দেশে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত সন্দেহে একজনের মৃত্যু
মেডিভেয়েস রিপোর্ট: ভারতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া ভয়ংকর ছত্রাকজনিত রোগ ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তিন দিন আগে ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আজ মঙ্গলবার (২৫ মে) বারডেম জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, তিন দিন আগে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে একজন রোগীর মৃত্যু হয়। পরীক্ষা নিরীক্ষায় দেখা গেছে, ওই রোগী অন্যান্য রোগের পাশাপাশি মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত ছিলেন। ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত একজন রোগী এখনও বারডেম হাসপাতালে ভর্তি আছেন। শনাক্ত হওয়া ওপর রোগী অন্য হাসপাতালে চলে গেছেন।
রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক এম দেলোয়ার হোসেনের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে ৬৫ বছর বয়সী একজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এই রোগীর অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিস ছিল। তাঁর কিডনির সমস্যা ছিল। তিনি কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়েছিলেন। চিকিৎসার সময় বোঝা যায়নি যে, তিনি মিউকোরমাইকোসিসে আক্রান্ত ছিলেন। মৃত্যুর পর এটা জানা গেছে।
বারডেমে ভর্তি রোগীর বিষয়ে বলা হয়, অধ্যাপক এম দেলোয়ার হোসেনের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালের একটি কেবিনে ৫৫ বছর বয়সী অপর রোগীর চিকিৎসা চলছে। রোগীর বাড়ি সাতক্ষীরা জেলায়। প্রায় এক মাস আগে তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। সুস্থ হয়ে তিনি বাড়ি যান। কিন্তু আবার জ্বর দেখা দিলে তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন এবং সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁকে বারডেমে নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে ডা. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ভর্তি থাকা রোগীর পরিস্থিতি উদ্বেগজনক নয়। তাঁকে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। ওষুধের দাম অনেক বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার কর্মকর্তাদের সঙ্গে ওষুধের ব্যাপারে যোগাযোগ করা হয়েছে।’
‘রোগী চার-পাঁচ বছর ধরে ডায়বেটিসে ভুগছেন। এরপর তিনি কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। জ্বর ও কাশি কমে না যাওয়ায় চিকিৎসকেরা তাঁকে যক্ষ্মার ওষুধও দিয়েছেন। এখন দেখা যাচ্ছে, তিনি মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত,’ যোগ করেন রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের প্রধান।
প্রসঙ্গত, মিউকরমাইসিটিস ছত্রাক থেকে মিউকরমাইকোসিস হয়ে থাকে। এটি বাতাসের চেয়ে মাটিতে এবং শীত ও বসন্তকালের চেয়ে গ্রীষ্ম ও শরৎকালে বেশি দেখা যায়। বেশিরভাগ মানুষই প্রতিদিন এই আণুবীক্ষণিক ছত্রাকের স্পোরের সংস্পর্শে আসে। সুতরাং এই মিউকরমাইসিটিসের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা প্রায় অসম্ভব। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) তথ্য মতে এতে আক্রান্তদের মৃত্যুহার শতকরা ৫০ ভাগ।