ভুয়া সনদে বিএমডিসির নিবন্ধন: কারাগারে ভোলার মাহমুদুল হাসান
মেডিভয়েস রিপোর্ট: চীনের তাঈশান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ জাল করে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নিবন্ধন গ্রহণ করার অভিযোগে ভোলার মাহমুদুল হাসানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের দ্বৈত বেঞ্চ আজ সোমবার (৩ জানুয়ারি) এ আদেশ দেন।
এর আগে আজ সোমবার (৩ জানুয়ারি) আদালতে হাজির হয়ে আগাম জামিনের আবেদন করেন অভিযুক্ত মাহমুদুল হাসান। শুনানি শেষে তার আগাম জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরে তাকে শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এবিএম বায়েজীদ। আসামি পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার শাহিনুর আলম। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক গণমাধ্যমকে বলেন, চীনের একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ভুয়া সনদ দিয়ে চিকিৎসক হিসেবে নিবন্ধন নেওয়ায় ভোলার দৌলতখানের মো. মাহমুদুল হাসানকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন হাইকোর্ট। এ মামলায় অভিযুক্ত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), আইজিপি ও র্যাবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ব্যারিস্টার শাহিনুর আলম সাংবাদিকদের বলেন, এ মামলায় আমার মক্কেল মাহমুদুল হাসান চার নম্বর আসামি। আমরা আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলাম। আদালত শুনানি নিয়ে আবেদনটি খারিজ করে দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে এ মামলার অন্য আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
তিনি বলেন, আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল চীনের একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভুয়া সনদ সংগ্রহ করে চিকিৎসক হিসেবে প্রাক্টিস করছেন। আদালতে আমরা বলেছি, এমন কোনো সনদ আমরা নেইনি, এমনকি এটা আমরা ব্যবহারও করিনি। তবে আদালত শুনানি নিয়ে আবেদন খারিজ করে দেন।
চীনের একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ভুয়া সনদে ১২ জনকে এমবিবিএস চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ কমিশনের উপ-পরিচালক সেলিনা আখতার মনি বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলায় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার মো. জাহিদুল হক বসুনিয়া এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন ছাড়াও চিকিৎসক নিবন্ধন পাওয়া ওই ১২ জনকে আসামি করা হয়।
তারা হলেন: কুমিল্লার বড়ুরার মো. ইমান আলী ও মো. মাসুদ পারভেজ, সাতক্ষীরার তালা উপজেলার সুদেব সেন, টাঙ্গাইলের কালিহাতীর তন্ময় আহমেদ, ভোলার দৌলতখানের মো. মাহমুদুল হাসান, চাঁদপুরের মতলবের মো. মোক্তার হোসাইন, ঢাকার সাভারের মো. আসাদ উল্লাহ, গাজীপুরের কালিয়াকৈরের মো. কাউসার, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের রহমত আলী, বাগেরহাট সদরের শেখ আতিয়ার রহমান, ফেনীর দাগনভূঁইয়ার মো. সাইফুল ইসলাম এবং সিরাজগঞ্জ সদরের মো. আসলাম হোসেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রতারণা, জালজালিয়াতি ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভুয়া এমবিবিএস সনদ ব্যবহারের মাধ্যমে এমবিবিএস ডাক্তার হিসেবে রেজিস্ট্রেশন সনদ গ্রহণ করেছেন।
চীনের তাইশান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন বলে মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে সদন জমা দেন এই ১২ বাংলাদেশি।