মেডিভয়েস রিপোর্ট: ক্যান্সার , হার্ট ও কিডনি রোগের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ৮টি স্পেশালাইজড হাসপাতাল করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। আজ রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে বিশ্ব ক্যান্সার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

জাহিদ মালেক বলেন, ‘দেশের প্রতিটি হাসপাতালে মানসম্মত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে সরকার অঙ্গিকারাবদ্ধ রয়েছে। শুধু হাসপাতাল তৈরি করলে আর কিছু মেশিন কিনে দিলেই চিকিৎসা হয়ে যাবে না। চিকিৎসা সেবা মূলত নির্ভর করে ডাক্তার-নার্সদের ওপর। এই বিষয়গুলোতে ভবিষ্যতে আর ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় হাসপাতালগুলোতে আমরা এখন পর্যন্ত কোয়ালিটি চিকিৎসা দিতে পারছি না। তবে সেবার মানোন্নয়নে আমরা সারাদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছি।’

ক্যান্সার চিকিৎসার প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী বলেন, ‘ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা ব্যয়বহুল। বৈষম্যও রয়েছে। দরিদ্র মানুষ চিকিৎসা করাতে পারে না। দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিতে হয় বলে বড় অংকের অর্থ খরচ হয়। এজন্য আমরা চিকিৎসায় বৈষম্য কমানোর চেষ্টা করছি।’

অসংক্রামক রোগে পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সংক্রমণব্যাধি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে। কলেরা, ডায়রিয়ায় এখন আর মৃত্যু নেই বললেই চলে। আমাদের দেশে অসংক্রমক রোগ বেড়েছে। ৬০-৭০ শতাংশ মৃত্যুই অসংক্রামক রোগে। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় ক্যান্সার ও হার্ট অ্যাটাকে। এছাড়াও ব্রেস্ট ক্যান্সারে মৃত্যু হয় ৯ শতাংশ, গলায় ক্যান্সারে ১৪ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয়।

মন্ত্রী বলেন, ‘বছরে ১ লাখ লোক ক্যান্সারে মারা যায়, আর আক্রান্ত হয় দেড় লাখ। বাস্তব চিত্র এরচেয়েও খারাপ। কারণ হলো অনেক লোক চিকিৎসার আওতার বাইরে থাকে। যে কারণে অনেকেই পরিসংখ্যানের আওতার বাইরে থাকে। আমাদের দেশে রোগীর তুলনায় চিকিৎসা ব্যবস্থা খুবই স্বল্প। ২০ লাখ মানুষ আছেন ক্যান্সার আক্রান্ত। তাদের চিকিৎসায় যে বড় মাপের ব্যবস্থাপনা দরকার, সেটি আমরা পারিনি, তবে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি।’

ক্যান্সারের কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ধূমপানে ক্যান্সার বেশি হচ্ছে। পরিবেশ দূষণ, খাবারে দূষণ ক্যান্সারের বড় কারণ। ক্যান্সার এমন রোগ, কোনো বয়স বা গোত্র রক্ষা পায় না। দেশে ক্যান্সারের ভালো চিকিৎসা আছে, তবে আর্লি স্টেজে ডিটেকটশন করতে হবে। তাহলে ভালো হয়ে ওটার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কিন্তু দেহে ছড়িয়ে গেলে চিকিৎসা কঠিন হয়ে যায়।’

এ সময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটু মিয়াসহ প্রমুখ।