রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য তালিকা কেমন হওয়া উচিত?
মেডিভয়েস রিপোর্ট: পবিত্র রমজান মাস। ডায়াবেটিস রোগীদের কপালে কিঞ্চিৎ চিন্তার ভাঁজ। অনেকেই ভাবেন, হয়তো রোজা রাখা যাবে না। সব দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলে ডায়াবেটিসের রোগীরা এ সময় কিছু নির্দিষ্ট নিয়মকানুন মেনে চলবেন। রমজানে স্বাভাবিকভাবেই পরিবর্তিত হবে ওষুধ বা ইনসুলিনের সময়সূচি ও মাত্রা। এ সময় ক্যালরি এবং ওষুধের মধ্যে অসামঞ্জস্য দেখা দিতে পারে। তাই রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ কমে বা বেড়ে যেতে পারে। এ জন্য রমজান মাসে রোজা রাখার জন্য ডায়াবেটিসের রোগীদের দরকার প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণ।
ভৌগোলিক অবস্থান ও মৌসুমভেদে পবিত্র রমজান মাসে রোজা থাকার সময়কাল ১৪ থেকে ২৩ ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে মানুষের জীবনযাত্রায় প্রভূত পরিবর্তন এসেছে। তাই নানা রকম ঝুঁকি বিবেচনা করে ডায়াবেটিসের রোগীকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের রোজা রাখার বিষয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এম কামরুজ্জামান মজুমদার। ডায়াবেটিস রোগীদের বিষয়ে তাঁর দেওয়া কয়েকটি পরামর্শের মধ্যে আজ থাকছে একটি বিষয়ের বর্ণনা।
প্রশ্ন: রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য তালিকা কেমন হওয়া উচিত?
ডা. এম কামরুজ্জামান মজুমদার: এখানে মূল বিষয় হচ্ছে রমজান মাসে এবং অন্য মাসে খাবার গ্রহণের ক্ষে্ত্রে পার্থক্য থাকলেও শরীরের চাহিদা একই। আমাদের খাবারে কিছু পরিবর্তন হয় সেক্ষেত্রে কিছু মোডিফিকেশন লাগবে। মূল বিষয়টা হচ্ছে ক্যালোরি। শরীরের ওজনের বিবেচনায় যে শক্তি দরকার হয় তা হচ্ছে ক্যালোরি। রমজানে ক্যালোরি রিকুয়্যারমেন্ট একই থাকে কিন্তু খাদ্যাভ্যাসটা পরিবর্তন হয়।
রমজানে কিছু জনপ্রিয় খাবর রয়েছে তা হচ্ছে, ভূনা করা ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি, মুড়ি ইত্যাদি। এর বাইরে ভাত, মাছ বা অন্যান্য খাবার তো আছেই। সেক্ষেত্রে রোজা রাখতে সক্ষম ডায়াবেটিসে আক্রান্ত এমন ৬০ থেকে ৭০ কেজি ওজনের একজন মানুষের খাবারের যে তালিকা হতে পারে তা হচ্ছে, তিনি এককাপ পরিমাণ ছোলা নিতে পারেন, তিনটি পেঁয়াজু (২৫ গ্রাম করে), তিনটি বেগুনি এবং সাথে দুই কাপ মুড়ি খেতে পারেন।
এর বাইরে মিষ্টি জাতীয় ফল বাদ দিয়ে তুলনা মূলক কম মিষ্টি জাতীয় ফলগুলো গ্রহণ করতে হবে। যেমন, সবুজ আপেল, নাশপাতি, কমড়ে খাওয়া যায় এমন ফল, বরোই, জাম্বুরা, আমলকী ইত্যাদি। এই ধরনের ফলগুলো নিতে পারে। এর বাইরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে হবে। এগুলো হলো ইফতারের খাবার।
এছাড়া ইফতার বাদে স্বাবাবিক যে খাবারগুলো সেখানে তিনি তিনটি রুটি খেতে পারেন, সাথে এক থেকে দুই টুকরা মাছ অথবা মাংস থাকতে পারে, এক কাপ ডাল এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে শাক-শবজি খেতে হবে। সেহরির ক্ষেত্রেও ঠিক একই রকম হবে। এক্ষেত্রে তিনি যদি ভাত খান তাহলে দুই থেকে তিন কাপ ভাত নিবে। এর বাইরে ইফতারি এবং সেহরির মাঝের সময়ে দুই ঘণ্টার ব্যবধানে এক থেকে দুইবার হালকা পরিমাণে নাস্তা গ্রহণ করা যেতে পারে।