০৪ জুলাই, ২০২০ ০৫:৫৫ পিএম
চট্টগ্রামে তথ্যমন্ত্রী

মোকাবিলা করতে না পারলে করোনায় মৃত্যু ভারত-পাকিস্তানকে ছাড়াতো

মোকাবিলা করতে না পারলে করোনায় মৃত্যু ভারত-পাকিস্তানকে ছাড়াতো

মেডিভয়েস রিপোর্ট: সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে না পারলে বাংলাদেশে করোভাইরাসে মৃত্যুর হার ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে বেশি হতো বলে উল্লেখ করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। শুক্রবার (৩ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত সাংবাদিকদের মধ্যে করোনাকালীন সহায়তার চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

ড. হাছান বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো দেশ এই করোনাভাইরাস মোকাবেলার জন্য প্রস্তত ছিল না। বাংলাদেশ সরকার সীমিত সামর্থ নিয়ে মোকাবেলা করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এখনো পর্যন্ত করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশে মৃত্যুর হার ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে কম এবং ইউরোপ-আমেরিকার চেয়ে অনেক কম। সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে না পারলে বাংলাদেশে মৃত্যুর হার ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে অন্তত বেশি হতো।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস মহামারীর এ পরিস্থিতিতে সমগ্র পৃথিবীর সবগুলো রাষ্ট্র পর্যুদস্ত। বলা হচ্ছে, চায়না খুব ভালোভাবে এটাকে মোকাবেলা করেছে। কিন্তু প্রথম দিকে তারাও এই ভাইরাসে অস্তিত্ব অস্বীকার করেছিল। যে ডাক্তার এই ভাইরাসের সন্ধান দিয়েছিলেন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মিসাইল-এন্টিমিসাইল কোনটিই কাজ করছে না। তাদের সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তি কোনোটাই কাজে লাগছে না, ইউরোপের দেশগুলোতে মৃত্যুর মিছিল হয়েছে। 

হাছান মাহমুদ বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হবার পর অনেকেই শঙ্কা-আশঙ্কার কথা বলেছিলেন। অনেক ধরনের বিশেষজ্ঞ নানা ধরনের মত দিয়েছিলেন। কিন্তু অনেকের ধারণা ও মতামত ভুল প্রমাণিত হয়ে আজকে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির সাড়ে তিনমাসে বাংলাদেশে আল্লাহর রহমতে একজন মানুষও না খেয়ে মৃত্যুবরণ করেনি।

তিনি বলেন, ‘অনেকে আশা করেনি এ ধরণের সাহায্য সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হবে। কিন্তু সরকার মোবাইল ফোনে মানুষের কাছে টাকা পৌঁছে দিয়েছে। মসজিদের ইমামদের কাছে টাকা পৌঁছে দিয়েছে। প্রায় ৭ কোটি মানুষ সরাসরিভাবে সরকারের সহায়তা পেয়েছে। আমাদের দল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও ১ কোটি ২৫ লাখ মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছানো হয়েছে। মানুষের জন্য ত্রাণ তৎপরতা করতে গিয়ে দলের অনেক নেতা ও মন্ত্রী-এমপি আক্রান্ত হয়েছেন। কেন্দ্রীয় কমিটির তিন জন নেতা মৃত্যুবরণ করেছেন।’

ড. হাছান বলেন, ‘করোনাভাইরাসের শুরুতে চট্টগ্রামে চিকিৎসা ক্ষেত্রে নানা সমস্যা ছিল। আমি তিনবার এসে এখানে সমন্বয় মিটিং করেছি। চট্টগ্রামের প্রশাসন ও সমস্ত মন্ত্রী এমপিরাও ছিলেন। পরিস্থিতি দু’মাস আগে যা ছিল তার চেয়ে এখন অনেক ভালো হয়েছে। সাংবাদিকদের জন্য ইউএসটিসি’র বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড-১৯ জনিত পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের সহায়তা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করলে তিনি আমাকে উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রথমে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে ২ কোটি ৩১ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলাম। এরপর তথ্য মন্ত্রণালয়ের অব্যয়িত অর্থ থেকে আরো ২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।’

মোট ৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সাথে দফায় দফায় আলোচনা করে কারা সহায়তা পাবেন তারা তা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সাংবাদিক ইউনিয়নগুলোই তালিকা করেছেন। যারা ইউনিয়নের বাইরে আছেন তাদের জন্য ডিসির সুপারিশ নিয়ে অন্তর্ভুক্তির অপশন রাখা হয়েছে। প্রথম দফায় ১ হাজার ৫শ’ সাংবাদিককে এই সহায়তার আওতায় আনা হয়েছে। সেখানে চট্টগ্রাম থেকে ২৫০ জন সাংবাদিক সহায়তা পাচ্ছেন। এবারে যারা বাদ যাবেন, তারা পরবর্তিতে পাবেন। 

চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক ম. শামসুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে’র সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, বিএফইউজে’র যুগ্ম মহাসচিব মহসিন কাজী প্রমুখ।

মেডিভয়েসের জনপ্রিয় ভিডিও কন্টেন্টগুলো দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন MedivoiceBD ইউটিউব চ্যানেল। আপনার মতামত/লেখা পাঠান [email protected] এ।
  ঘটনা প্রবাহ : করোনাভাইরাস
  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
করোনা ও বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা

এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক