
অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম
মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ ০৬:৩২ পিএম
বিসিপিএসের মাল্টিপারপাস ভবন হবে চিকিৎসকদের প্রয়োজন সমাধানের কেন্দ্রবিন্দু

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স এন্ড সার্জন্সের (বিসিপিএস) যাত্রা শুরু হয় একটি মাত্র ভবন নিয়ে (এ-ব্লক, অডিটোরিয়াম সহ)। পরবর্তীতে ব্লক-বি (একাডেমিক ভবন) এবং ব্লক সি (নতুন ভবন) নির্মাণ করা হয়। কালের পরিক্রমায় এ-ব্লকটি ব্যবহারের অকেজো হয়ে পড়ে। ২০১৫ সালে ভবনটিকে ব্যবহারের অনুপযোগী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
যুগের চাহিদা, ভবিষ্যতে ফেলোদের সংখ্যা ও আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান রেখে কলেজ কাউন্সিল এ-ব্লকটি ভেঙ্গে একটি বহুমুখী সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন সুউচ্চ ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা প্রণয়ন করে। ২০১৯ সালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বিসিপিএস পরিদর্শনকালে কলেজ কাউন্সিল এ-ব্লকে একটি মাল্টিপারপাস ভবন তৈরির প্রস্তাব করে। মন্ত্রী তখন একটি ডিপিপি তৈরির মাধ্যমে তা করতে পরামর্শ দেন।
এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমান কার্যকরী পরিষদ বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে ডিপিপি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জমা দেয়। তারপর মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা শাখা হয়ে প্রি-একনেক শেষ করে ২০২১ সালের ৮ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একনেকের সভায় ২১৫ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ‘বাংলাদেশ কলেজ অফ ফিজিশিয়ানস এন্ড সার্জন্সের আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের অনুমোদন দেন। যার আওতায় তিনটি বেজমেন্টস, এক হাজার পাঁচশ আসন বিশিষ্ট অডিটোরিয়ামসহ ১২ তলা একটি মাল্টিপারপাস ভবন নির্মাণ করা হবে।
ভবনের সুবিধা সমূহ:
• গাড়ি পার্কিংয়ের তিনটি বেজমেন্ট।
• ১৫০০ আসন বিশিষ্ট থ্রিডি সুবিধাসম্পন্ন অডিটোরিয়াম।
• সকল ফ্যাকাল্টির জন্য সুনির্দিষ্ট স্থান এবং স্কিল ট্রেনিং সেন্টার।
• সকল ধরনের ক্লিনিক্যাল/সার্জিক্যাল স্কিল ডেমোনেস্ট্রেশনের জন্য ম্যানিকুইন।
• অত্যাধুনিক লেপারস্কপি এবং এন্ডোসকপি ট্রেনিং ও সিমুলেশন সেন্টার।
• বিশ্বমানের ডিজিটাল লাইব্রেরি।
• ডিজিটাল মিউজিয়াম।
• বিসিপিএসের নিজস্ব প্রেস।
• আইটি ট্রেনিং ল্যাব এবং ভার্চুয়াল ক্লাসরুম।
• ফেলোদের জন্য MIS শাখা।
• হেলিপ্যাড।
• বিশ্বমানের রোবটিক ট্রেনিং সেন্টার (দেশে প্রতিষ্ঠিতব্য তিনটি রোবটিক ট্রেনিং সেন্টারের মধ্যে একটি হবে বিসিপিএস)।
কাজের অগ্রগতি:
• বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় সংশোধিত DPP (২৮৫ কোটি টাকা ) আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে একনেকে অনুমোদিত হবে, এরপরেই এই বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু হবে ।
• পুরনো ভবন ভেঙে অপসারণ করা হয়েছে, ভবনের জায়গাটুকু বালি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে।
• ভবনের আর্কিটেকচারাল এবং স্ট্রাকচারাল পরিকল্পনা প্রণয়ন শেষ হয়েছে।
• সয়েল টেস্টিং সম্পন্ন করা হয়েছে।
অধিকাংশ পেশাজীবী, যেমন-প্রকৌশলী ও কৃষিবিদদের নিজ নিজ মিলিত হওয়ার জায়গা আছে, কিন্তু চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে এই ধরনের ব্যবস্থা নেই। বহুমুখী সুবিধা সম্পন্ন এই ভবনটি ফেলোদের তথা সমগ্র চিকিৎসক সমাজের একটি প্রত্যাশা। এটি বাস্তবায়ন হলে ডাক্তারদের বিভিন্ন প্রয়োজন সমাধানের কেন্দ্রবিন্দু হবে এই ভবনটি।
এ ছাড়া কলেজের কার্যক্রম বিকেন্দ্রকরণ করার লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন শহরে আঞ্চলিক কেন্দ্র স্থাপনের নিমিত্ত গত বছর রাজশাহী ও সিলেটে যথাক্রমে ৭ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা ও ১৫ কোটি ৩২ লক্ষ টাকায় ৯০.৬ শতাংশ জমি ক্রয় করা হয়েছে। আমরা আশাবাদী আগামীতে এখানে কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, পরীক্ষার আয়োজন সহ বিভিন্ন অফিসিয়াল কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হবে। এতে স্থানীয় ও আশেপাশের জেলার ছাত্রছাত্রীরা উপকৃত হবে।
এসএস