স্মরণকালের সবচেয়ে খারাপ সংকটে বিশ্ব স্বাস্থ্য তহবিল: গেব্রিয়েসুস

মেডিভয়েস রিপোর্ট: দাতাদের সহায়তা হ্রাস এবং তহবিল কাটছাঁটের মুখে স্বাস্থ্যখাত মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস। বৃহস্পতিবার (১ মে) জেনেভায় সংস্থাটির সদর দপ্তরে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
কানাডাভিত্তিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।
তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস বলেন, ‘আমরা স্মরণকালের সবচেয়ে বড় বৈশ্বিক স্বাস্থ্য অর্থায়ন সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, কারণ বিভিন্ন দেশ থেকে অনুদান হ্রাস পেয়েছে।
এই সংকটের কারণ হিসেবে তিনি ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়া এবং অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোর উন্নয়ন সহায়তা কমিয়ে দেওয়াকে উল্লেখ করেছেন। এর ফলে সংস্থাটির বাজেটে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৭২ হাজার কোটি টাকা) ঘাটতি দেখা দিয়েছে, যা সংস্থার কার্যক্রমে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
এটি অবশ্যই খুবই কষ্টদায়ক উল্লেখ করে তেদ্রোস বলেন, এই বাজেট হ্রাস সরাসরি বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর প্রভাব ফেলবে, বিশেষ করে দুর্বল দেশগুলোতে।
যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়া চাপ সৃষ্টি করলেও আরও গভীর কাঠামোগত সমস্যা রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন সংস্থাটির মহাপরিচালক। বলেন, বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের বাজেটের ৮০ শতাংশ মাত্র কয়েকটি দেশের স্বেচ্ছা অনুদানের ওপর নির্ভর করে। এই নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে এসে সংস্থাটিকে আরও বৈচিত্র্যপূর্ণ অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে হবে।
তেদ্রোস জানান, তিনি এখনো মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন এবং তাদের তথ্য সরবরাহ করছেন, যদিও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার সরাসরি কোনো যোগাযোগ হয়নি।
মূলত ডব্লিউএইচওর বাজেটের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই দিত যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র সংস্থাটির করোনা মহামারী এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংকট পরিচালনা নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়। এর ফলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের আর্থিক পরিকল্পনা পুনর্বিন্যাস করেছে এবং ২০২৬-২০২৭ সাল পর্যন্ত বাজেটে ২১ শতাংশ কাটছাঁটের প্রস্তাব দিয়েছে।
রয়টার্সের হাতে আসা একটি অভ্যন্তরীণ নথি থেকে জানা গেছে, ডব্লিউএইচও তাদের জেনেভা সদর দপ্তরসহ আঞ্চলিক ও দেশীয় অফিসগুলোর বাজেট কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ধনী দেশগুলোর কিছু অফিস সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। সংস্থাটির বাজেট ৫.৩ বিলিয়ন ডলার থেকে কমিয়ে ৪.২ বিলিয়ন ডলারে আনা হচ্ছে এবং এর সঙ্গে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনাও রয়েছে। এ ছাড়া এই বছরেই এর প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলারের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সংস্থাটি সতর্ক করেছে, নতুন অর্থায়ন না এলে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।
সংস্থাটির ব্যবসা পরিচালনা বিষয়ক সহকারী মহাপরিচালক রাউল থমাস বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরবর্তী দুই বছরের বেতন বাজেটের প্রায় ২৫ শতাংশ এখনও অনুদানবিহীন রয়ে গেছে। তবে কত কর্মী ছাঁটাই হবে, তা নির্ভর করছে কর্মী সংখ্যা ও অবস্থানের ওপর।
এনএআর/
-
২৮ এপ্রিল, ২০২৫
-
১৯ মার্চ, ২০২৫
-
০৬ মার্চ, ২০২৫
-
১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
-
০৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
-
০৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
-
০৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫