ডেঙ্গু প্রতিরোধে শ্রীলঙ্কা মডেল অনুসরণ করছে সরকার

মেডিভয়েস রিপোর্ট: দেশব্যাপী ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শ্রীলঙ্কা মডেল অনুসরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও কীট ক্রয়সহ সার্বিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় আধুনিকায়নের জন্য পরিচালন বাজেট থেকে বরাদ্দের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক জরুরি আলোচনা সভায় এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নুরজাহান বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় চিকিৎসক, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও অন্যান্য অংশীজনরা অংশ নেন।
সভায় বলা হয়, বর্তমান ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে মৃত্যুর ঝুঁকিও। তাই সময়ক্ষেপণ না করে একটি সমন্বিত ও বাস্তবভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা এখন সময়ের দাবি।
সভায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রশিক্ষণ ও সচেতনতামূলক প্রচারণা জোরদার করা হবে জানিয়ে বলা হয়, ডেঙ্গু শনাক্তকরণ, চিকিৎসা ও রোগী ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশের সকল সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। একইসঙ্গে স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীন তৃণমূল কমিটিগুলোকে পুনরায় সক্রিয় করে ঘরে ঘরে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হবে।
এছাড়া ধর্মীয় নেতা, বিএনসিসি, স্কাউট, এনজিও, যুব সমাজ ও স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে গঠিত টিম পাড়া-মহল্লায় গিয়ে জনগণকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে অবহিত করবে। পাশাপাশি দেশের মসজিদগুলোতে ইমামদের মাধ্যমে প্রতি জুমার খুতবার আগে ডেঙ্গু বিষয়ে সচেতনতামূলক বার্তা প্রচারের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করা হবে।
সভায় আরও বলা হয়, মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ), পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এবং এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর আওতাধীন সংস্থাগুলোকে ডেঙ্গু বিষয়ক সচেতনতামূলক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করতে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেওয়া হবে।
এছাড়াও নির্মাণাধীন ভবন, পরিত্যক্ত জমি, ছাদকৃষি, জলাবদ্ধতা ও অন্যান্য ডেঙ্গু প্রজননক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একইসঙ্গে, মশা নিধনে স্থানীয়ভাবে কীটনাশক ছিটানো ও নিয়মিত মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিকে, স্থানীয় সরকার বিভাগে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোর মালিকদের বিরুদ্ধে জরিমানা ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। ইউনিয়ন পর্যায়েও ডেঙ্গু প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়েছে, যারা স্থানীয়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও ব্যবস্থা গ্রহণে কাজ করবে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শ্রীলঙ্কার সফল মডেল অনুসরণ করে পরিকল্পিতভাবে এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা গেলে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
টিআই/এনএআর/