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আপনাদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।’ 

এ সময় আহসান কবীর সাধারণ ডায়েরি করতে চাইলে সার্কেল এসপি আশ্বস্ত করে বলেন, মামলার প্রয়োজন নেই, তিনি বিষয়টি দেখবেন।

কিন্তু ওই দিন রাত আনুমানিক দেড়টায় সার্কেল এসপি, থানার ওসি এবং ডিবি পুলিশসহ প্রায় ২৫-৩০ জন পুলিশ আহসান কবীরের বাড়িতে এসে ভাঙচুর, এবং পরিবারের প্রত্যেককে মারধর করে টেনে-হিঁচড়ে থানায় যায়। এ সময় মেডিকেল শিক্ষার্থী তন্নাসহ তাদের পরিবারের নারী সদস্যদের ওপরও নির্যাতন চালায় তারা। থানায় নিয়ে নির্যাতনের ব্যাপারে কাউকে না বলার বিষয়ে হুমকি প্রদান এবং এই মর্মে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়। 

কনস্টেবল তানজিলকে লাঞ্ছিত করার মামলায় সেদিন রাতেই আহসান কবীর ও তার ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন ১৫ মে তাদের আদালতে তোলা হলে ছেলের জামিন হলেও আহসান কবীর প্রায় ১৬ দিন জেলে থাকার পর গত ৩১ মে জামিন পান।

মেডিভয়েসের জনপ্রিয় ভিডিও কন্টেন্টগুলো দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন MedivoiceBD ইউটিউব চ্যানেল। আপনার মতামত/লেখা পাঠান [email protected] এ।
  ঘটনা প্রবাহ : মেডিকেল শিক্ষার্থীর ওপর হামলা
  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
করোনা ও বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা

এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক