কাশেম-মালা মেডিকেল কলেজ

ভদ্রলোক এসেছিলেন বুকে ব্যথা নিয়ে। একাই এসেছিলেন।
আমি তখন একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করি।
ভদ্রলোককে বুকে ব্যথার রোগী হিসেবে দ্রুত ইসিজি করাই।
ইসিজির রিপোর্ট দেখলাম। নরম্যাল।
তবে ব্যথার ধরন দেখে সন্দেহ হচ্ছিল। বললাম খারাপ কিছু হয়েছে কিনা সেটা কনফার্ম করতে হবে। কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হবে। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ আপনাকে দেখবেন। আমরা ব্যাবস্থা নিচ্ছি।
লোকটির কন্ঠ আর্দ্র হলো।
ডাক্তার সাহেব, সিরিয়াস কিছু হয়নি তো?
আমি বললাম, সিরিয়াস কিছু হয়ত না, তবে আমরা আপনার ব্যাপারে সিরিয়াস হতে চাই। আর সম্ভাব্য সর্বোচ্চ খারাপটাও যদি হয়ে থাকে সেটা ম্যানেজ করার মত সামর্থ আমাদের আছে।
-বাঁচবো তো ডাক্তার সাহেব?
- অবশ্যই।
রোগী আমার হাত ধরে বললেন " ডাক্তার সাব, বেশিনা, আর দুইটা বছর বাঁঁচলেই হবে।"
- মাত্র দুই বছর বাঁচলেই হবে?
ভদ্রলোক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন, একটা কাজ করে যাইতে চাই ডাক্তার সাহেব। একটা মেডিকেল কলেজ করে যাইতে চাই। সাভারে আমার একটা জায়গা আছে। এইবছর থেকে কাজ শুরু করার ইচ্ছা।
-ভাল উদ্যোগ।
-আমার ইস্তিরির নামে করব ডাক্তার সাহেব। জীবনে ইস্তিরির জন্য তো কিছুই করতে পারলাম না।
বলেই ভদ্রলোক আরেকটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন। জীবনে স্ত্রীর জন্য কিছু করতে না পারার বেদনায় বিমর্ষ হয়ে পড়লেন।
আমি তাকে স্বান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলাম।
-মেডিকেল কলেজ অবশ্যই হবে। আপনার স্ত্রীর নাম কি?
- ভদ্রলোক লাজুক স্বরে উচ্চারণ করলেন 'মালা'।
- বাহ। তাহলে তো মেডিকেল কলেজের নাম হবে "মালা মেডিকেল কলেজ"।
-জ্বি। তবে নিজের নামটাও রাখতে চাই।
-আপনার নাম?
-আবুল কাশেম।
-তাহলে নাম হবে ' কাশেম-মালা মেডিকেল কলেজ'।
ট্রলি রেডি হয়ে গেল। আমরা প্রস্তাবিত কাশেম-মালা মেডিকেল কলেজের সম্ভাব্য চেয়ারম্যানকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।
বিশেষ সাক্ষাৎকার
ইন্টার্নদের ভাতা ৩০ হাজার টাকা হওয়া উচিত: মুগদা মেডিকেল অধ্যক্ষ
আসছে নতুন কাব্যগ্রন্থ
সাহিত্য চর্চায় আনন্দ খুঁজে পাই: অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন

পিতাকে নিয়ে ছেলে সাদি আব্দুল্লাহ’র আবেগঘন লেখা
তুমি সবার প্রফেসর আবদুল্লাহ স্যার, আমার চির লোভহীন, চির সাধারণ বাবা
