ডায়াবেটিস ও ফ্যাটি লিভার
লিভার বা যকৃত খুব গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। পেটের উপরে ডানপাশে এর অবস্থান। মানুষের একটি লিভার থাকে এবং এটি শরীরের জন্য অত্যাবশ্যকীয় অঙ্গ। বেশি পরিমাণে ফ্যাট বা চর্বি জমে লিভারের কার্যক্ষমতা ব্যাহত হলে তাকে ফ্যাটি লিভার ডিজিজ বলে। এই অসুখ বর্তমানে অনেক বাড়ছে। বিভিন্ন কারণ এর জন্য দায়ী। নিয়ম না মেনে চললে ফ্যাটি লিভার থেকে লিভার সিরোসিস এবং লিভার ক্যান্সার হতে পারে। তাই এই বিষয়ে সচেতন হতেই হবে।
ফ্যাটি লিভারের বিভিন্ন কারণের রয়েছে—
১. স্থূলতা
২. রক্তে অতিরিক্ত সুগার
৩. এলকোহল
৪. রক্তে অতিরিক্ত চর্বি
৫. গর্ভাবস্থায়
৬. হঠাৎ ওজন কমে গেলে
৭. বিভিন্ন ওষুধ ও
৮. বিভিন্ন টক্সিন ইত্যাদি।
ফ্যাটি লিভারের প্রকার
ফ্যাটি লিভার ডিজিজকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। একটি হচ্ছে অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ। এই অসুখ আমাদের দেশে তেমন একটা দেখা যায় না আর দুই হচ্ছে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ। এই গ্রুপের অনেক রোগী আমাদের দেশে দেখতে পাওয়া যায়। মাত্রাতিরিক্ত এলকোহল গ্রহণের কারণে যকৃৎ বা লিভারে যে ফ্যাট জমা হয়, তাকে বলা হয় অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ। অন্যদিকে খাদ্যাভ্যাস বা জীবনযাত্রায় অনিয়মের ফলে লিভারে যে ফ্যাট জমা হয়, তাকে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ বলা হয়।
থাকে না উপসর্গ
ফ্যাটি লিভারের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোন উপসর্গ থাকে না। কারো কারো ক্ষেত্রে পেটের উপরের ডানদিকে অসুবিধা হয়। যখন আস্তে আস্তে লিভার সিরোসিস হয়, তখন নানারকম উপসর্গ দেখা দিতে থাকে। এসব উপসর্গের মধ্যে আছে—
১. ক্ষুধামন্দা
২. ওজন কমে যাওয়া
৩. দুর্বলতা
৪. ক্লান্তি
৫. নাক দিয়ে রক্ত পড়া
৬. জণ্ডিস
৭. পেট ব্যথা
৮. পেট ফুলে যাওয়া
৯. পা ফুলে যাওয়া
১০. মানসিক পরিবর্তন ও
১১. চামড়ায় পরিবর্তন ইত্যাদি।
ফ্যাটি লিভারের অন্যতম প্রধান কারণ ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিস হলে লিভারে চর্বি জমার আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়। ডায়াবেটিস হলে রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়ে। অতিরিক্ত এই ট্রাইগ্লিসারাইড লিভারে জমা হয়ে ফ্যাটি লিভার তৈরি করে।
বর্তমানে ডায়াবেটিসের প্রকোপ বাড়ছে। বাড়ছে ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হবে। না হলে হতে পারে ফ্যাটি লিভার। সেখান থেকে হতে পারে লিভার সিরোসিস এবং লিভার ক্যান্সার। তাই সতর্ক হতে হবে। নিয়ম মানতে হবে।
-
১৪ জুন, ২০২৪
-
০৩ নভেম্বর, ২০২৩
-
২৮ জুলাই, ২০২২
-
২০ ডিসেম্বর, ২০২১