০২ ফেব্রুয়ারী, ২০২১ ০৫:৫৬ পিএম

ভ্যাকসিন ছাড়া করোনা নির্মূল করা দূরূহ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ভ্যাকসিন ছাড়া করোনা নির্মূল করা দূরূহ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ফাইল ছবি

মেডিভয়েস রিপোর্ট: ভ্যাকসিন ছাড়া করোনাভাইরাস একেবারে নির্মূল করা দূরূহ কাজ উল্লেখ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, মহামারীর ইতিহাসও তাই বলে। ভ্যাকসিন প্রয়োগের ফলেই এর আগে পৃথিবী থেকে পোলিও, প্লেগসহ অন্যান্য মহামারির বিদায় হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর র‌্যাডিসন হোটেলের ব্লু হলে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও অ্যাসেন্ড বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বিশ্ব এনটিডি দিবস উদযাপন’ উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা ছাড়া এই করোনা ভাইরাস দেশ থেকে একেবারে নির্মূল করা দূরূহ কাজ। মহামারীর ইতিহাসও তাই বলে। ভ্যাকসিন প্রয়োগের ফলেই এর আগে পৃথিবী থেকে পোলিও, প্লেগসহ অন্যান্য মহামারীগুলো বিদায় নিয়েছে। অথচ ভ্যাকসিন প্রয়োগে দেশে এখন কিছু মানুষ বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এই বিভ্রান্তির ফলে শুরুতে মানুষের মনে ভয়ের শঙ্কা থাকলেও এখন ধীরে ধীরে তা কেটে যাচ্ছে। কারণ ভ্যাকসিনের প্রথম দুই দিন প্রয়োগের ফলে দেখা যাচ্ছে, এখনো ভ্যাকসিন গ্রহণকারী কারো শরীরে তেমন কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকার আগে থেকেই বলেছে, এই ভ্যাকসিন নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত। তবে ব্যাপক মানুষের শরীরে প্রয়োগের পরে দুই একজনের দেহে সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যেতেও পারে। কারণ পৃথিবীর সকল ভ্যাকসিনই এরকম স্বল্পমাত্রায় মৃদু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তবে কোনভাবেই ভ্যাকসিন গ্রহণ করা বিষয়ে নিরুৎসাহ করা যাবে না। এতে করোনাভাইরাস থেকে দেশকে মুক্ত করতে আরো বেশি সময় লাগবে।’

আজকের দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘বিশ্বে বর্তমানে ১৭০ কোটি মানুষ এনটিডিতে আক্রান্ত। বর্তমানে বিশ্বে ২০টি রোগকে এনটিডি হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ১৩টি রোগকে দেশ থেকে নির্মূল করতে সক্ষম হয়েছে। অবশিষ্ট সাতটির মধ্যে জলাতঙ্ক, কালাজ্বর, কুষ্টরোগ ও দেশ থেকে বিদায়ের পথে রয়েছে। এগুলোর মধ্যে দেশে বর্তমানে সর্প দংশনে বছরে প্রায় সাত লাখ মানুষ আক্রান্ত হয় এবং বছরে প্রায় ছয় হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এটিকে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। অধিক আক্রান্ত স্থানে বেশি করে অ্যান্টিভেনম প্রেরণ করা হয়েছে। আশা করা যায়, ২০২৩ সালের মধ্যেই বাকি রোগগুলো থেকেও দেশ মুক্ত হতে সক্ষম হবে।”

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান বলেন, “ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে একযোগে করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। সরকারের টাকায় কেনা একটি ভ্যাকসিন যেন অপচয় বা নষ্ট না হয় সে ব্যাপারে কঠোর নজরদারি রাখা হচ্ছে।” 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, “এই করোনা মহামারীতেও এনটিডি রোধে সরকার যে ভূমিকা রেখে চলেছে, এতে আগামী ২০২৩ সালের মধ্যেই অন্তত ২টি এনটিডি রোগকে দেশ থেকে নির্মূল করা সম্ভব হবে।”

রোগ নিয়ন্ত্রণ ও সংক্রমণ রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডাইরেক্টর অধ্যাপক ডা. নাজমূল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সেনাল, স্বাচিপ-এর মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি বারদান জং রানাসহ অনেকেই।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এনসিডিসির লাইন ডাইরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. রোবেদ আমিন।

মেডিভয়েসের জনপ্রিয় ভিডিও কন্টেন্টগুলো দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন MedivoiceBD ইউটিউব চ্যানেল। আপনার মতামত/লেখা পাঠান [email protected] এ।
  ঘটনা প্রবাহ : করোনার টিকা
  এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
করোনা ও বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা

এক দিনে চিরবিদায় পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক