পার্বত্য জেলায় নিউমোনিয়ায় তিন মাসে মারা গেছে ১৯ শিশু
মেডিভয়েস রিপোর্ট: তিন পার্বত্য জেলা—বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে গত তিন মাসে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ১ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী ১৯ শিশু। এর মধ্যে খাগড়াছড়িতে মারা গেছে ১৮ জন। বাকি একজন মারা যায় রাঙামাটিতে। বান্দরবানে শিশুরা আক্রান্ত হলেও কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
বুধবার (২৬ জানুয়ারি) সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদের সই করা দেশের ২৩ জন বিশিষ্ট নাগরিকের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এদিকে তাঁরা এ ঘটনায় সংসদীয় তদন্ত কমিটি গঠনসহ তিন দফা দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, নিউমোনিয়ায় এত শিশুর মৃত্যু স্বাভাবিক নয়।
তিন জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যানবিদের কাছ থেকে পাওয়া হিসাব অনুযায়ী, গত বছরের নভেম্বরের শুরু থেকে চলতি ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত (তিন মাসে) তিন পার্বত্য জেলায় ২ হাজার ১৭ জন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ শিশু। খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের তিন মাসের আক্রান্তের হিসাব পাওয়া গেলেও রাঙামাটির দুই মাসের হিসাব পাওয়া গেছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, পাহাড়ে প্রতিবছর শীতকালে নিউমোনিয়া রোগী, বিশেষ করে শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়। এবারের প্রাদুর্ভাব অন্য বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি। আবার তিন জেলার মধ্যে খাগড়াছড়িতে আক্রান্তের হার বেশি।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রিপল বাপ্পি চাকমা গণমাধ্যমকে বলেন, এ জেলায় ১ নভেম্বর থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ৩ মাসে ৭৭৯ জন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে হাসপাতালে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে—নভেম্বরে ৫ জন, ডিসেম্বরে ৬ জন ও জানুয়ারিতে ৭ জন।
এ ছাড়া রাঙামাটিতে ১ ডিসেম্বর থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ৫৭৬ জন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে জানুয়ারিতে তিন মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তবে বান্দরবানে নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ৬৬২ জন আক্রান্ত হয়।
বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বর্তমানে খাগড়াছড়ি হাসপাতালে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ২০, রাঙামাটিতে ১৬ ও বান্দরবানে ৬টি শিশু চিকিৎসাধীন।
খাগড়াছড়ি সিভিল সার্জন নূপুর কান্তি দাশ গণমাধ্যমকে বলেন, খাগড়াছড়িতে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি হওয়ায় নিউমোনিয়ায় আক্রান্তের হার বেশি। তা ছাড়া যোগাযোগসুবিধার কারণে রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলার রোগীরাও খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে থাকে।
সিভিল সার্জন আরও বলেন, শূন্য থেকে এক বছর বয়সের শিশুদের যথাযথ যত্ন নেওয়া না হলে সংকটে পড়ে। এ বয়সের শিশুদের মৃত্যুর সংখ্যাই বেশি।