
ডা. আব্দুর রব
মেডিকেল অফিসার, বিসিএস (স্বাস্থ্য)।
এফসিপিএস-২ ট্রেইনি (সার্জারি)।
সাবেক শিক্ষার্থী, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ।
০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০৬:১৮ পিএম
‘সরকারি হাসপাতাল টা আবার ক্লিনিক হয়ে যাবে’

বিসিএস কে ছেড়ে দেয় বোকা রা। এমন ধারনা ছিল আমার। যে প্রফেসরের আন্ডারে ট্রেইনিং করেছি উনি চাননি আমি বিসিএস এ জয়েন করি। উল্টো চেয়েছিলেন আমি যেন বিদেশমুখী হই। লন্ডন শহরে বাড়ি আছে উনার। ভাল একটা সুযোগও ছিল। যে প্রফসরের কাছে প্রায় সকল কাজ শিখেছি, উনিও বলে দিয়েছিলেন, সব কাজ তো পারো, বাকি ট্রেইনিং টুকু করে পার্ট টু পরীক্ষা দাও, বিসিএস ভাল জিনিষ না। তবুও জয়েন করেছি। এটা আমাদের ঘোড়া রোগ। সাড়ে তিন মাসে অনেক কিছু বুঝে ফেলেছি। মোহ টাও কেটে গেছে এতদিনে। গরীব মানুষের জন্য সরকারি সুবিধায় কিছু করতে যাবেন তো মরেছেন। চোখের সামনে অপকর্ম মুখ বুঝে সইবেন। মুখ খুললেন তো মরেছেন। অনেকেরই রুটি রুজিতে লাগবে।
হ্যা ভাই আমিও মরেছি। সামান্য চেষ্টা করেছিলাম এলাকার ছেলে হিসেবে সরকারি হাসপাতাল টা একটু রোগী বান্ধব করতে। সুন্দরবনে কাজ করা জেলে পুলের এলাকা এটা। বহি:বিভাগে কিছু রোগী আসে দেখলে প্রচন্ড মায়া হয়। এক চাচা কে বলেছিলাম, আমি যতদিন আছি ওষুধ আমার কাছ থেকে নিবেন। আমার হাত ধরে হাউমাউ করে কেঁদেছিল চাচা। এদের জন্য কিছু করতে চেয়েছিলাম। এ জন্য জনসম্মুখে অপমানিত হয়েছি। বদলির অর্ডার নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতেছিলাম এ দুই দিন। আজ শুনলাম আমার UHFPO আমার অবর্তমানে সকল কর্মচারীদের কাছ থেকে সাদা কাগজে সাইন নিয়েছে। এরপর সেখানে লিখেছে, ডা. আব্দুর রব দুর্নীতিবাজ, কর্মচারীদের সাথে দুর্ব্যবহার করে, উনি এখানে থাকলে আমরা সবাই পদত্যাগ করব।
আরো অনেক কাল্পনিক অভিযোগ লিখে ডিজি অফিসে মেইল করে দিয়েছে।
এটাই মনে হয় বাকি ছিল আমার জন্য।
আমারও পরিবার আছে। আমারও মা বাবা আছে। ভাই বোন পড়াশুনা করে। তাদেরও টাকা দরকার হয়। পরিবারে আমি শুধু আয় করি। তাদের আর্থিক স্বচ্ছলতা দেখতে আমারও ইচ্ছা হয়। সপ্তাহ শেষে আমি যখন আমার ভাঙা ঘরে শুতে যাই, আমার মা যখন মশারী টানিয়ে দেয়, তখন আমারও মায়া হয়, আমারও ইচ্ছা করে অনেক কিছু।
চালাক হয়ে গেছি। শুধু নিজের জন্যের ভাববো। বাংলাদেশের যে কোন প্রান্তে চাকুরী করতে আমার সমস্যা নেই। শুধু বাইন মাছের মত চলতে হবে এই যা৷ যেটাকে পরাজয় ভেবেছিলাম সেটা আসলে জীবনেরই জয়। আজ আমি এই জয়টাই চাই।
অন্য যায়গায় বদলি হতে আমার সমস্যা নাই। সমস্যা শুধু যেভাবে বদলী হচ্ছি এইটাতে। সরকারী হাসপাতাল টা আবার ক্লিনিক হয়ে যাবে। সিস্টেম আর সময় যদি সেটাই দাবী করে তো আমিও সিস্টেমাইজড লোভী ডাক্তার হয়ে যাবো। সদ্য নিয়োগকৃত ডাক্তারদের সততা বেশী থাকে। আর এটাই তাদের বিপদের কারন।

পিতাকে নিয়ে ছেলে সাদি আব্দুল্লাহ’র আবেগঘন লেখা
তুমি সবার প্রফেসর আবদুল্লাহ স্যার, আমার চির লোভহীন, চির সাধারণ বাবা

কিডনি পাথরের ঝুঁকি বাড়ায় নিয়মিত অ্যান্টাসিড সেবন
বেশিদিন ওমিপ্রাজল খেলে হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ে
