০৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ০৭:১৩ পিএম

বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতির ৩ দিনব্যাপী বার্ষিক সম্মেলন শুরু

বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতির ৩ দিনব্যাপী বার্ষিক সম্মেলন শুরু
সম্মেলনের এবারের প্রতিপাদ্য ‘যত্নে রাখি চোখ, দৃষ্টি রাখি ভালো, নতুন দিনের দৃষ্টিদ্রদীপ, একান্নতেই জ্বালো’।

মেডিভয়েস রিপোর্ট: বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতির তিন দিনব্যাপী ৫১তম বার্ষিক জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বুধবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মিন্টু রোডস্থ শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে এ আয়োজন করে সংগঠনটি। সম্মেলনের এবারের প্রতিপাদ্য ‘যত্নে রাখি চোখ, দৃষ্টি রাখি ভালো, নতুন দিনের দৃষ্টিদ্রদীপ, একান্নতেই জ্বালো’।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান বিচার প্রতি ওবায়দুল হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভাইসন-চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হক, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, এশিয়া প্যাসিফিক একাডেমি অব অফথ্যালমোলজীর সভাপতি অধ্যাপক ডা. আভা হোসেন, বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতির মহাসচিব অধ্যাপক ডা. দীপক কুমার নাগ প্রমুখ।

প্রধান বিচারপতি ওয়ায়দুল হাসান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বাস্থ্যসেবা নীতির ফলে আজকে দেশের স্বাস্থ্যখাত বিকশিত হয়েছে। বিগত কয়েক বছরে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে। এটি সরকারের সুদুরপ্রসারি চিন্তা ভাবনার কারণেই সম্ভব হয়েছে। দেশের স্বাস্থ্যসেবার মান অনেক উন্নত হয়েছে। চক্ষু চিকিৎসার সেবার মান বিশ্বমানের হয়েছে। চক্ষু চিকিৎসা ও হৃদরোগের চিকিৎসাআন্তর্জাতিক মানের হওয়ায় বিদেশ নির্ভরতা কমেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের গ্রামীন জনপদের মানুষের মাঝে চোখের যত্নের বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে প্রশাসনিক ভাবে কাজ করতে হবে। প্রতি ১০টি চোখের ছানি অপারেশনের ১টি অন্তত বিনা পারিশ্রমিকে করতে হবে। মানুষদের মাঝে সচেতনতার পাশাপাশি দরিদ্র মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা করানোর আহ্বান চিকিৎসকদের প্রতি।’

ওয়ায়দুল হাসান বলেন, ‘রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ যাতে সহজে বুঝে সে বিষয়ে নজর দিতে হবে। তরুণ চিকিৎসকরা আন্তরিকতা ও সহমর্মিতার সাথে রোগীদের সেবা চিকিৎসা দিতে হবে। রোগীদের শুধুমাত্র পেশাদারিত্ব না, বরং পেশাদারিত্বের সাথে আবেগ দিয়ে চক্ষু রোগীদের সেবা প্রদান করলে বেশী কার্যকর হবে। কোন চিকিৎসক কোখনো রোগীর মৃত্যু চান না। কোন কারণে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে সেজন্য একজন চিকিৎসককে আটকিয়ে রাখলে আরও অন্য রোগীরা সেবা থেকে বঞ্চিত হবে, কষ্ট পাবে। ডাক্তারদের অবহেলার কারণে রোগীর মারা যাওয়ার মামলাগুলো সচেতনভাবে দেখতে বিচারককের প্রতি আহ্বান প্রদান বিচারপতি।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএসএমএমইউ ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘চিকিৎসকদের অপরাধ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত গ্রেফতার করা যাবে না। অপরাধ প্রমাণের জন্য একটি কমিটি গঠন করা যেতে পারে। যেখানে প্রশাসন, ম্যাজিস্ট্রেট ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের প্রতিনিধি থাকবে। চিকিৎসক কোন রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত কি না তা এই কমিটি তদন্ত করবে। তদন্ত ছাড়া চিকিৎসকদের গ্রেফতার করা হলে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়বে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের বিদ্যমান অঙ্গ প্রতিস্থাপন আইন সংশোধন করতে হবে। বিদ্যমান অঙ্গ প্রতিস্থাপন আইনের কিছু জটিলতায় চাইলেই অঙ্গদান করা সম্ভব যায় না। আইনি জটিলতার কারণে দেশের রোগীরা কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গ প্রতিস্থাপন করতে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপনে তিন লক্ষ টাকা সেটি পার্শবর্তী দেশে সেটি করতে ত্রিশ লক্ষ টাকার বেশি লাগে। দেশের চিকিৎসকরা এসব রেমিটেন্স ঠেকাতে পারবে যদি এই অঙ্গ প্রতিস্থাপন আইনে মানবিক ডোনেশনের ব্যবস্থা করা হয়। নারী চিকিৎসকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ডা. এ.কে.এম মুকতাদির।

মেডিভয়েসের জনপ্রিয় ভিডিও কন্টেন্টগুলো দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন MedivoiceBD ইউটিউব চ্যানেল। আপনার মতামত/লেখা পাঠান [email protected] এ।
  ঘটনা প্রবাহ : বাংলাদেশ চক্ষু চিকিৎসক সমিতি
  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত