থ্যালাসেমিয়া রোগীদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার

মেডিভয়েস রিপোর্ট: থ্যালাসেমিয়ায় ভুক্তভোগী রোগীদের আর্থিক সহায়তা দেওয়াসহ তাদের জন্য সরকারিভাবে বিনামূল্যে রক্তের ব্যবস্থা করার বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছেন। বিশ্ব থ্যালাসিমিয়া দিবস উপলক্ষে সোমবার আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ কথা জানান।
বিশ্ব থ্যালাসিমিয়া দিবস উপলক্ষে সিরডাপ কনফারেন্স সেন্টারে সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বাংলাদেশ থ্যালাসিমিয়া ফাউন্ডেশন।
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘কীভাবে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া যায় সেটা নিয়ে কাজ করছে সরকার। কীভাবে এই রোগীদের রক্তের ব্যবস্থা সরকারিভাবে বিনামূল্যে করা যায়, সেটা নিয়েও আমরা কাজ করবো।’
বাংলাদেশ থ্যালাসিমিয়া ফাউন্ডেশনের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, দেশে ১ কোটি ১০ লাখ থ্যালাসেমিয়ার বাহক রয়েছে। প্রতিবছর ৭ হাজার শিশু থ্যালাসিমিয়া নিয়ে জন্ম নেয়।
থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক বিবাহ রেজিস্ট্রেশনের আগেই যদি কাজী নিশ্চিত করেন যে, বিবাহের পাত্র-পাত্রীর রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে এবং সেটা রেজিস্ট্রেশন ফর্মে উল্লেখ থাকবে, তাহলে আমরা এই রোগটি প্রতিরোধ করতে পারবো।’
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইউনিভার্সাল হেলথ কাভারেজ নিয়ে কাজ করছি। তাই বলে চাইলেই সবকিছু করা সম্ভব নয়। সুস্থ জাতি, সুস্থ দেশ পরিচালনা করতে পারে। এজন্য আমরা কাজ করছি। শিশুমৃত্যু, মাতৃমৃত্যুর হার রোধে টিকাদান কর্মসূচি ভূমিকা রাখছে। নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ এখন আমাদের মানুষের জীবন বেশি কেড়ে নিচ্ছে। এগুলো প্রতিরোধে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। থ্যালাসেমিয়া কঠিন রোগ হলেও অবশ্যই এর সমাধানও আছে। আমরা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাবই। বাংলাদেশ অবশ্যই থ্যালাসেমিয়ামুক্ত দেশ হবে।’
সেমিনারের সভাপতি স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে আমরা অবশ্যই ২০২৮ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে থ্যালাসিমিয়া নির্মূল করতে সক্ষম হবো।’
সেমিনারের বিশেষ অতিথি পরিকল্পনা কমিশনের সচিব ও বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের পৃষ্ঠপোষক আকতারী মমতাজ বলেন, ‘থ্যালাসিমিয়ার রোগীরা, অভিভাবকরা কতটা সীমাহীন দুর্যোগের মধ্য দিয়ে যেতে হয় তা আমরা আজ জানতে পেরেছি। আমরা যদি তাদের পাশে দাঁড়াই তারা একটু সাহস পান। এই রোগ নিয়ে জনসচেতনতা তৈরি হলেই রোগটি প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।’
বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, ‘বিয়ের আগে পরীক্ষা করলে রক্ত সন্তান থাকবে থ্যালাসেমিয়ামুক্ত এই কথাটিই শিরোধার্য। এটি যদি আমরা বুঝতে পারি তাহলে আমরা এই রোগটি প্রতিরোধ করতে পারবো।’
তিনি চিকিৎসক সমাজের পক্ষে রোগীদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আমরা যেন এই রোগ প্রতিরোধে অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি, সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাবো।’
বাংলাদেশ থ্যালাসিমিয়া ফাউন্ডেশনের মহাসচিব ডা. মো. আবদুর রহিম বলেন, ‘দেশে প্রতি বছর প্রায় ১৭ লাখ বিয়ে হয় এবং এসব বিয়ের ৯০ শতাংশই রেজিস্টার্ড হয়। এই বিয়ের আগে যদি রক্ত পরীক্ষা নিশ্চিত করা হয় তাহলে দেশকে থ্যালাসেমিয়া মুক্ত করা সম্ভব হবে।’
আরও পড়ুন
► থ্যালাসেমিয়ার বাহক হতে পারে যে কেউ!
►থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধের উপায়
► ‘বিয়ের আগে ওদের রক্ত পরীক্ষা করলে কোনো দুশ্চিন্তায়ই হতো না’
► বিয়ের আগে যে পরীক্ষাটি জরুরী
বিশেষ সাক্ষাৎকার
ইন্টার্নদের ভাতা ৩০ হাজার টাকা হওয়া উচিত: মুগদা মেডিকেল অধ্যক্ষ
আসছে নতুন কাব্যগ্রন্থ
সাহিত্য চর্চায় আনন্দ খুঁজে পাই: অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন
