
ডা. তানিয়া ইসলাম
সহকারী অধ্যাপক, শিশু বিভাগ, শিশু মাতৃস্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট, ঢাকা।
০৭ মার্চ, ২০২৩ ০৩:০৯ পিএম
চিকেন পক্স থেকে সুরক্ষায় ভ্যাকসিন জরুরি

শীত শেষে এলো বসন্ত। চারদিকে বিভিন্ন ফুলের সমারোহ। এ সুন্দর সমারোহের মাঝে শিশুদের চিকেন পক্স আতঙ্কে রয়েছে অনেক অভিভাবক। তাদেরকে সচেতন করার জন্যই আজকের লিখা।
চিকেন পক্স একটি ছোঁয়াচে রোগ। এ রোগ বছরের যেকোনো সময়ই হতে পারে। তবে বসন্তকালে এর প্রাদুর্ভাব বেশি। পাঁচ থেকে নয় বছরের শিশুরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত শিশুর খুব কাছে সংস্পর্শে গেলে, ছোট শিশু এবং বয়স্কদেরও ভাইরাসজনিত এ রোগটি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই চিকেন পক্সের প্রাদুর্ভাব শুরুর আগে শিশুকে ভ্যাকসিন দিয়ে সুরক্ষিত রাখতে হবে।
রোগটি যেভাবে ছড়ায়
পরিবারের কোন সদস্য আক্রান্ত হলে, অন্যদের হতে পারে, স্কুলে কোন শিশু আক্রান্ত হলে, অন্য শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। অর্থাৎ যেহেতু এটি ভাইরাসজনিত রোগ, তাই আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে গেলে, যে কেউ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
উপসর্গ
এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার দুই দিন পর উপসর্গ দেখা দেয়, তাই প্রথমে বোঝা যায় না। সাধারণত চিকেন পক্সের সঙ্গে জ্বর থাকে। শরীরে র্যাশ থাকে এবং সেগুলো ফোসকার মতো পড়ে। সাধারণত এ র্যাশ বুকে-পিঠে দেখা যায়, তবে সারা শরীরেই উঠতে পারে। এ ছাড়া হালকা সর্দি জ্বর বা খারাপ লাগা কাজ করতে পারে। শিশুরা খেতে পারে না এবং মেজা খিটখিটে হয়ে যায়। ফোসকার কারণে ব্যথা করে এবং চুলকায়। এটি শিশুদের জন্য বেশ কষ্টদায়ক।
পক্সের দাগ দূর করতে করণীয়
অনেক সময় চিকেন পক্সের র্যাশগুলোর দাগ শরীরে থেকে যায়। মুখে যদি দাগ থেকে যায়, এটি আমাদের সৌন্দর্যহানির একটা কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে এ দাগ এমনিতেই চলে যাবে। কারো দাগ অনেক বেশি হলে, তখন এন্টিভাইরাস ক্রিম প্রয়োজন হয়।
শিশুদের রক্ষায় ভ্যাকসিনের গুরুত্ব
এ রোগটি হলে অনেকদিন ধরে আক্রান্ত শিক্ষার্থীকে স্কুল কামাই দিতে হয়। এতে পড়াশোনার ক্ষতি হয়। শরীরে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে। এটি থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হলো প্রতিরোধ করতে হবে। এ জন্য আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা যাবে না। এ ছাড়া সুরক্ষার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হচ্ছে শিশুদেরকে ভ্যাকসিন দেওয়া। এ ভ্যাকসিন আমাদের দেশে আগেও পাওয়া যেতে, মাঝখানে কিছু সময় এটি পাওয়া যায়নি। এখন আবার সব জায়গায় অহরহ পাওয়া যাচ্ছে।
ভ্যাকসিন দেওয়া নিয়ম ও স্থান
সাধারণত এক বছরের বেশি বয়সি শিশুদের ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে। দুটি ডোজ দিতে হয়। একটি ডোজ দেওয়ার ছয় সপ্তাহ পর আরেকটি দিতে হয়। যে কেউ চাইলে, তার শিশুকে চিকেন পক্সের ভ্যাকসিন দিয়ে সুরক্ষিত করতে পারেন। খুব সহজে একটি ভ্যাকসিন দিয়ে শিশুকে এ ছোঁয়াচে রোগ থেকে নিরাপদ রাখুন।
ভ্যাকসিন অবশ্যই হাসপাতাল, ক্লিনিক বা শিশু বিশেষজ্ঞের চেম্বারে দিবেন। অর্থাৎ নিরাপদ জায়গায় থেকে ভ্যাকসিন দিতে হবে। প্রাদুর্ভাব শুরুর আগে শিশুকে ভ্যাকসিন দিয়ে সুরক্ষিত রাখুন।
এএইচ
-
০৭ মার্চ, ২০২৩
-
২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩