‘জীবন রক্ষায় কীটনাশকসহ সকল বিষক্রিয়ার গবেষণা জরুরি’
মেডিভয়েস রিপোর্ট: জীবন রক্ষায় কীটনাশকসহ সকল বিষক্রিয়ার অধিক গবেষণার জরুরি বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
আজ রোববার (২৮ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ডি’ ব্লকে ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের শ্রেণিকক্ষে ‘পেস্টিসাইড পয়জনিং: ম্যানেজমেন্ট পিটফলস্ এন্ড আপডেট’ শীর্ষক এক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের বিষক্রিয়ায় মৃত্যুর হার অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। শুধুমাত্র ধানে কীটনাশকের বিষক্রিয়ায় নয়, খাদ্যে অনেক ধরণের বিষক্রিয়া ঘটে থাকে। এর কারণে খাদ্যে ভেজাল মেশানো হয়। খাদ্যে বিষক্রিয়া এবং আর্সেনিক দূষণ, পোল্ট্রি শিল্প বা গোবাদি পশুতে যেভাবে বিভিন্ন ধরণের অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার হচ্ছে, তাতেও দেশের মানুষের স্বাস্থ্যের উপর অনেক প্রভাব পড়ছে। দেশের মানুষকে রক্ষার জন্য কীটনাশকের বিষক্রিয়াসহ অন্যান্য বিষের উপর গবেষণা হওয়া জরুরি।’
সেমিনারে বলা হয়, বাংলাদেশে প্রতি মাসে প্রায় ৭.৫% রোগী বিভিন্ন ধরনের বিষক্রিয়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। যার মধ্যে প্রায় ৫৮.৮% রোগী কীটনাশকজনিত বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত এবং ৫.৪% রোগী মৃত্যুবরণ করেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এসব বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হন এবং প্রাণ হারান দেশের যুবসমাজ। যার ফলশ্রুতিতে রোগীর পরিবার এবং গোটা দেশকে আর্থিক ক্ষতির সম্মখীন হতে হয়। এই সমস্যা মোকাবেলায় অযাচিত কীটনাশক ব্যবহার এবং বিক্রয় পর্যবেক্ষণ করার সাথে সাথে বিষাক্ত কীটনাশকের উপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার ব্যাপারে অনুষ্ঠানে বিজ্ঞ আমন্ত্রিত অতিথিগণ সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সায়েন্টিফিক সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিএসএমএমইউর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ আরাফাত। অনুষ্ঠানটিতে সঞ্চালনা করেন বিভাগটির সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফজলে রাব্বী চৌধুরী।
এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটি অফ এডিনবার্গ এর সেন্টার ফর পেস্টিসাইড সুইসাইড প্রিভেনশন বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ডা. মাইকেল এডেলস্টন।
তিনি বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক বিষক্রিয়ার ব্যাপকতা এবং মানবদেহে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে আলোচনা করেন। তাঁর আলোচনায় প্রধানত উঠে আসে, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সহজলভ্যতার কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে কীটনাশক ব্যবহার করে আত্মহত্যার প্রবণতার হার অনেক বেশি। এটি অন্যান্য পদ্ধতির তুলনায় অনেক বেশি প্রাণঘাতী।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএসএমএমইউর ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ।
এ ছাড়াও সেমিনারে বক্তব্য রাখেন বিএসএমএমইউর ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান, ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. শাহা আলম। অনুষ্ঠানে মেডিসিন অনুষদভুক্ত বিভিন্ন বিভাগের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক ও রেসিডেন্টরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বিএসএমএমইউর ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের আধুনিক শ্রেণিকক্ষ উদ্বোধন করেন।