০১ অগাস্ট, ২০২১ ০১:৩৭ পিএম

ঘরেবাইরে নারী চিকিৎসকদের সংগ্রাম নিয়ে নাটক  

ঘরেবাইরে নারী চিকিৎসকদের সংগ্রাম নিয়ে নাটক  
নাটকের বিশেষ একটি দৃশ্য

একজন নারী চিকিৎসক কীভাবে তার পেশা ও সংসার জীবনের টানাপড়েনের মধ্যে পড়েন তা নিয়ে নির্মিত হয়েছে একটি ক্লাসিক্যাল নাটক। নাটকটি এবারের ঈদে বেসরকারি টিভি চ্যানেল আরটিভিতে সম্প্রচার করা হয়েছে। শনিবার রাতে নাটকটি ইউটিউবেও প্রকাশ করা হয়েছে।

নাটকের নাম ‘বিয়িং ওম্যান’। মুনতাহা বৃত্তার রচনায় এটি পরিচালনা করেছেন হাসান রেজাউল।

রাজধানীর উত্তরার শুটিং বাড়িতে হয়েছে এর দৃশ্যধারণ। নাটকে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা। 

নাটকে দেখানো হয়, মিথিলা একজন সফল কার্ডিওলজিস্ট। হাসপাতালে তার ব্যাপক সুনাম রয়েছে। রোগীদের তিনি অপারেশনের টাকা মওকুফ করে দেন। কমিশন বাণিজ্য তার একদম পছন্দ নয়। ডায়াগনিস্ট থেকে তার জন্য ৪০ ভাগ কমিশনের অফার দৃঢ়ভাবে ফিরিয়ে দেন। তার মন পড়ে থাকে সাধারণ মানুষের জন্য। কিন্তু তার বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে বিভিন্ন সময় হাসপাতালে জরুরি সময়ে কর্তব্য পালন করতে বাধা দেয়। 
এক সময় তিনি একটি চিরকুট লিখে শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে আসেন। পরে তার স্বামী বিষয়টি বুঝতে পেরে তার চেম্বারে এসে রোগী সেজে দেখা করেন। 
এভাবেই  গল্প এগিয়ে যায়। 
মিথিলা তখন অন্তঃসত্ত্বা। তারপরও রোগীদের সুবিধার্থে তিনি হাসপাতালে ওই অবস্থায়ও চেম্বার করেন। একদিন মিথিলার অপারেশনে মারা যায় এক শিশু। হাসপাতালে তার স্বজনরা তাণ্ডব চালায়। মিথিলা নিজে সরাসরি এসে তাদের বুঝাতে গেলে তার ওপর হামলা হয়। 

তবে নাটকটির স্ক্রিপ্টে কিছুটা দূর্বলতা রয়েছে। গল্পে মেডিকেল টার্ম সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয়নি। কার্ডিওলজিস্ট ও কার্ডিয়াক সার্জনকে গুলিয়ে ফেলা হয়েছে। 

নাটকটি নিয়ে পরিচালক হাসান রেজাউল বলেন, ‘নাটকের গল্পটা ক্লাসিক্যাল। এটা মধ্যবিত্ত সংসারে প্রায়ই দেখা যায়। একজন নারী কীভাবে সংসার ও পেশার চাহিদা পূরণ করে চলেন, তা-ই উঠে এসেছে।’

নাটকে মিথিলার স্বামীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইরফান সাজ্জাদ। এছাড়াও মিলি বাশার ও আজম খান নাটকটিতে অভিনয় করেছেন। 

নাটকটি নিয়ে বিতর্ক

বিয়িং ওমেন নামের নাটকটি নিয়ে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দর্শকরা। বিশেষ করে মেডিকেলের ভুল টার্ম ব্যবহার না হলে নাটকটি আরও প্রশংসিত হতো বলে মন্তব্য চিকিৎসক সমাজের। 

নাটকটিতে মিথিলাকে কার্ডিওলজিস্ট হিসেবে দেখানো হয়েছে। আবার তিনি অপারেশন করছেন বলেও দেখানো হয়েছে। এদিকে প্রতিবেশী একজন প্রসব বেদনায় কাতর হলে তাকেও চিকিৎসা দেওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে যান মিথিলা। এখানে একজন কার্ডিওলজিস্ট আর গাইনোলজিস্টকে গুলিয়ে ফেলা হয়েছে। এ নিয়ে চিকিৎসকরা ফেসবুক ও ইউটিউবে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

এছাড়াও সাধারণ দর্শকরা সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, চিকিৎসার মতো একটি মহান পেশায় ব্যক্তিজীবনে নানাভাবে আলোচিত বা সমালোচিত কোনো অভিনেত্রীকে আনা ঠিক হয়নি। এখানে মেহজাবীন বা ক্লিন ইমেজের কেউ হলে ভালো হতো। 

ডা. আয়েশা হক নামের একজন ফেসবুকে মন্তব্য করেন, কার্ডিওলজিস্ট আর সার্জন এক না। 

নুসরাত জাহান জেসি নামের এক চিকিৎসক বলেন,  নন মেডিকেল হয়ে ভুল মেডিকেল টার্ম ব্যবহার হয়েছে ওই নাটকটিতে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা সব পেশার মানুষদের সম্পর্কে সম্যখ ধারণা দেয় না। তবে যে বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে তা সত্য ও প্রশংসাযোগ্য। আমি আশা করি যথাযথ টার্ম ব্যবহার করে এরকম আরও কাজ হবে।  

প্রবাল ঘোষ নামের একজন লেখেন, একটি দুর্ধর্ষ নাটক, এত সাহসী, এত বাস্তব জীবনের কথা, এককথায় একটি পরিপূর্ণ নাটক, বিষয়, পরিচালনা, অভিনয়, কলাকুশলীদের অসাধারণ কাজ সব মিলিয়ে খুব সুন্দর একটি নাটক, বেশ কয়েকবার দেখার মত নাটক। 

রেদওয়ানুল ইসলাম নামের একজন লেখেন, মিথিলাকে এইরকম একটা নাটকে মানায় না। অন্য কাউকে নিলে নাটকটা আরও সুন্দর হতো।

প্রিয়াঙ্কা সরকার নামের একজন লেখেন, এইসব নাটকে মিথিলাকে মানায় না। মেহজাবিন হলে ভালো হত। 

  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত