ডা. রীপা চক্রবর্তী
এম এস সি পাব্লিক হেলথ (অন কোর্স)
লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন এন্ড ট্রপিকাল মেডিসিন
লন্ডন, যুক্তরাজ্য।
২৯ অগাস্ট, ২০২০ ১০:৩৪ এএম
শীতে করোনার নতুন ধাক্কা, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা
সাম্প্রতিক কালে মানব সভ্যতার জন্য সবচেয়ে অজানা, ভয়াবহ ও গোপন শত্রু হচ্ছে করোনা যা কোভিড-১৯ নামে এখন সর্বজনবিদিত! নতুন করে আলোচনা করার অবকাশ তাই খুবই সীমিত! যদিও করোনার প্রথম ও ভয়াল ধাক্কার রেশ এখনো পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীদের নিরন্তর প্রচেষ্টার পরও, তার মাঝেই নতুন করে আলোচিত হচ্ছে করোনার আসন্ন সেকেন্ড ওয়েভ; যা আগামী শীতকালীন সময়ে আরো দুনির্বার হয়ে হানা দেবে পৃথিবীর সেসব দেশেও, যে স্থানগুলো এখনো অনেকটাই স্বাভাবিক।
সেইসঙ্গে এর নিধনকারী ভাক্সিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ডে ও বিশ্বের উন্নত-অনুন্নত সকল রাষ্ট্রই তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে চলেছে। তবুও হবে কি শেষ রক্ষা? কি লেখা হবে তবে মানবসভ্যতার ভবিষ্যৎ ইতিহাসের পাতায়?
আসন্ন শীতে করোনার নতুন ধাক্কা নিয়ে যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা:
শীত আসছে। বিপদও আসছে। আর মাস তিনেকের মধ্যেই আসছে শীত। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই এই সময়টায় ঠান্ডা লাগা বা ফ্লুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এ কারণে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে যে, ঋতু পরিবর্তনের সময় করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাবে। এর কারণ হিসাবে বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, শীতকালে আর্দ্রতা, সূর্যের তাপ, ভিটামিন ডি এর অভাব এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়াসহ অন্যান্য ভাইরাস ও ফ্লু জাতীয় শ্বাসকষ্টের রোগের লক্ষণ দেখা দেয় বলে এসময় মানুষের জীবন করোনাভাইরাস নিয়ে আরও বেশি সংবেদনশীল হয়ে উঠতে পারে!
বিবিসির একটি বিশ্লেষণী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রথম দফায় সংক্রমণ যত ব্যাপক ছিল—দ্বিতীয় দফায় তা আরও মারাত্মক হতে পারে। তবে শুধু করোনার প্রকৃতি নয়, অন্য নানা রকম শীতকালীন রোগজীবাণু, মানুষের আচরণ, সরকারী নীতির সাফল্য-ব্যর্থতা—এরকম অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করছে, করোনার সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আসলেই আসবে কিনা। তবে অন্য ভাইরাস সম্পর্কে নিজেদের বোঝাপড়া থেকে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, এমন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই যে সব দেশে করোনা জ্বালাতন করেনি, তাদেরও নিশ্চিন্তে থাকার উপায় নেই।
দুনিয়াখ্যাত ভাইরোলজিস্ট ক্লজ স্টরের সতর্কতা, শীতে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরতে চলেছে কোভিড-১৯।২০০৩ সালে সার্স ভাইরাস যখন মহামারীর চেহারা নিতে শুরু করেছিল, তখন হাল ধরেছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তৎকালিন চিফ ভাইরোলজিস্ট ক্লজ স্টর। ভাইরাস যে চরিত্র বদলে ফের ফিরে আসতে পারে সেই সম্ভাবনার কথা তাঁর থেকেই জেনেছিলেন তামাম চিকিৎসক ও গবেষকরা। কোভিড-১৯ নিয়ে ক্লজ স্টরে আশঙ্কা অনেকটাই একই রকম।
আম্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্লজ বলেছেন, নভেল করোনাভাইরাসও সার্সের মতোই। ২০০৩ সালের সার্স ভাইরাস জিনের বিন্যাস বদলে করোনা হয়ে ফিরে এসেছে। এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। শীতের মুখে কোভিডের 'সেকেন্ড ওয়েভ' আসার আশঙ্কা থাকছে। শীতের সময় করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা আসতে পারে এমন সম্ভাবনার কথা আগেই বলেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
তবে ক্লজ বুঝিয়েছন, এটা শুধু সম্ভাবনা বা আশঙ্কা নয়, ভাইরাসের গঠনগত বৈশিষ্ট্য। এনিয়ে সংশয় বা দ্বন্দের কোনও জায়গা নেই।
ভাইরোলজিস্ট ক্লজের পরামর্শ, কোভিডের কিছু চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য স্টাডি করে বোঝা যাচ্ছে, এটি খুব কমদিনের মধ্যেই ফুসফুসকে সংক্রামিত করে ফেলছে। দ্রুত জিনের গঠন বদলে ফেলছে। ফলে নতুন ভাইরাল স্ট্রেন হয়ে উঠছে আরও বেশি সংক্রামক। আর তাতে এদের ইনকিউবেশন পিরিয়ড অর্থাৎ বেঁচে থাকার সময়ও বাড়ছে!
আরও একটি আশঙ্কার কথা শুনিয়েছেন সার্স ম্যান বলে পরিচিত এই ভাইরোলজিস্ট। তাঁর বক্তব্য,শীতে দুনিয়ার সর্বত্র হানা দেবে কোভিড ভাইরাস। কোভিডে ক্ষতিগ্রস্ত নয়, এমন দেশে প্রভাব বেশি থাকবে!
ক্লজ স্টরের বক্তব্য, ছোট ছোট জায়গায় নতুন করে ধাক্কা দিতে শুরু করবে কোভিড-১৯।এমনকি প্রথম ভ্যাকসিনেই পুরোপুরি নির্মূল করা যাবে না এই ভাইরাসকে। কারণ মানুষের শরীরে 'হার্ড ইমিউনিটি' তৈরি হতে অনেক বেশি সময় প্রয়োজন এখনো!
আশঙ্কার কথা এই যে, করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) দ্বিতীয় দফা ধাক্কা ইতোমধ্যে অস্ট্রেলিয়া, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বের অনেক দেশেই প্রভাব ফেলেছে।
করোনা কিভাবে বিস্তার ঘটাবে আবার?
করোনাভাইরাস আছে মোট চার রকমের—যা সাধারণ সর্দিজ্বরের লক্ষণ সৃষ্টি করে। প্রতিটিই সহজে ছড়ায় শীতের সময়। ইনফ্লুয়েঞ্জা, রাইনোভাইরাস এবং আরএসভি নামে আরেকটি ভাইরাস—এর সবগুলোরই আচরণ মোটামুটি একই রকম।
তবে লন্ডন স্কুল অব হাইজিন এ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ড. রেচেল লো বলছেন, "এগুলো হয়তো মৌসুমী হতে পারে, কারণ অন্য কিছু ভাইরাস আছে যেগুলো শীতকালে সংক্রমণ বাড়তে দেখা যায়—কিন্তু আবহাওয়া নাকি মানুষের আচরণ, কোনটার প্রভাব এখানে বেশি এখনো তা বোঝার ক্ষমতা খুব সীমিত।তবে দেখা গেছে, মানবদেহের বাইরের পরিবেশ যখন ঠান্ডা তখন সব ভাইরাসই অপেক্ষাকৃত ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারে।"
যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসের জন্য বিশেষ করে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিশেষ অনুকুল বলে দেখা গেছে। সূর্যের আলোয় যে অতিবেগুনি রশ্মি থাকে তা ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। কিন্তু শীতের সময় অতিবেগুনি রশ্মির পরিমাণও কম থাকে। শীতপ্রধান দেশগুলোতে ঠান্ডার সময় লোকে ঘরের ভেতরেই বেশি থাকে। দরজা জানালা থাকে বন্ধ থাকে। বাতাস চলাচল করে কম এবং এই পরিবেশই করোনাভাইরাস ছড়ানোর জন্য সহায়ক।
ব্রিটেনের অ্যাকাডেমি অব মেডিকেল সায়েন্সেস এর এক পূর্বাভাসমূলক রিপোর্ট বলছে, শীতের সময় পরিস্থিতি বেশি খারাপ হলে তাতে আড়াই লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হতে পারে। ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক ওয়েন্ডি বার্কলি বলছেন, এখনো অনেক কিছুই অজানা, তবে লোকে যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে উদ্বিগ্ন তার সঙ্গত কারণ আছে।কারণ,বার্কলি মনে করছেন, দ্বিতীয় ঢেউ আসা খুবই সম্ভব। এর কারণ হিসেবে তিনি বলছেন, পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার মাত্র ৫ শতাংশ এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন, ৯৫ শতাংশের ভাইরাস প্রতিরোধের কোনো ক্ষমতাই নেই। এখনো জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্থাৎ হার্ড ইমিউনিটি অর্জিত হয়নি।
যদিও করোনার কারণে মানুষের আচরণে অনেক পরিবর্তন এসেছে। মানুষ ঘন ঘন হাত ধুচ্ছে, মুখে মাস্ক পরছে, সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করছে, বাড়িতে বসে কাজ করছে। তাই এমন হতে পারে যে আসন্ন শীতে নিয়মিত ফ্লু ভাইরাসও হয়তো বেশি ছড়াতে পারবে না। অস্ট্রেলিয়াতে এখন শীত চলছে। সেখানে ঠিক এই ব্যাপারটাই দেখা যাচ্ছে। করোনাভাইরাসের সময় সেখানে শীতকালীন ফ্লু প্রায় দেখাই যাচ্ছে না। চিলি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দক্ষিণ গোলার্ধের দেশেও একই প্রবণতা দেখা গেছে।
তারপরও ড. লো বলছেন, আসন্ন শীতকালে করোনাভাইরাসের একটা দ্বিতীয় ঢেউ এর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে, আত্মসন্তুষ্টিতে ভুগলে চলবে না।
আশার কথা হলো, বেশ কিছু জরিপে দেখা গেছে যে, এক ধরনের ভাইরাস সংক্রমণ অন্য আরেকটি ভাইরাসকে ঠেলে সরিয়ে দিতে পারে।
বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন, ইউরোপে রাইনোভাইরাস সংক্রমণের কারণেই ২০০৯ সালে সোয়াইন ফ্লু ভাইরাসের সংক্রমণ বিলম্বিত হয়েছিল। গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরাস গবেষণা কেন্দ্রের ড. পাবলো মারসিয়া বলছেন, একটি ভাইরাসের আক্রমণের ফলে মানবদেহে যে রোগ প্রতিরোধী প্রতিক্রিয়া হয় তা অন্য কিছু ভাইরাসকে অন্তত খানিকটা সময়ের জন্য ঠেকিয়ে রাখতে পারে।তবে অন্য কয়েকটি জরিপে আবার দেখা গেছে যে কিছু কিছু ভাইরাস বেশ ‘মিলেমিশে’ থাকতে পারে এবং পাশাপাশি বিস্তার ঘটাতে পারে।
করোনাভাইরাস বা সার্স-কোভ-২ এর বেলায় কী ঘটবে?
ড. মারসিয়া বলছেন, ‘আমাদের উপাত্তে দেখা যায় যে মিশ্র সংক্রমণের ক্ষেত্রে ইনফ্লুয়েঞ্জা ছড়ানোর দৃষ্টান্ত খুবই বিরল। কাজেই আমার মনে হয় একই সাথে সার্স-কোভ-২ এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা ছড়াচ্ছে এমনটা হয়তো আমরা খুব বেশি দেখতে পাবো না।’একসঙ্গে দুটি ভাইরাসেই সংক্রমিত হয়েছেন এমন লোক পাওয়া গেছে খুবই কম। তবে যখন এটা ঘটেছে— তখন দেখা গেছে উপসর্গ ছিল অনেক বেশি গুরুতর। তবে ড. মারসিয়া বলছেন, অন্য কিছু করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে অবশ্য দেখা গেছে যে তারা আরএসভি, এডেনোভাইরাস এবং কিছু প্যারা-ইনফ্লুয়েঞ্জার সাথে একই সময়ে সংক্রমণ ঘটাচ্ছে। আমি বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগে আছি।
বিশেষজ্ঞদের মত, মানুষের মধ্যে সার্বজনীনভাবে মাস্ক ব্যবহার, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, হাত ধোয়ার অভ্যাস বাড়ানো এবং পরীক্ষা ও আইসোলেশনের মতো স্বাস্থ্যবিধির কঠোর প্রয়োগের ওপর এ রোগের বিস্তার অনেকটা নির্ভর করবে।
করোনাভাইরাসের কার্যকর কোনো টিকা না আসা পর্যন্ত এ মহামারি শেষ হওয়ার সম্ভাবনা কম উল্লেখ করে আগামী শীতকালে এ ভাইরাসটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে বলে তাই বার বার সতর্ক করে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
আন্তর্জাতিক গবেষণাপত্র কী বলছে?
যুক্তরাজ্য, ভারত ও অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পরিচালিত সাম্প্রতিক কিছু গবেষণার দাবি, স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সম্ভাবনা কমিয়ে দিয়ে শীতকালে এ ভাইরাসটির প্রভাব আরও বাড়তে পারে। ভারতের দুটি বিশ্ববিদ্যালয় আইআইটি-ভুবনেশ্বর এবং এআইআইএমস– এর গবেষকদের একটি দল সম্প্রতি ওই দেশের নীতিনির্ধারকদের দেশটিতে বর্ষা ও শীতের সময় কোভিড-১৯ সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছেন।
এখনো পর্যন্ত পিয়ার পর্যালোচনা না করলেও তিনটি গবেষণাকে ভিত্তি করে তারা বলেন, মৌসুমি বৃষ্টিপাত, ঠাণ্ডা বায়ুমণ্ডল এবং শীতকাল ঘনিয়ে আসাসহ পরিবেশগতভাবেই ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে পারে। দেশটির বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় ও সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অব রাজস্থানের গবেষকরাও তাদের গবেষণায় শীত মৌসুমে করোনাভাইরাস ছড়ানোর পরিমাণ বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যের মেডিকেল সায়েন্সেস একাডেমির এক সমীক্ষায় আগামী সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে শীতকালে নতুন করে সংক্রমণের কারণে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত হাসপাতালের মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ১১৯, ৯০০ -এর বেশি হতে পারে বলে ধারণা করছে।
অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা বলেছে, আর্দ্রতার এক শতাংশ কমলে কোভিড-১৯ সংক্রমণের সংখ্যা ৬ শতাংশ হারে বাড়িয়ে দিতে পারে। তারা আরও বলছে, কেবলমাত্র আর্দ্রতা কমে যাওয়াই কোভিড-১৯ সংক্রমণ বাড়ানোর সাথে জড়িত। এর সাথে তাপমাত্রার কোনো সম্পর্ক নেই।
ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ড স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকরা বলছেন, ব্রিটেন, মধ্য এশিয়া, ককাস, পূর্ব ও মধ্য ইউরোপ, উত্তর ও মধ্য-পশ্চিমা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়াতে শীতকালে কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের ঝুঁকি বেশি রয়েছে।
বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞদের মত:
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ যেভাবে বাড়ছে, তাতে ধরেই নেওয়া যায় শীতকালে এ ভাইরাসটির ছড়িয়ে পড়ার প্রকোপ বাড়বে। শীতকালে ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া, হাঁপানি ও অন্যান্য সর্দিজনিত রোগের কারণে করোনায় মৃত্যুর হারও বাড়তে পারে।তিনি বলেন, শীতে প্রবীণ ব্যক্তি ও শিশুদের এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আরও মারাত্মক হবে। যাদের দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য শীতের আবহাওয়ায় এ ভাইরাসটি আরও মারাত্মক হতে পারে। করোনাভাইরাসের কিছু স্ট্রেন শীতকালে তীব্র ও মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে। তাই, আমাদের এখনই পরিকল্পনা করা উচিত যাতে শীতকালে আমরা ভাইরাসকে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে পারি।'
যদিও এটি কেবলমাত্র অনুমান, তবে আমাদের সতর্ক থাকা উচিত।অধ্যাপক আরো বলেন, 'মানুষের সচেতনতা ও সহযোগিতা না থাকলে দেশ বিপজ্জনক এ মহামারি থেকে মুক্তি পাবে না। আমাদের দেশের মানুষকে এটি বুঝতে হবে যে ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমাদের কমপক্ষে ৬ মাস আরও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করতে হবে। শীত ও করোনায় আক্রান্ত হওয়া থেকে বাঁচতে মানুষকে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।'
অতএব,আমাদের আত্মসন্তুস্টি গ্রহণ করার কোন কারণ নেই যতক্ষণ পর্যন্ত না করোনা সম্পূর্ণরূপে নির্মূল হচ্ছে আর তাই শীতের আগেই আমাদের সচেতনতা তৈরি করে করোনাকে মোকাবেলা করার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে বই কি!