‘অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন জরুরি’

মেডিভয়েস রিপোর্ট: করোনা মহামারীর এই সময়ে জনস্বাস্থ্য রক্ষা এবং অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধের জন্য কঠোরভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। এজন্য তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে শক্তিশালী করতে এর ছয়টি ধারা সংশোধন করা জরুরি।
আজ সোমবার (১ নভেম্বর) বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত ‘জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের গুরুত্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রায় পৌনে চার কোটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে। কর্মক্ষেত্রসহ পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় ৩ কোটি ৮৪ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। তামাকজাত দ্রব্যের বহুল ব্যবহার হৃদরোগ, ক্যান্সার, বক্ষব্যাধি এবং অন্যান্য অনেক প্রতিরোধযোগ্য রোগ এবং মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। তাছাড়া বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিড ১৯ আক্রান্তদের মধ্যে ধূমপায়ীদের মারাত্মকভাবে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা ১৪ গুণ বেশি।
তামাকের এসব ক্ষতি থেকে জনস্বাস্থ্যকে রক্ষার জন্য তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারের উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, দেশে বিদ্যমান ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনটির বিভিন্ন দিক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, তারপরও কিছু জায়গায় দুর্বলতা রয়েছে। এই দুর্বলতাগুলো সংশোধন করা হলে, আইনটি আরো কার্যকর হবে।
সভাপতির বক্তব্যে বিএমএ’র সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, ‘ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন কর্তৃক উত্থাপিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী সমূহ সংযোজন করলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশিত ২০৪০-এ তামাক নিয়ন্ত্রিত বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।’
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল (রিজভী) বলেন, ‘বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী সমূহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে উপস্থাপন করে তা দ্রত বাস্তবায়নে উদ্যোগী হতে হবে।’
বিএমএ মহাসচিব ডা. মোঃ ইহতেশামুল হক চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ ও সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, সোসাইটি অব মেডিসিনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির ও সোসাইটি অব রেসপিরেটরি মেডিসিনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মির্জা হিরন প্রমুখ।