ডাক্তার পরিচয়ে রোগী দেখেন গৌরনদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারীরা

মেডিডভয়েসে রিপোর্ট: বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) বিদ্যমান আইন অনুযায়ী এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া কেউ নামের আগে ডাক্তার শব্দ লিখতে পারবে না। কিন্তু আইন উপেক্ষা করেই ডাক্তার পরিচয়ে দেদারসে রোগী দেখে যাচ্ছেন বরিশালের গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসাররা (স্যাকমো)।
জানা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে সাব সেন্টার থেকে নিয়োগপ্রাপ্তসহ মোট তিনজন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রয়েছেন। এর মধ্যে মো. জাহিদুল ইসলাম এবং কামাল হোসেন নিজেদের ডাক্তার হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন।
ইতিমধ্যে মেডিভয়েসের কাছে বেশ কিছু প্রেসক্রিপশনের তথ্য এসেছে। যেখানে জাহিদুল ও কামাল নিজেদের ডাক্তার হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। এসব প্রেসক্রিপশনের মধ্যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির জরুরি বিভাগের টিকিটও রয়েছে।
স্যাকমোদের এমন কাজে চিকিৎসকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে একাধিকবার মৌখিকভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে (ইউএইচএফপিও) জানালেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির একাধিক চিকিৎসকের সাথে কথা হয় মেডিভয়েসের। তারা জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্যাকমোরা নিয়ম বহির্ভূতভাবে নামের আগে ডাক্তার লিখে দেদারসে রোগী দেখে যাচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা তো দূরে থাক, ন্যূনতম শোকজও করা হয়নি।
নিজেদের নামের আগে ডাক্তার লেখার অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করেছেন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মো. জাহিদুল ইসলাম। মেডিভয়েসকে তিনি বলেন, আমরা ডাক্তার লিখলেও নিজেদের যতটুকু সীমাবদ্ধতা রয়েছে তা বজায় রেখে চলার চেষ্টা করি। আমাদের একটা মামলা দীর্ঘদিন ধরে চলমান আছে। আমাদের সিদ্ধান্ত আছে সেই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এমনটি করা যাবে।
যদিও স্যাকমোরা ডাক্তার লিখতে পারবেন, এমন কোনো নির্দেশনা নেই বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মুনিরুজ্জামান।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে মেডিভয়েসকে তিনি বলেন, এমন অভিযোগ আমার নজরে এসেছে। আমি তাদের সতর্ক করে দিয়েছি। নির্দেশনাও দিয়েছি, পরবর্তীতে এমন হলে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, স্যাকমোদের ডাক্তার হিসেবে পরিচয় দেওয়ার কোনো ধরনের নির্দেশনা নেই। বরং সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা আছে, এমবিবিএস-বিডিএস ডিগ্রিধারী ছাড়া কেউ নামের আগে ডাক্তার লিখতে পারবে না।
এ বিষয়ে আরেক অভিযুক্ত কামাল হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এনএএন/এমইউ