০৫ মার্চ, ২০২৪ ০৫:৪২ পিএম

অধ্যাপক প্রাণ গোপালের নামে পেজ খুলে ভেজাল ওষুধ বিক্রি, আটক ৬

অধ্যাপক প্রাণ গোপালের নামে পেজ খুলে ভেজাল ওষুধ বিক্রি, আটক ৬
অবশেষে চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি।

মেডিভয়েস রিপোর্ট: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক ভিসি ও কুমিল্লা ৭ আসনের সংসদ সদস্য এবং নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্তের নাম ও ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে ভুয়া পেইজ ও আইডি খুলে ভেজাল ওষুধ বিক্রি করত একটি চক্র। দেওয়া হতো পরামর্শ ও ওষুধ কেনার উৎসাহ। ডা. প্রাণ গোপালের চেম্বার সহকারী বদরুল ইসলাম গত ৭ ফেব্রুয়ারি কলাবাগান থানায় মামলা করলে সেটির ছায়া তদন্ত শুরু করে ডিবি। অবশেষে সেই চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি যশোর এবং সোমবার (৪ মার্চ) ঢাকার মিরপুরে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—জহুরুল ইসলাম (৪১), সাবিদ চৌধুরী (৩৩), মোহাম্মদ আলী (৪১), রাফিদ ইসলাম নুহিন (১৯) ও জাকির নাসের (২২)। এসময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন মডেলের মোবাইল ফোন ৮টি, সিম কার্ড ১৩টি, ল্যাপটপ ৩টি, আইডি কার্ড ২টি, ডিয়া ফিক্স নামে ১৪০ বোতল ওষুধ, বুস্টার বক্স ৪১০টি বোতল, লেবেল ছাড়া সবুজ রংয়ের ক্যাপসুল ৩৭০ বোতল, ডিয়া ফিক্স, প্রিমিয়াম হার্বাল ফর্মুলা লেবেল ৩০টি, গিংকো হিলোবা ১০০ গ্রাম যৌন উত্তেজক পাউডার, বিভিন্ন ওষুধ ও সাপলিমেন্ট তৈরির ফরমুলা লেখা একটি ডায়েরিও প্রায় ৩৮ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দুপুরে ডিবির নিজ কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান ডিবির প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

ডিবিপ্রধান বলেন, চক্রটি স্বনামধন্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপালের নামে ফেসবুক আইডি ও পেজ খুলে দীর্ঘদিন থেকে ভেজাল ওষুধ বিক্রি করে আসছিল। তারা এভাবে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তারা ফেসবুকে সেই ভেজাল ওষুধের ছবি দিয়ে তাতে প্রাণ গোপালের ছবিও তারা ব্যবহার করেছিল। আসলে বিষয়টি সম্পর্কে প্রাণ গোপাল কিছুই জানতেন না। এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর আমরা ছয়জনকে গ্রেপ্তার করি। তাদের ছয়জনেরই শিক্ষাগত যোগ্যতা খুবই ভাল। কেউ এমবিএ, কেউ এমএসসি, কেউ অনার্সে পড়ছে। তাদের কাছ থেকে আমরা এক মাসের বিক্রি বাবদ ৩৮ লাখ টাকা উদ্ধার করেছি। এ থেকে বলা যায় তারা এসব ভেজাল ওষুধ বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এখানেই শেষ নয়, তারা ভেজাল ওষুধ বিক্রির পাশাপাশি যৌন উত্তেজক বিভিন্ন ওষুধ নিজেরাই তৈরি করতেন। পরে এসব ওষুধ বিক্রির জন্য তারা ফেসবুকের পেজকে বুস্টিং করতেন। তারা এসব পেজ থেকে প্রাণ গোপালের নামে গ্রাহকের সঙ্গে মেসেজও আদান-প্রদান করতেন। আমরা তাদেরকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে এনেছি। তারা সব স্বীকার করেছে।

হারুন অর রশীদ বলেন, ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেখলেই বিশ্বাস করা যাবে না। আমরা এ ধরনের ভেজাল ওষুধ বিক্রিকারীদের এর আগেও গ্রেফতার করেছি। তাই যে সকল ওষুধগুলো কমন সেগুলো মানুষ খুব সহজেই ক্রয় করে। যেটা আসলে করা যাবে না। ওষুধ কেনার সময় কিন্তু সেটির গায়ে বিএসটিআই এর একটি অনুমোদন লোগো থাকে, সেটিও খেয়াল রাখতে হবে। এ ধরনের চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে কোনো চক্র যদি ওষুধ বিক্রি করে তবে তাদের ব্যাপারে আমাদের জানাবেন। এ নিয়ে আমাদের ডিবি পুলিশ কাজ করবে।

ডিবি জানায়, কলাবাগান থানার মামলার সূত্র ধরে তাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ। তারা ‘নিখাদ’ নামের একটি ব্র্যান্ডের নামে এসব প্রতারণা করতেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে তাদের উৎপাদিত সকল পণ্য কুরিয়ারের মাধ্যমে বিক্রি করে।

মেডিভয়েসের জনপ্রিয় ভিডিও কন্টেন্টগুলো দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন MedivoiceBD ইউটিউব চ্যানেল। আপনার মতামত/লেখা পাঠান [email protected] এ।
  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
করোনা ও বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা

এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক