২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২২ ০৩:৫৫ পিএম

শহীদ ডা. মিলনকে নিয়ে অধ্যাপক কামরুল হাসান খানের বই

শহীদ ডা. মিলনকে নিয়ে অধ্যাপক কামরুল হাসান খানের বই
বইটি শহীদ ডা. মিলন এর রত্নগর্ভা মা, মিসেস সেলিনা আক্তার কে উৎসর্গ করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।

মো. আলী হোসেন: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, একাধারে একজন গবেষক, লেখক ও সংগঠক। পেশার পাশাপাশি জাতীয় ও স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি করেন জাতীয় দৈনিকগুলোতে। সারাদিন খুবই ব্যস্ত সময় পার করেন। শতব্যস্ততার পরও সহযোদ্ধার স্মৃতিকে স্মরণ রাখতে লিখেছেন বই। পত্রিকায় প্রকাশিত তাঁর লেখাগুলো নিয়ে এবার বই মেলায় বেরিয়েছে ‘৯০ এর গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ডা. মিলন’।

স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নিহত শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলনের ভূমিকা নিয়ে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে বইটি লিখেছেন শহীদ ডা. মিলনের বন্ধু অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান। বইটি শহীদ ডা. মিলনের রত্নগর্ভা মা মিসেস সেলিনা আক্তারকে উৎসর্গ করেছেন। বইটিতে ডা. মিলনের জীবনীর কিছু অংশ, তাঁর হাতের লিখা ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ছবি আছে।

শহীদ ডা. মিলন গণঅভ্যুত্থান ৯০ এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বড় জায়গা করে নিয়েছেন। তার জীবনের শেষ দুটি বছর প্রতিনিয়ত ভেসে বেড়ায় লেখকের স্মৃতিতে। বইটি মিসেস সেলিনা আক্তারকে উৎসর্গ করে তার হাতে তুলে দিতে পেরে নিজে কৃতার্থ বোধ করছেন বলে জানান অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান।

একই প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করেছেন দুই বন্ধু। এক সঙ্গেই সংগঠন করেছেন। আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। হুলিয়া নিয়ে পালিয়েও বেড়িছেন এক সঙ্গেই। এমনসব স্মৃতিবিজড়িত ঘটনা স্থান পেয়েছে বইটিতে।

১৯৯০ সাল। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান এবং কোষাধ্যক্ষ ছিলেন ডা. মিলন। শিক্ষক সমিতির নেতা হিসেবে ৯০-এর গণঅভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন দুইজনই। একই সঙ্গে দুজন বিএমএ নেতা ছিলেন। ডা. মিলন ছিলেন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক, ডা. কামরুল হাসান খান ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা।

দুই বন্ধু ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ডা. কামরুল হাসান ছিলেন প্যাথলজি বিভাগের শিক্ষক। ডা. মিলন ছিলেন বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের শিক্ষক।

ডা. কামরুল হাসান বলেন, একই কলেজের শিক্ষক হওয়ায়, একই সঙ্গে সংগঠন করা, হুলিয়ার কারণে যখন পালিয়ে বেড়িয়েছেন তখনও এক সঙ্গে পালিয়ে থেকেছেন। ৯০’র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সবসবময় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দু’জন লড়েছেন এবং চলেছেন। আন্দোলন-সংগ্রামকে সংগঠিত করতে মিলনসহ প্রায় পঞ্চাশটি জেলা সফর করেছেন বলেও জানান তিনি। ফলে দুজনের মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব হয়ে যায়। এজন্য মিলনের জীবনের শেষ দুটি বছর তার (ডা. কামরুল হাসানের) সঙ্গে ওতপ্রোতোভাবে জড়িত। এসময়টুকু খুব ঘনিষ্ঠভাবেই কেটেছিল তাঁদের।

তিনি বলেন, মিলন অসাধারণ মানুষ ছিলেন। সে ছিলো দেশ প্রেমিক। ন্যায়ের পক্ষে কথা বলার জন্য খুব ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছিল তাকে। সরকার তাকে চাকরিচ্যুত করেছিল। ৯০’এর ২৭ নভেম্বর মিলন শহীদ হওয়ার পর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ নেয়। চার ডিসেম্বর এরশাদ পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। গণমানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে সর্বদা কাজ করেছেন ডা. মিলন। মিলনের সবকিছুই খুব কাছ থেকে দেখেছেন বলে জানান তিনি।

অধ্যাপক কামরুল হাসান খান আরো বলেন, তিনি মিলনের খুব কাছে ছিলেন এবং তাকে কাছ থেকেই দেখেছেন। ডা. মিলন ইতিহাসে একটি জায়গা করে নিয়েছেন। প্রতি বছর তাকে স্মরণ করে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়। বিভিন্ন জায়গায় তার নামে হোস্টেল আছে, হল আছে। তাই ইতিহাসের মানুষটাকে নিয়ে একটা বই লিখছেন বলে জানান বিএসএমএমইউর সাবেক ভিসি।

বইয়ের বিবরণ

বই: ৯০ এর গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ডা. মিলন

লেখক: অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, সাবেক ভিসি (বিএসএমএমইউ)।

প্রকাশক: আগামী প্রকাশনী।

প্রাপ্তিস্থান: একুশে বইমেল-২০২২, প্যাভিলিয়ন নং ১০ এ পাওয়া যাচ্ছে।

এমইউ

মেডিভয়েসের জনপ্রিয় ভিডিও কন্টেন্টগুলো দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন MedivoiceBD ইউটিউব চ্যানেল। আপনার মতামত/লেখা পাঠান [email protected] এ।
  ঘটনা প্রবাহ : অমর একুশে বইমেলা
‘ছেলেরা কেন পিছিয়ে, কারণ অনুসন্ধান করুন’

অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের গালমন্দ নয়: প্রধানমন্ত্রী

‘ছেলেরা কেন পিছিয়ে, কারণ অনুসন্ধান করুন’

অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের গালমন্দ নয়: প্রধানমন্ত্রী

  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত