মেডিকেল উচ্চশিক্ষা নিয়ে অভিভাবকদের ভাবনা
মেডিভয়েস রিপোর্ট: উচ্চশিক্ষা বিস্তারে রেসিডেন্সিতে আসন বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন নবীন চিকিৎসকদের অভিভাবকেরা। তারা বলেছেন, স্বাস্থ্যসেবার গুণগত মান নিশ্চিতে উচ্চশিক্ষা বিস্তার তথা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।
শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন কেন্দ্রে রেসিডেন্সি ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা এমন মন্তব্য করেছেন।
তারা বলেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরিতে নানা অসুবিধাও রয়েছে। মেডিকেলে উচ্চশিক্ষায় নেই পর্যাপ্ত ভাতা। এতে কেউ কেউ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। স্বাস্থ্যখাতের এসব ঘাটতি পূরণে নানা উদ্যোগের পরামর্শ দেন তারা।
রাজধানীর মহাখালীতে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন্স (বিসিপিএস) কেন্দ্রে অংশ নেওয়া এক পরীক্ষার্থীর অভিভাবক বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাবেক জুনিয়র কমিশন অফিসার মো. আব্দুর রহমান মেডিভয়েসকে বলেন, মেডিকেল উচ্চশিক্ষায় আরও সিট বাড়ানো দরকার। এমডি, এমএস আর এফসিপিএসে সিট বৃদ্ধি করা জরুরি। দেশে চিকিৎসক (বিশেষজ্ঞ) ঘাটতি রয়েছে। সেইসঙ্গে চিকিৎসকদের সুযোগ-সুবিধা আরও বাড়ানো দরকার। বিসিএস ক্যাডার চিকিৎসকদেরও সুযোগ-সুবিধায় কমতি আছে। এমনিতেই চিকিৎসক সংকট। যদিও করোনার সময় চিকিৎসক নিয়োগ হয়েছিল, তারপরও জনসাধারণের তুলনায় চিকিৎসক সংখ্যা অনেক কম। চিকিৎসকরা চাকরি পাচ্ছেন না, পাশাপাশি তাদের মূল্যায়নও অনেক কম। সরকারের উচিত চিকিৎসকদের আরও মূল্যায়ন করা।
দেশে মেডিকেল কলেজের সংখ্যা আরও বাড়ানোর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, তা না হলে চিকিৎসক সংখ্যা বাড়বে কিভাবে?
সাবেক এই নৌ কর্মকর্তা বলেন, সরকার চাইলেই অনেক কিছু করতে পারে। দেশের অনেক জায়গায় উন্নতি হচ্ছে, এই খাতেরও উন্নতি করা উচিত। স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দও বাড়াতে হবে। মানুষের কাছে তার জীবনটাই হলো আসল জিনিস। জীবন রক্ষার্থে হলেও স্বাস্থ্যখাতে বেশি ব্যয় করা উচিত।
এ প্রসঙ্গে রাজধানীর উত্তরা লিডস কলেজের সাবেক পরিচালক (অ্যাকাডেমি) সুলতানা বিলকিস মেডিভয়েসকে বলেন, করোনার সময়েও আল্লাহর কাছে সারাদিন-রাত পড়ে থাকতাম। প্রতিটি সন্তান অনেক কষ্ট করে এতদূর এসেছে।
তিনি আরও বলেন, দায়িত্বশীলদের কাছে আমার আবেদন, স্বাস্থ্যখাতকে সহজ করে দেন। বিএসএমএমইউর রেসিডেন্সিতে পরীক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় সাড়ে নয় হাজার। আর সিটের সংখ্যা দেড় হাজারেরও কম। আমাদের সন্তানরা যদি এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ না পায়, তাহলে দেশকে কিছু দিবে কিভাবে? নেই কর্মসংস্থান। অনারারি চিকিৎসকদের দেওয়া হয় না বেতন। তারা নিজেদেরকে অনাহারী বলে। সুতরাং এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সমাজের সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
দেশের অনেক সম্পদ পড়ে আছে মন্তব্য তিনি আরও বলেন, এর মধ্যে একটা কলেজ করা হলে সেখান থেকে কিছু চিকিৎসক বের হবে। বাংলাদেশে কত কোটি লোক? এতো কম সংখ্যক চিকিৎসক বিশেষজ্ঞ হওয়ার সুযোগ পেলে চিকিৎসা পাওয়া সম্ভব? রোগীদের লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। রোগী দেখার পর চিকিৎসক ও রোগী উভয়ই ক্লান্ত হয়ে যান। স্বাস্থ্যখাতে দুটি জিনিস দরকার, তাহলো- কর্মসংস্থান ও চিকিৎসক।
অভিভাবকরা আরও বলেন, দেশে বেড়ে চলছে জনসংখ্যার হার। সেই সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে নানামুখী চাপ। এর অন্যতম অংশ হলো বিশাল জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। শহুরে জীবনে বিশেষায়িত সেবা সহজলভ্য হলেও গ্রামে সঠিক চিকিৎসা পাওয়াই দুঃসাধ্য।
-
১১ ডিসেম্বর, ২০২২
-
০৬ মার্চ, ২০২২