১৪ মে, ২০২৩ ০৭:১৩ পিএম

কিডনি বিশেষজ্ঞ ডা. কামরুলের মা পেলেন রত্মগর্ভা পদক

কিডনি বিশেষজ্ঞ ডা. কামরুলের মা পেলেন রত্মগর্ভা পদক
রাজধানীর শাহবাগে ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী সেন্টারে রত্নগর্ভা মা অ্যাওয়ার্ড-২০২২ অনুষ্ঠানে তাকে বিশেষ ক্যাটাগরিতে এ পদক দেওয়া হয়।

মেডিভয়েস রিপোর্ট: বিনা পারিশ্রমিকে এক হাজারের বেশি কিডনি প্রতিস্থাপন করে দেশব্যাপী আলোচিত মানবিক চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল ইসলামের মা অধ্যাপক রহিমা খাতুন আজাদ প্রোডাক্টস’র ‘রত্নগর্ভা মা’ পদক পেয়েছেন।

আজ রোববার (১৪ মে) রাজধানীর শাহবাগে ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী সেন্টারে রত্নগর্ভা মা অ্যাওয়ার্ড-২০২২ অনুষ্ঠানে তাকে বিশেষ ক্যাটাগরিতে এ পদক দেওয়া হয়।

রহিমা খাতুন বলেন, ‘চার সন্তানকে লালন-পালন করার জন্য রোদ-বৃষ্টি, ঝড়-তুফান মাথায় করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিউশনি শুরু করি। শুধু তাই নয় এমনও হয়েছে, অর্থাভাবে বাচ্চাদের ক্ষুধা নিবারণ করতে গিয়ে নিজের শরীরের রক্ত পর্যন্ত বিক্রি করতে হয়েছে। এভাবেই এইচএসসি, ডিগ্রি ও ১৯৭৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগ থেকে প্রথম স্থান অধিকার করে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছি। হার না মানা মনোবল নিয়ে নিজে উঠে দাঁড়িয়েছি। চার সন্তানের মধ্যে সবার বড়টি ছোট থেকেই মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় মেজ ছেলে কামরুলকে নিয়ে অনেক বড় স্বপ্ন ছিল। আজ আমার সবকটি সন্তানই এক একটি রত্ন। মা হিসেবে আমি গর্বিত।’

মায়ের রত্নগর্ভা পদক পাওয়ার পর অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি যখন ক্লাস থ্রিতে পড়ি তখন আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন। তখন আমার মা মাত্র ম্যাট্রিক পাস। নানির বাড়ি থেকে এইচএসসি, ডিগ্রি পাস করলেন। এরপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স পাস করেন।’

তিনি বলেন, ‘আমার মা অত্যন্ত দৃঢ়চেতা, যার কিছু ছিটেফোঁটা হয়তো আমি পেয়েছি। উনি যেটা মনে করেন এটা করবেন, তখন উনি সেটা করেই থাকেন। আমার মা আমাদের কত কষ্ট করে বড় করেছেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সকাল ৮টায় বের হতেন। লালমাটিয়া কলেজ শেষ করে তারপর অনেকগুলো টিউশনি করে রাত ৮টার দিকে বাসায় ফিরতেন। তারপরও পরিবারের সব কাজ করতেন। প্রতিটা মা সন্তানদের এভাবেই গড়ে তোলেন। আজ সেসব মাকে সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে তাতে আমরা গর্বিত। এটা আরও বড় পরিসরে ও দেশব্যাপী করা উচিত। তাহলে সব মা তাদের সন্তানকে সোনার সন্তান করে গড়ে তুলতে অনুপ্রাণিত হবেন।’

অধ্যাপক রহিমা খাতুন ১৯৪৩ সালের ১২ এপ্রিল পাবনার ঈশ্বরদীর পাকশীতে জন্মগ্রহণ করেন। এসএসসি পাসের সঙ্গে সঙ্গেই পাকশী ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউটের আরনোমিস্ট মো. আমিনুল ইসলামের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের মাত্র নয় বছরের মধ্যে চার পুত্র সন্তানের পিতা-মাতা হন এ দম্পতি। ১৯৭১ সালে আমিনুল ইসলাম বিহারি ও রাজাকারদের হাতে নিহত হন। এতে চার সন্তান নিয়ে নিরুপায় হয়ে স্বামীর অফিসে চাকরির খোঁজে যান রহিমা খাতুন। কিন্তু এসএসসি পাস হওয়ায় ক্লারিক্যাল জব ছাড়া কিছুই পাওয়া সম্ভব নয় বলে আবারও পড়াশোনা শুরু করেন।

এসএস

মেডিভয়েসের জনপ্রিয় ভিডিও কন্টেন্টগুলো দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন MedivoiceBD ইউটিউব চ্যানেল। আপনার মতামত/লেখা পাঠান [email protected] এ।
  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
নম্বরের কথা চিন্তা করে পড়াশোনা করিনি: ডা. জেসি হক
এমআরসিপিতে বিশ্বসেরা বাংলাদেশি চিকিৎসক

নম্বরের কথা চিন্তা করে পড়াশোনা করিনি: ডা. জেসি হক