কলম্বিয়ায় পীতজ্বরের প্রাদুর্ভাব, জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা জারি

মেডিভয়েস রিপোর্ট: কলম্বিয়ায় পীতজ্বর সংক্রমণের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। গত বছর থেকে এ পর্যন্ত ৩৪ জন এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ অবস্থায় বুধবার (১৬ এপ্রিল) দেশজুড়ে জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা ঘোষণা করেছে কলম্বিয়া সরকার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পীতজ্বর একটি ভাইরাসজনিত রোগ। এডিস এবং হেমাগোগাস মশার কামড়ে এই রোগের জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে। এই রোগের মৃত্যুহার প্রায় ৫০ শতাংশ।
দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি অবস্থার পাশাপাশি অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। একই সাথে নাগরিকদের টিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পেত্রো। তিনি সতর্ক করে বলেন, যারা টিকা নেননি, তারা ইস্টারে উচ্চঝুঁকিপূর্ণ এলাকায়, বিশেষ করে কফি চাষের অঞ্চলে ভ্রমণ এড়িয়ে চলুন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী গুয়ের্মো হারামিল্লো জানিয়েছেন, গত বছর থেকে পীতজ্বরের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। তখন থেকে অন্তত ৭৪ জন মানুষ আক্রান্ত এবং ৩৪ জনের মৃত্যুর নিশ্চিত খবর রয়েছে সরকারের কাছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত দেশের মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলীয় তোলিমা এলাকায় পীতজ্বর সংক্রমণের পরিস্থিতি বেশি আশঙ্কাজনক। সেখানে এখন পর্যন্ত ২২টি ঘটনা শনাক্ত হয়েছে।
উল্লেখ্য, পীতজ্বর মূলত আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলগুলোতে বেশি দেখা যায়। এই রোগে লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ফলে জন্ডিস দেখা দেয়—যার কারণে ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে যায়, এই কারণেই একে পীতজ্বর বা হলুদ জ্বর বলা হয়। কোনও অঞ্চলে পীতজ্বর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা যেমন থাকে, তেমনই রোগটি ক্ষেত্রবিশেষে প্রাণঘাতিও হতে পারে। অতীতে দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে এর প্রাদুর্ভাব ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল।
এ রোগে আক্রান্ত হলে সাধারণত হঠাৎ জ্বর, মাথাব্যথা, পিঠে ব্যথা, পেশীতে ব্যথা (বিশেষ করে পিঠ ও হাঁটুতে), বমি ও দুর্বলতা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, ক্ষুধামান্দ্য প্রভৃতি লক্ষণ দেখা যায়। অবস্থা গুরুতর হলে জ্বর আবার ফিরে আসে। একই সাথে জন্ডিস, পেটব্যথা ও বমি, মুখ, নাক বা চোখ থেকে রক্তক্ষরণ এবং কিডনি বা লিভার বিকল হতে পারে।
এসআইএস/এনএআর/