‘তীব্র প্রতিবাদের ফলে ডা. বুলবুলের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার’
মেডিভয়েস রিপোর্ট: রাস্তায় দাঁড়িয়ে তীব্র প্রতিবাদের ফলে ডেন্টাল সার্জন ডা. আহমেদ মাহী বুলবুলের চার হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে মনে করেন ঢাকা ডেন্টালের অধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির মহাসচিব অধ্যাপক ডা. হুমায়ুন কবির বুলবুল।
গত ৩০ মার্চ রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ একাডেমি অব ডেন্টিস্ট্রি ইন্টারন্যাশনালের (বিএডিআই) এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
ঢাকা ডেন্টালের অধ্যক্ষ বলেন, ‘আমার এক সময় মনে হতো, ডেন্টিস্ট্রির পেশাজীবীরা স্বাস্থ্যগত দিক থেকে ভালো এবং তাদের মৃত্যু হার কম। এ কারণে আমি নিজে নিজে একটু আনন্দিত বোধ করতাম। কিন্তু সম্প্রতি ডেন্টিস্ট্রিতে একটা মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়েছে। হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে।’
এ সময় মিরপুরে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে নিহত ডা. আহমেদ মাহী বুলবুলের স্মৃতিচারণ করে তিনি আরও বলেন, ‘গত ২৭ মার্চ আমরা একজন তরুণ সংগঠককে হারালাম। সে ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছে। আমরা এ নিয়ে রাস্তায় আন্দোলন করেছি। পুলিশ ও গণমাধ্যম এটাকে যেভাবে চিত্রিত করতে চেয়েছে, তার প্রতিবাদ করেছি। এটা এতোই কার্যকরী ছিল যে, এর ফলশ্রুতিতে চারজন হত্যাকারী গ্রেপ্তার হয়েছে। রক্তমাখা ছুরি জব্দ হয়েছে। পাশাপাশি বুলবুলের মোবাইল ফোনও জব্দ হয়েছে। এটা স্বস্তির একটি জায়গা যে, হত্যাকারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এর আগে অধ্যাপক ডা. আল মামুন ফেরদৌসিসহ করোনায় অসংখ্য চিকিৎসককে আমরা হারালাম। যারা এসব অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হতেন, কথা বলতেন। কত মানুষকে আমরা হারালাম। এ যেন মৃত্যুর মিছিল। এ পরিস্থিতিতে সবার আরেকটু সচেতন হওয়ার প্রয়োজন।’
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. আবুল কাশেমসহ সংশ্লিষ্ট পেশার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
গত রোববার ভোরে রাজধানীর মিরপুরের কাজীপাড়ায় মেট্রোরেলের নির্মাণাধীন স্টেশনের নিচে ছুরিকাঘাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে খুন হন দন্তচিকিৎসক মাহী বুলবুল। ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। সকাল আটটার দিকে মিরপুরের কাজীপাড়া থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। একই সঙ্গে তাঁর কাছ থেকে একটি মুঠোফোন খোয়া গেলেও সঙ্গে থাকা ১২ হাজার টাকা, অন্য একটি মুঠোফোন ও আঙুলে থাকা সোনার আংটি উদ্ধার করে তারা।
ডা. বুলবুলের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন। চাকরিকালীন ১৯৯৯ সালে মারা যান। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন বুলবুল। ১৯৯৭ সালে রংপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকার মগবাজারে ইউডিসিতে ভর্তি হন। সেখান থেকে বিডিএস পড়াশোনা শেষ করে প্র্যাকটিস শুরু করেন।
দিনাজপুর জেলায় বিয়ে করেছিলেন ডা. বুলবুল। স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ঢাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন তিনি। দেড় বছর বয়সী ছেলে ও সাত বছরের মেয়ে রয়েছে নিহত বুলবুলের।