ডা. সুরেশ তুলসান

ডা. সুরেশ তুলসান

সহকারী অধ্যাপক (সার্জারি), কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ।


০৯ এপ্রিল, ২০২১ ১২:৩৪ এএম

করোনা এবং মাস্ক কাহিনী

করোনা এবং মাস্ক কাহিনী

লকডাউন, রাস্তায় কিছু রিকশা চলাচল করলেও খালি রিকশা পাচ্ছিলাম না। অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষায় থেকে যদিওবা একটা রিকশা পেলাম, কিন্তু রিকশাচালক বেশ বয়স্ক একজন মানুষ। আগে যখন টানা রিকশা ছিলো তখন বয়স্ক রিক্সা চালকের রিক্সায় একেবারেই উঠতাম না,মানবিকতায় বাদ সাধতো বিধায়।

এখন যদিও ব্যাটারি চালিত রিকশা তারপরও বয়স্ক চালকদের এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি এজন্য যে বেশ দ্রুতগামী বাহন, কোথায় ধাক্কা লাগিয়ে উল্টাবে এই ভয়ে।

একে তো বয়স্ক চালক তার ওপর আবার মুখে মাক্স নেই। করোনা শুরুর পর থেকেই আমি রাস্তায় বের হলেই বেশকিছু অতিরিক্ত মাস্ক সাথে রাখি রিকশাচালকদের জন্য। রিকশায় উঠার সময় রিকশা চালকের মুখে মাস্ক না থাকলে বা মানহীন অথবা অপরিস্কার মাস্ক থাকলে একটা নতুন মাস্ক দিয়ে দেই মুখে লাগানোর জন্য।

এই মানুষটিকে একটা নতুন মাস্ক দিতে গেলাম এবং বললাম "চাচা দয়া করে মাস্কটা মুখে লাগান,করোনা অনেক বেড়ে গেছে"।

উনি প্রথমে রাজিই হচ্ছিলেন না।

দ্বিতীয়বার অনুরোধ করাতে রেগে ক্ষেপে খিস্তিখেউড় করতে করতে রিকশা ঘুড়িয়ে নিয়ে চলে গেলেন --" মাস্ক পড়তে পারবো না, রিকশায় উঠলে উঠবেনন না উঠলে না উঠবেন, দাঁড়ায়ে থাকেন মাস্ক পড়া রিকশা পাইলে যাইবেন। করোনা টরোনা এসব কিছুই না, দ্যাশে করোনা বলে কিছু নেই, ,করোনায় কোন গরিব মানুষ মারা গেছে শুনছেন কখনও ,এসব হচ্ছে বড়লোকদের রোগ, আপনারা যারা বেশি বেশি মাস্ক পড়েন, তাদেরই বেশি বেশি করোনা হবে। "- ইত্যাদি আরও কত কি বলতে বলতে চলে গেলেন।

অনেকেই হয়তো বলার চেষ্টা করবেন, মুখে মাস্ক লাগিয়ে রিকশা চালানো কঠিন কাজ, সেটা পায়ে প্যাডেল ঘুড়িয়ে চালানো রিকশার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য স্বীকার করছি, কিন্তু ব্যাটারি চালিত রিকশার ক্ষেত্রে মনে হয় না।

মনে পড়ে গেল গতবছর করোনার শুরুতে সেই নারী এসি ল্যান্ড বোনটিকে, যিনি মুখে মাস্ক না থাকায় দুইজন বয়স্ক ভ্যানচালক কে কান ধরে উঠবস করিয়ে ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন।

শিক্ষা: লাতো কে ভূত বাতো সে নেহি মানতে।

  ঘটনা প্রবাহ : করোনাভাইরাস
  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত