১০ জানুয়ারী, ২০২৩ ০৩:৫০ পিএম

মেডিকেলে থাকছে না সিজিপিএ, ক্যারিঅন পুনর্বহাল

মেডিকেলে থাকছে না সিজিপিএ, ক্যারিঅন পুনর্বহাল
ফাইল ছবি

মেডিভয়েস রিপোর্ট: শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মেডিকেল কলেজে ক্যারিঅন পুনর্বহাল ও ‘সিজিপিএ’ পদ্ধতি বাতিল করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি)।

আজ মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) বিএমডিসিতে সকল অংশীজনদের সমন্বয়ে আয়োজিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিএমডিসির রেজিস্ট্রার ডা. মো. লিয়াকত হোসেন বিকেলে মেডিভয়েসকে এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি বলেন, ‘ক্যারিঅন ও সিজিপিএ ঘিরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও স্মারকলিপির পরিপ্রেক্ষিতে আজ আমরা একটি জরুরি সভায় বসেছিলাম। এতে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটো মিঞাসহ চিকিৎসা শিক্ষার কমপক্ষে ২৫ জন বরেণ্য ব্যক্তি। সেখানে সিজিপিএ পদ্ধতি ও ক্যারিঅন পুনর্বহাল রাখা না রাখা এবং শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়াগুলো আলোচনা হয়। এক পর্যায়ে সবাই সম্মত হন যে, এই জটিলতার অবসান জরুরি। এর ভিত্তিতেই আমরা শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়েছি। ৪/৫ দিনের মধ্যে সকল মেডিকেল কলেজে চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবহিত করা হবে।’

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মেডিকেল শিক্ষা সংশোধনের উদ্যোগ নেয় বিএমডিসি। এর অংশ হিসেবে ২০২১-২২ সেশন থেকে ক্যারিঅন পদ্ধতি বাতিলের পাশাপাশি সিজিপিএ পদ্ধতি চালুর সিদ্ধান্ত নেয় মেডিকেল শিক্ষার নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। তাঁদের দাবি, চিকিৎসা শিক্ষার সার্বিক ভালোর দিক বিবেচনা করে নতুন কারিকুলাম তৈরি করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বিএমডিসির রেজিস্ট্রার ডা. মো. লিয়াকত হোসেন মেডিভয়েসকে বলেন, শুধুমাত্র নতুন সেশনের শিক্ষার্থীরাই এ কারিকুলামের অধীনে পড়াশোনা করবে। নতুন কারিকুলামে যে নির্দেশনা দেওয়া আছে, সেটাই বাস্তবায়ন হবে।

তবে এতে মেডিকেল শিক্ষায় জটিলতা আরও বাড়ার যুক্তি দেখিয়ে শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছে শিক্ষার্থীরা। তারা দফায় দফায় বিএমডিসির সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। 

এরই ধারাবাহিকতায় গত ৮ জানুয়ারি রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ শেষে বিএমডিসিতে নিজেদের দাবি উপস্থাপন করে স্মারকলিপি জমা দেন শিক্ষার্থীরা। পরে সাত কর্মদিবসের মধ্যে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার প্রতিশ্রুতির আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করেন তারা।

তারা বলেন, কোনো কারণে কেউ অকৃতকার্য হলে, পরের ব্যাচের সঙ্গে আর যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবে না। তার এমবিবিএস কোর্স আরও প্রলম্বিত হবে। ব্যাচমেটরা ওয়ার্ডে যাবে, সেখানে রোগীর সঙ্গে কথোপকথনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করবে। তখন স্বাভাবিকভাবেই অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আরও বাড়বে।

জিপিএ পদ্ধতির অপ্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে তারা বলেন, সিজিপিএ’র সুবিধা পাবে হাতেগুণা কয়েকজন শিক্ষার্থী, যারা পোস্ট গ্রাজুয়েশনের জন্য দেশের বাইরে যাবেন। অথচ বেশির ভাগ চিকিৎসকই দেশে থাকবেন। দু-চারজন শিক্ষার্থীর সুবিধা নিশ্চিত করতে গিয়ে এ রকম পক্ষপাতদুষ্ট পদ্ধতিতে ফল প্রকাশ করা হলে বহু শিক্ষার্থী অবমূল্যায়নের শিকার হবেন। সিজিপিএ চালু করতে হলে পাস মার্ক ৩৩ করতে হবে, সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শুধু লিখিত পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করতে হবে। তাহলে কোনো শিক্ষার্থী পক্ষপাতিত্বের শিকার হবে না।

জিপিএ পদ্ধতির কারণে অসুস্থ প্রতিযোগিতা বাড়বে জানিয়ে তারা বলেন, এ পদ্ধতি চালু হলে মেডিকেলগুলোতে পক্ষপাতিত্বের চর্চাও বাড়ার আশঙ্কা দেখা দেবে।

এমইউ

মেডিভয়েসের জনপ্রিয় ভিডিও কন্টেন্টগুলো দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন MedivoiceBD ইউটিউব চ্যানেল। আপনার মতামত/লেখা পাঠান [email protected] এ।
  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত